দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বৃহস্পতিবার যে আদেশ জারি করেছে সে বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জই স্পষ্ট নয়। কমিশন যেভাবে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দর নির্ধারণ করে দিয়েছে, তার হিসাব করতে গিয়ে ভুল করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। গত বৃহস্পতিবার ভুল দরে শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।

ফ্লোর প্রাইস নিয়ে বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্নিষ্টদের মধ্যেও ব্যাপক বিভ্রান্তি রয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, ফ্লোর প্রাইস নির্দিষ্ট। সার্কিট ব্রেকারও কার্যকর। শুধু কোনো শেয়ারের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারের ক্ষেত্রে নিম্নসীমা কোনোভাবেই ফ্লোর প্রাইসের কম হতে পারবে না। এক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জ ভুল করলে, তার দায় তাদের।

স্টক এক্সচেঞ্জের সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা ভুলের কথা স্বীকার করে বলেছেন, অতি অল্প সময়ে নির্দেশনা অনুযায়ী সফটওয়্যারে পরিবর্তন করতে গিয়ে ভুল হয়েছে। ত্রুটি সারাতে গত শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনেও কাজ করেছেন কর্মকর্তারা। দরপতন ঠেকাতে গত বৃহস্পতিবার এক আদেশে বিএসইসি সব শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দর) নির্ধারণ করে দিয়েছে। ওই আদেশ অনুযায়ী কোনো শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস হবে গত ১১ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত পাঁচ কার্যদিবসে সব শেয়ারের ক্লোজ প্রাইসের গড়। এ ছাড়া শেয়ারদর ভেদে নির্ধারিত হারে সার্কিট ব্রেকারও কার্যকর থাকবে।

কমিশনের আদেশ অনুযায়ী, কোনো শেয়ারের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকারের ঊর্ধ্বসীমা কার্যকরে কোনো জটিলতা নেই। কিন্তু সার্কিট ব্রেকারের নির্ধারিত হার কার্যকর করতে গিয়ে যদি দেখা যায় ওই দর ফ্লোর প্রাইসের থেকে কমে যাচ্ছে, তবে ফ্লোর প্রাইসই হবে ওইদিনের শেয়ারের সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন সীমা। যতদিনই ফ্লোর প্রাইসের আদেশ প্রত্যাহার না করা হচ্ছে, ততদিনই তা বহাল থাকবে। অর্থাৎ ফ্লোর প্রাইস পরিবর্তন হবে না।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির আদেশ অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবারের সব শেয়ারের ওপেনিং প্রাইসই ফ্লোর প্রাইস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জটি ফ্লোর প্রাইস গণনায় ভুল করেছে এবং সেভাবেই শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান জানান, কীভাবে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ হবে, তা সরকারই ঠিক করে দিয়েছে। হিসাবটি সহজ। কোনো শেয়ারের ১১ থেকে ১৮ মার্চের ক্লোজিং প্রাইসের গড়। শেয়ারদর সার্কিট ব্রেকার অনুযায়ী বাড়তে বা কমতে পারবে। শুধু শর্ত একটাই- ফ্লোর প্রাইসের নিচে শেয়ারদর নামতে পারবে না।

ডিএসইর সংশ্নিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করার জন্য অন্তত এক সপ্তাহ সময় দরকার ছিল। এক ঘণ্টারও কম সময়ে হিসাব করতে গিয়ে কিছু ভুল হয়েছে। শুক্র ও শনিবার কাজ করে ভুল সংশোধন করার চেষ্টা করা হয়েছে।