দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) রাজস্ব আয় প্রায় ৩৪ শতাংশ কমলেও কর-পরবর্তী নিট মুনাফা প্রায় ১৯ শতাংশ বেড়েছে সামিট পাওয়ার লিমিটেডের। এ সময়ে কোম্পানিটির বিক্রয় ব্যয় (কস্ট অব সেলস) কমেছে ৪৭ শতাংশ। আর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। প্রথমার্ধের আর্থিক ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ হারে অন্তর্র্বতী নগদ লভ্যাংশ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে সামিট পাওয়ারের পরিচালনা পর্ষদ। এ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৪ ফেব্রুয়ারি।

সম্মিলিত হিসাবে প্রথমার্ধে সামিট পাওয়ারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১ হাজার ২৯৩ কোটি ১২ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ হাজার ৯৫৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এ হিসাবে আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব কমেছে ৬৬০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বা ৩৩ দশমিক ৮১ শতাংশ। জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে কোম্পানিটির বিক্রয় ব্যয় হয়েছে ৮১৩ কোটি ৭ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ হাজার ৫৪৬ কোটি ২ লাখ টাকা। পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৪৮২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের প্রথমার্ধে যা ছিল ৪০১ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

আলোচ্য সময়ে সামিট পাওয়ারের নিট মুনাফা হয়েছে ৪৫৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের প্রথমার্ধে নিট মুনাফা ছিল ৩৮৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এ হিসাবে জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ৭২ কোটি ২৩ লাখ টাকা বা ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ। প্রথমার্ধে সামিট পাওয়ারের ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৮৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ের ২ টাকা ৫৪ পয়সার চেয়ে যা ৩০ পয়সা বা ১১ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির রাজস্ব আয় হয়েছে ৫৬৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৭২৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। বিক্রয় ব্যয় হয়েছে ৩৩৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫২৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। নিট মুনাফা হয়েছে ২০২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৭৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৪৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ২০ পয়সা।

৩১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩১ টাকা ১২ পয়সা। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সামিট পাওয়ার। সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৭৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ টাকা ৪০ পয়সা। ৩০ জুন এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৩২ টাকা ৪০ পয়সা, ২০১৮ হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৩১ টাকা ২৬ পয়সা।

সর্বশেষ রেটিং অনুসারে, সামিট পাওয়ারের ঋণমান দীর্ঘমেয়াদে ‘ট্রিপল এ’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-ওয়ান’। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনসহ প্রাসঙ্গিক হালনাগাদ বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (সিআরআইএসএল)। ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় সামিট পাওয়ার। তার আগে ২০১৭ হিসাব বছরের জন্য ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা। ১৮ মাসে সমাপ্ত সে হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটির ইপিএস ছিল ৫ টাকা ৭৫ পয়সা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার সামিট পাওয়ার শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৩৯ টাকা ৩০ পয়সা। সমাপনী দর ছিল ৩৯ টাকা ২০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৩৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৪৪ টাকা ৭০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।

২০০৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ৮১২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৬৩ দশমিক ১৮ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ২২ দশমিক ১৭ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ১১ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে। সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৮ দশমিক ২, অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ৭।