দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: গুজব ছড়িয়ে ৯ টাকা থেকে ১৩ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে সেন্ট্রাল ফার্মার শেয়ার বিক্রি করে শত শত কোটি টাকা তুলে নিয়েছে একটি চক্র। এ চক্রটি সেন্ট্রাল ফার্মার শেয়ার নিয়ে কারসাজিতে মেতে উঠছে। বাজারে নানা গুজবে ছড়িয়ে এ শেয়ারটির দর ক্রমাগত বাড়াচ্ছে। এ চক্রের সাথে ডিএসই একটি সিকিউরিটিজ হাউজের মালিকপক্ষ জড়িত রয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে। এর আগে তিনি সমতা লেদার শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট হাউজটির বিরুদ্ধে।

মন্দা বাজারেও লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে ‘মন্দ’ কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মার শেয়ারের দর। প্রতিষ্ঠানটির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধিতে কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরাই অবাক হচ্ছেন। তারা বলছেন, কোম্পানির উৎপাদন এখন বন্ধ, তারপরেও কেন এভাবে দাম বাড়ছে তার কেনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। কয়েকজন ব্যক্তি কারসাজি করে শেয়ারের দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। গত সপ্তাহ বেশ খারাপ সপ্তাহ পার করেছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের পাঁচ দিনের লেনদেনে পাঁচ দিনই সূচক পড়েছে, শেষ দিন বৃহস্পতিবার প্রধান বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৯ পয়েন্ট বা দেড় শতাংশ কমেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় (সমাপনী দরের ভিত্তিতে) শীর্ষে ছিল ওষুধ খাতের কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারটির সমাপনী দর ছিল ৯ টাকা ৬০ পয়সা। শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার তা এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ টাকা ৮০ পয়সা।

গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের মোট ২৬ কোটি ৮৯ লাখ ১৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ৫ কোটি ৩৭ লাখ ৮৩ হাজার। বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ১৩ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়েছে। এদিন ২ হাজার ৩৩৭ বারে প্রতিষ্ঠানটির মোট ৯৫ লাখ ১৫ হাজার ৫৮৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১৬ টাকা ৩০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।

সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১১ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪৪ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ইপিএস হয়েছে ৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৫ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ১ পয়সা।

এদিকে সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে ৪৮ পয়সা ইপিএস হয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫১ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। ৩০ জুন কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ১৪ টাকা ৮৭ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৫ টাকা ৪ পয়সা (পুনর্মূল্যায়িত)। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।