দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিদায়ী সপ্তাহের ৫ কার্যদিবসই পুঁজিবাজারে পতন হয়েছে। টানা পতনে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার দরে বড় পতন হয়েছে। তবে বড় পতনের মধ্যেও শেয়ার দরে টানা উল্লম্ফনে ছিল রসায়ন ও ফার্মা খাতের দুই কোম্পানির। আগের সপ্তাহেও কোম্পানি দুটির শেয়ার দর ঊর্ধ্বমুখী ছিল। কোম্পানি দুটি হলো-সেন্ট্রাল ফার্মা ও ফার কেমিক্যাল লিমিটেড। দুই সপ্তাহের ৯ কার্যদিবসে সেন্ট্রাল ফার্মার দর বেড়েছে ৬২ শতাংশ এবং ফার কেমিক্যালের দর বেড়েছে ৫৬ শতাংশ। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সেন্ট্রাল ফার্মা: গত ১০ ফেব্রুয়ারি সেন্ট্রাল ফার্মার দর ছিল ৮ টাকা ৫০ পয়সা। টানা ৯ কার্যদিবসেই কোম্পানিটির শেয়ারদরে তেজিভাব ছিল। ২৭ ফেব্রুয়ারি শেয়ারটির ক্লোজিং দর বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ টাকা ৮০ পয়সা। এ সময়ে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৫ টাকা ৩৯ পয়সা বা ৬২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত তিন বছর কোম্পানিটির মুনাফা ও লভ্যাংশে ধারাবাহিক পতন হয়েছে। ২০১৭ সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ৫ পয়সা। ২০১৮ সালে ইপিএস কমে দাঁড়ায় ৫৩ পয়সায় এবং ২০১৯ সালে আরও কমে দাঁড়ায় ৪৮ পয়সায়।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’১৯) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৪ পয়সা। ৬ মাসে মুনাফা কমেছে ৭৫ শতাংশ। অন্যদিকে, ২০১৭ সালে কোম্পানিটি লভ্যাংশ দিয়েছিল ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ, ২০১৮ সালে ৫ শতাংশ স্টক এবং ২০১৯ সালে ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ।
সেন্ট্রাল ফার্মা ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘বি’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৩০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ১১৯ কোটি ৮০ লাখ ১০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৫৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

ডিএসই থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানিটির মোট শেয়ারের পরিমাণ ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪৪টি। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ২৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৫৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ শেয়ার।
ফার কেমিক্যাল: গত ১০ ফেব্রুয়ারি ফার কেমিক্যালের শেয়ারদর ছিল ৭ টাকা ২০ পয়সা। টানা ৯ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদরে তেজিভাব ছিল। ২৭ ফেব্রুয়ারি শেয়ারটির দর বেড়ে দাঁড়ায় ১১ টাকা ২০ পয়সায়। এই সময়ে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৪ টাকা বা ৫৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত তিন বছর কোম্পানিটির লভ্যাংশ না কমলেও ধারাবাহিকভাবে কমেছে মুনাফা। ২০১৭ সালে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ৭৯ পয়সা। ২০১৮ সালে ইপিএস কমে দাঁড়ায় ১ টাকা ৪৮ পয়সায় এবং ২০১৯ সালে আরও কমে দাঁড়ায় ১ টাকা ৫ পয়সায়। এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’১৯) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬২ পয়সা। মুনাফা কমেছে ৪১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। তবে কোম্পানিটি গত তিন বছর একই পরিমাণ লভ্যাংশ দিয়েছে। গত তিন বছরে ১০ শতাংশ করে স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি।

ফার কেমিক্যাল ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৩০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ২১৮ কোটি ০৯ লাখ ৩ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৭৯ কোটি ২৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
ডিএসই থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানিটির মোট শেয়ারের পরিমাণ ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪৪টি। মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩০ দশমিক ২৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৮ দশমিক ৮১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪০ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ার।