দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু’র মৃত্যুতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। প্রবীন নেতা পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই মহান রাজনীতিকের আত্মার শান্তি কামনা করার পাশাপাশি শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর ।

গত ১১ মার্চ থেকে এ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন সাংসদ শামসুর রহমান শরীফ। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় তিনি ভুগছিলেন। ১৯৪১ সালের ১২ মার্চ পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর শানিরদিয়াঢ় গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন শামসুর রহমান শরীফ। তার বাবার বাড়ি ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের লক্ষ্মীকুণ্ডা গ্রামে।

পাবনা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট করার পর একই কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে গ্রাজুয়েশন করেন শামসুর রহমান শরীফ ডিলু। রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি হয় ছেলেবেলাতেই। ভাষা আন্দোলনের উত্তাল সময়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় শামসুর রহমান ডিলুকে গ্রেপ্তার হতে হয়েছিল ভাষার দাবিতে মিছিলে যোগ দেওয়ার কারণে।

আইয়ুব খানের মার্শাল ল বিরোধী আন্দোলন, হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানেও তিনি ছিলেন সক্রিয়। এ কারণে কয়েক দফা জেলে যেতে হয় তাকে। একাত্তরের ৭ নম্বর সেক্টর থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন শামসুর রহমান ডিলু।

লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করার পর তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পাবনা-৪ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর প্রতিটি সংসদ নির্বাচনেই তিনি বিজয়ী হয়েছেন। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাবনার এই সংসদ সদস্যকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন।

শামসুর রহমান ডিলু প্রথমবার পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন ২০০৪ সালে। পরে ২০১৪ সালে আবারও তাকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিন জেলে থাকতে হয়েছে আওয়ামী লীগের এই রাজনীতিবিদকে। তাকে জেল খাটতে হয়েছে সামরিক শাসক এইচএম এরশাদের আমলেও । শামসুর রহমান ডিলু স্ত্রী, চার ছেলে ও পাঁচ মেয়ে রেখে গেছেন।