দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিনিয়োগকারীদের ক্রয় প্রবণতায় টানা ৩ দিনের উল্লম্ফনে বাজার মূলধনের ৬ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা ফিরে পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এসময় পুঁজিবাজারের ৬৮.৩৩ শতাংশ বা ২৪৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। বাজার বিশ্লেষণে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে (১০ ফেব্রুয়ারি) পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে তফসিলি ব্যাংককে বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দিয়ে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো নিজস্ব উৎস অথবা ট্রেজারি বিল বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করতে পারবে। ৫ শতাংশ সুদে বিশেষ এ তহবিলের অর্থ পরিশোধে ৫ বছর সময় পাবে ব্যাংকগুলো। বিশেষ তহবিল গঠনের সুখবরে গত মঙ্গলবার থেকে টানা তিন কার্যদিবসে ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী ছিল পুঁজিবাজার। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৭৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিনিয়োগকারীদের ক্রয় প্রবণতা বাজারের দৈনিক গড় লেনদেন ৫০০ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ডিএসই’র বাজার মূলধন ৬ হাজার ৬১৯ কোটি ৫ লাখ ৬৮ হাজার ৪৪৭ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সপ্তাহের শুরুতে অর্থাৎ রোববার ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৭ কোটি ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮৯৯ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে তা বেড়ে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৬৬ কোটি ১৫ লাখ ২৬ হাজার ৩৪৬ টাকায় স্থিতি পায়। অলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারে ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা গেছে। কিন্তু এসময় লোকসানি ও “জেড” ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা আগ্রহ কম ছিল।

আলোচ্য সময়ে ডিএসইর মোট লেনদেনে “এ” ক্যাটাগরির শেয়ারের দখলে ছিল ৮৫ দশমিক ০৮ শতাংশ। “এ” ক্যাটাগরিতে শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২০৯ কোটি ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯৫৯ টাকার। আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমান ছিল ১ হাজার ৮৪৬ কোটি ৩০ লাখ ৪৩ হাজার ১৭৭ টাকার। লেনদেনে গেলো সপ্তাহে “বি” ক্যাটাগরির শেয়ারের অংশগ্রহন ছিল ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। এসব শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৭২ কোটি ৬৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৫০ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইতে ২ হাজার ৫৯৬ কোটি ৫০ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইতে ২ হাজার ২২২ কোটি ৬ লাখ ৩১ হাজার ১৭৭ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র লেনদেন বেড়েছে ১৬.৮৫ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫১৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৪৪৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে গড় লেনদেন বেড়েছে ১৬.৮৫ শতাংশ।

সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬০টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৪৬টির, দর কমেছে ৯৪টির ও দর অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি প্রতিষ্ঠানের। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও ফান্ডগুলোর ১৭৩টির, দর কমেছে ১৫২টির ও দর অপরিবর্তিত ছিল ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র সার্বিক মূল্যসূচক বেড়েছে ১১১.৬৫ পয়েন্ট। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসই’র সার্বিক মূল্যসূচক ছিল ৪৪৫২.৯৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে তা ৪৫৬৪.৬১ পয়েন্টে স্থিতি পেয়েছে। এসময় শরীয়াহ্ ভিত্তিক কোম্পানিগুলোর মূল্যসূচক ডিএসইএস বেড়েছে ১৮.৪০ পয়েন্ট।