দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য যে ধরনের সাহায্য প্রয়োজন, সরকার ধারাবাহিকভাবে তা করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও করবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, সরকার মনে করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য একটি গতিশীল ও শক্তিশালী পুঁজিবাজারের উপস্থিতি অপরিহার্য।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে গণফোরামের মোকাব্বির খানের প্রশ্নের লিখিত জবাবে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বর্তমানে শেয়ার বাজারে কিছু তারল্য সঙ্কট থাকলেও ব্যাংকিং খাতে কোন তারল্য সঙ্কট নেই। বর্তমান বিরাজমান তারল্য সঙ্কট কাটিয়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে গত জানুয়ারি তার কার্যালয়ে একটি সভা করেন।

অর্থমন্ত্রী জানান, ওই সভায় পুঁজিবাজারকে বিকশিত করা এবং বাজারে আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কতিপয় স্বল্প-মেয়াদী কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। স্বল্প মেয়াদি বেশ কিছু বিষয় অচিরেই কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে, তার উপর মতামত প্রকাশ করা হয়।

এর মধ্যে রয়েছে- মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধার বিষয়টি পর্যালোচনা করা; ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাসমূহ শনাক্ত করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যোগ করেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিগত ১০ বছরে কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের কাছে সরকার ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩ কোটি ৯১ লাখ টাকার দেনা হয়েছে বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর নাগাদ বাংলাদেশ ব্যাংক ও তফসিলি ব্যাংক থেকে ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৬২৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। এই সময়ে পরিশোধ করা হয়েছে ১১ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এই সময়ে নিট ঋণ গ্রহণ করেছে এক লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হিসেবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪টি উন্নয়ন সহযোগী দেশ/সংস্থার সাথে তিন হাজার ১২০ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলারের (দুই হাজার ৬২১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা) ৩৪টি ঋণ ও অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি ঋণ চুক্তির সংশ্লেষ অর্থের পরিমাণ দুই হাজার ৪৫৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং ২০টি অনুদান চুক্তির সংশ্লেষ অর্থের পরিমাণ ১৬৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ/সহায়তার পরিমাণ দুই হাজার ৭১৭ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন ডলার (২৩ হাজার ২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা)।

বর্তমানে দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে করদাতার সংখ্যা ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ৬৬৬ জন বলে জানান তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী দেশে ঋণ হিসাব সংখ্যা ১ কোটি ৭ লাখ। আর ঋণের স্থিতি ৯ লাখ ৬৯ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা।