দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিক্রয় চাপ ও লেনদেন মন্দার মধ্যে দিয়ে জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ অতিক্রম করেছে পুঁজিবাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারের ৬০.৫৫ শতাংশ কোম্পানির দর পতন হলেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ছিল লোকসানি কোম্পানিগুলো। সমাপ্ত সপ্তাহে “জেড” বা “পচা” ক্যাটাগরির লোকসানি তিনটি কোম্পানি দর বাড়ার রেকর্ড গড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলো হলো: জিল বাংলা সুগার মিলস, শ্যামপুর সুগার মিলস ও ইউনাইটেড এয়ার (বিডি) লিমিটেড।

জিল বাংলা সুগার মিলস: এক যুগের অধিক সময় যাবত লোকসানে রয়েছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটি। গত সপ্তাহে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রতিবেদন ঘোষণা করেছে। প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর ডিসেম্বর’১৯) কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১৫.৮০ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ১৮.৭০ টাকা।

এদিকে, ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’১৯) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৩৫.৫০ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৩৬.২৭ টাকা। কোম্পানির শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্ল্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ৩৪.৬৯ টাকা (নেগেটিভ) এবং শেয়ার প্রতি দায় হয়েছে ৬৪৩.২৭ টাকা।

কিন্তু গত সপ্তাহের ৫ কার্যদিবসে ৪২.৪১ শতাংশ দর বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ারের। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৬০ শতাংশ বা ১.১ টাকা কমলেও এই দিন কোম্পানিটির শেয়ার ৪৬.৫০ টাকায় স্থিতি পেয়েছে। যা বিগত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

শ্যামপুর সুগার মিলস: অব্যাহত লোকসানে শেয়ার প্রতি ৪৩.৮৫ টাকা দায় হলে সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে ৪২.০৪ শতাংশ দর বেড়েছে শ্যামপুর সুগার মিলসের। বছরান্তে নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করায় বর্তমানে জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে কোম্পানিটি।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সদ্য প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর ডিসেম্বর’১৯) কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ২২.৭৪ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ২৭.৯৩ টাকা। এদিকে, ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’১৯) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৪৬.০৪ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৪৪.৬১ টাকা।

ইউনাইটেড এয়ার: অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমান ও অবকাশ খাতের ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক সংকটে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন নামেই বেঁচে আছে। টানা ৭ বছর কোম্পানির সব ফ্লাইট সার্ভিস বন্ধ। কোম্পানির ১১টি উড়োজাহাজ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিমান বন্দরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতেও সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে গুজবে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩৫.৭১ শতাংশ।

এরই ধারাবাহিকতায় কোম্পানিটির শেয়ার ১.৯০ টাকায় স্থিতি পেয়েছে। ব্যবসায়িক অনিশ্চয়তায় ৮২৮ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনধারী কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.২০ টাকায় নেমে এসেছিল। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে ব্যাপক উল্লম্ফন অব্যাহত ছিল। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্পমূলধনী ও লোকসানি কোম্পানিগুলোতে গুজব ছড়িয়ে কারসাজি করছে একটি চক্র। নতুবা কয়েক যুগ লোকসানে থাকা কোম্পানির শেয়ারের এমন উল্লম্ফনের কারণ কি?