দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: মার্চেন্ট ব্যাংক প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য তদবির করে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান। শনিবার রাজধানীর হোটেল-৭১ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ছায়েদুর রহমান বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের অভাব এবং আইপিওর মান নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়। কিন্তু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ উপস্থাপনা করা হয় না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে একটি কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রায় ৪০০ শর্ত পরিপালন করতে হয়। তারপরেও আইপিও’র মান নিয়ে সমালোচনা করা হয়। কিন্তু কেউ মান উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করে না।

তিনি বলেন, ভালোমানের আইপিও আনতে ৪০টির বেশি পয়েন্ট থাকলে চিহিৃত করুন। আমাদের বলুন। আমরা বলতে পারি আইপিওর জন্য মার্চেন্ট ব্যাংক কখনো তদবির করে না। তারপরও বলছি, যেই মার্চেন্ট ব্যাংক ব্যাংক খারাপ আইপিও আনবে তাদের দায় নিতে হবে।

সুশাসনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিএমবিএ কাজ করবে জানিয়ে ছায়েদুর রহমান বলেন, বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের মূল চালিকা শক্তি আর্থিক হিসাব। এর মান উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এজন্য আইসিএবি এবং এফআরসির সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এছাড়া এ বিষয়ে মার্চ মাসে একটি সেমিনার করার পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ফেসভ্যালুরে নিচে চলে আসে। সুশানের দেশ ভারতে গত তিন বছরের যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে এখন সেগুলোর মধ্যে ২৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করছেন।

থাইলেন্ডের বাজারে প্রতিবছর ২০০ কোম্পানি তালিকাভুক্ত হচ্ছে সেই দেশেও প্রতিবছর ৩০-৪০টি কোম্পানি ফেসভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে। আমাদের দেশে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোর ফেসভ্যালুর নিচে আসার আনুপাতিকহার দেখতে হবে। অনান্য দেশের চেয়ে কম না বেশি। বেশি হলে অবশ্যই কমিয়ে আনতে হবে।

বিএমবিএ সভাপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক ফান্ড নিয়ে যুগান্তকারী নীতি সহায়তা দিয়েছে। যা ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ এবং সাহস যোগাচ্ছে। এ সহায়তা কোন প্রকার দান বা ভর্তুকি না।ফলে এটা নিয়ে অপপ্রচার করার কোন কোন সুযোগ নেই।তারপরেও কেউ কেউ বিষয়টিকে ব্যাংকের জন্য অতিরিক্ত চাপ, টেক্সের টাকা ইত্যাদি ভুল ব্যাখা প্রদান করছেন। যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে।

বিএমবিএ সভাপতি এমন সময় এই মন্তব্য করলেন যখন প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পর আইপিওর অনুমোদন দিচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বর্তমানে ৩০টির বেশি কোম্পানি প্লেসমেন্টসহ পুঁজিবাজারে আসার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে চাচ্ছে। অর্থাৎ এই বক্তব্যের মাধ্যমে মাচেন্ট নিজেদের পক্ষে সাফাই গাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ মতিন, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান, নির্বাহী সদস্য মাহবুব এইচ মজুমদার, নুর আহমেদ, মোহাম্মদ হামদুল ইসলামসহ অন্যন্যরা উপস্থিত ছিলেন।