দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সরকারের বিশেষ উদ্যোগের ফলে পুঁজিবাজারে আস্থা ও তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠছিল। কিন্তু গত সপ্তাহের মধ্যখানে ডিএসই ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় নতুন করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আর তাতে বিদায়ী সপ্তাহে প্রথম দুদিন সূচক সামান্য বৃদ্ধির পর শেষ তিন কার্যদিবস বড় দরপতন হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে ৪৪৫কোটি ৭৫ লাখ ৬২ হাজার ১৩২ টাকা। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পুঁজি কমেছে ১৯৭কোটি ৪৫ লাখ ৮ হাজার টাকা।

এদিকে গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিক দরপতনে পেছনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) হাত রয়েছে। এই কারণে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে (সিআরও) কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করে বিএসইসি। এরপর টানা তিনদিন দরপতন হয়েছে।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা সংকট তৈরি হয়েছে। তবে সরকারের বিশেষ উদ্যোগের ফলে পুঁজিবাজারে আস্থা ও তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠছিল। কিন্তু গত সপ্তাহের মধ্যখানে ডিএসই ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় নতুন করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২২২ কোটি ৬ লাখ ৩১ হাজার ১৭৭ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহের লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২২৫ কোটি ৪৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৬ টাকা। গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৪৪ কোটি ৪১ লাখ ২৬ হাজার ২৩৫ টাকা। এর আগে গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৪৪৫ কোটি ৯ লাখ ১২ হাজার টাকা।

লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৭৩টির, কমেছে ১৫২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩৬০টির, দাম বেড়েছিল ১১৮টির, কমেছিল ২১৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২২ টির।

তিন সূচকের মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৬ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৪৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫১৩ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক দশমিক ৪৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তাতে বিনিয়োগকারীদের মূলধন ৪৪৫ কোটি ৭৫ লাখ ৬২ হাজার ১৩২ টাকা পুঁজি কমে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৭ কোটি ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮৯৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

দেশের অপর পুঁজিবাজার সিএসইর প্রধান সূচক ৪৪ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৫৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৯৬ কোটি ৯৯ লাখ ৭৭ হাজার ২৭৮ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬০টির, কমেছে ১২৭টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। তাতে বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন কমেছে ১৯৭কোটি ৪৫ লাখ ৮ হাজার টাকা।