দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিল গঠন করল সোনালী ও রূপালী ব্যাংক। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংক ৮৫ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। আরো চারটি ব্যাংক তহবিল গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যাংক চারটির পরিচালনা পর্ষদও অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে দু’টি বেসরকারি ও দু’টি সরকারি ব্যাংক রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, পুঁজিবাজারে টাকার প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক দফায় দফায় উদ্যোগ নিয়ে আসছে। সর্বশেষ রেপোর মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের জন্য ব্যাংকগুলোকে অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু ওই সময় মাত্র সিটি ব্যাংক ছাড়া আর কোনো ব্যাংক সাড়া দেয়নি। সিটি ব্যাংক ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে রেপোর মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা তহবিল সংগ্রহ করেছিল। ওই উদ্যোগে সাড়া না পাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সর্বশেষ গত ৯ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য ব্যাংকগুলোকে বিশেষ সুযোগ দেয়া হয়। ওই নির্দেশনায় প্রতিটি ব্যাংকের ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের অনুমোদন দেয়া হয়।

এই তহবিল গঠনের জন্য ব্যাংকগুলো নিজস্ব উৎস থেকে, অথবা তাদের হাতে থাকা ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ সংগ্রহ, অথবা প্রথমে নিজ উৎস হতে তহবিল গঠন করে পরে রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকার তহবিলের সংস্থান করতে পারবে। তবে এ ২০০ কোটি টাকা পাঁচ বছরের জন্য ব্যাংকগুলোর ধারণকৃত শেয়ারের নির্ধারিত সীমা অর্থাৎ ২৫ শতাংশের আওতামুক্ত থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রেপোর মাধ্যমে ধার নিলে রেপোর সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৫ শতাংশ। ৯০ দিন পর পর এ তহবিলের মেয়াদ ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন নির্দেশনার পর বিভিন্ন ব্যাংক তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। শুধু পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য এ তহবিল গঠন করেছে সোনালী ব্যাংক। ব্যাংকটি নিজস্ব তহবিল থেকে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করেছে। রূপালী ব্যাংকের পর্ষদ সভায় তহবিল গঠনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ব্যাংকটি নিজস্ব তহবিল থেকে ৮৫ কোটি টাকার তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করেছে। ব্যাংকটি আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ধাপে ধাপে এ তহবিল ২০০ কোটি টাকায় উন্নীত করবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে।

বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক ইতোমধ্যে ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। সিটি ব্যাংকও ধাপে ধাপে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করবে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদও তাদের নিজস্ব উৎস থেকে বিশেষ তহবিল গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা হয়েছে। একই সাথে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ও অগ্রণীও বিশেষ এ তহবিল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুঁজিবাজারে টাকার প্রবাহ বাড়াতে সোনালী ব্যাংক আগে থেকেই কাজ করছে। ইতোমধ্যে ব্যাংকটি তাদের নিজস্ব বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী তারাই প্রথম নিজস্ব তহবিল থেকে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করেছে। তিনি আশা করেন, সব ব্যাংক এগিয়ে এলে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন সম্ভব হবে।