দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর সম্মান রেখে অন্তত ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা উচিত। কারন বর্তমান পুঁজিবাজারের করুন চিত্র। গত ১০ বছরের মধ্যে শেয়ারের দাম সর্বনিন্ম অবস্থানে রয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের সময়। অথচ সরকার সহ নীতি নির্ধারকের আন্তরিকতার পরও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিস্কিয় ভুমিকা পালন করছেন। তেমনি ব্যাংকগুলো নিরব ভুমিকায় রয়েছেন। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ করলে লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে চলে। অথচ ব্যাংক গুলোর ভুমিকা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তেমনি ডিএসই পরিচালক রকিবুর রহমান ক্ষোভে বলেছেন, ব্যাংকগুলো এত সাহস পেলে কোথায় থেকে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ব্যাংকগুলো কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা না মানার দুঃসাহস দেখাচ্ছে?

তহবিল গঠনে ব্যাংকের সমস্যার বিষয়ে রকিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্দেশনা জারির পর এক মাস কেটে গেছে। এতদিন কেন তারা এ সমস্যার কথা বলেনি? ব্যাংকের মালিক ও এমডিদের দুটি পৃথক সংগঠন আছে। তারা কেন এতদিন সমস্যার কথা জানতে চায়নি? প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ না মানার দুঃসাহস তারা কোথায় পেল?

এ সময় পরিচালকদের নিজ নিজ ব্যাংকের শেয়ার কেনার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো একের পর এক বোনাস শেয়ার দিয়ে পরিশোধিত মূলধন ও শেয়ার বাড়িয়েছে। সে শেয়ার তারা বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি করেছে। এখন ব্যাংকের শেয়ার দাম অনেক কমে গেছে। এই পরিচালকদের কি ব্যাংকের প্রতি, বিনিয়োগকারীদের প্রতি কোনো মায়া লাগে না?

“একজন পরিচালক যদি ৫০টি করেও শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন তাতেও বিনিয়োগকারীরা আস্থা ফিরে পাবেন। পুঁজিবাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ব্যাংকের পরিচালকদের প্রতি অনুরোধ, আল্লাহর ওয়াস্তে আপনারা এখন কম দামে শেয়ার কেনেন” বলেন ডিএসইর এ পরিচালক। ব্যাংক ব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী- সংসদে জানানো হয়েছে এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংকের পরিচালকের সঙ্গে যোগসাজশ করে এক লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছেন।

পরিচালকরা পারস্পরিক যোগসাজশে যে টাকা নিয়ে গেছেন, তারা কী আদৌ সেই টাকা শিল্পায়নে বিনিয়োগ করেছেন? তারা কী আদৌ এ টাকা পরিশোধ করেন? ব্যাংকের পরিচালকরা নামে, বেনামে অথবা আত্মীয়স্বজন অথবা ভুয়া কোম্পানি দেখিয়ে অথবা তাদের কর্মচারীর নামে যে টাকা নিয়ে গেছেন তা আদায়ে ম্যানেজমেন্ট আইনি কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি? এসব প্রশ্ন রাখেন রকিবুর রহমান।

বাজার বিশ্লেষক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, গত সোমবার দেশে করোনাভাইস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ায় বাজারে বড় পতন হয়েছিল। আশা করি পুঁজিবাজােরে আতঙ্ক কেটে গেছে। বিনিয়োগকারীরা না বুঝে লোকসানে শেয়ার বিক্রি করছেন। পুঁজিবাজারে বর্তমানে বিনিয়োগের সময়। সেখানে লোকসানে শেয়ার বিক্রির কারন কি?