দেশ প্রতিক্ষণ,বরিশাল : করোনার দুর্যোগে বরিশাল বিএনপির কোনো নেতাকর্মী আর জনগনের পাশে নেই। পদের জন্য মরিয়া কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার ঢাকায় উঠেছেন। জেলা দক্ষিণের সভাপতি এবায়েদুল হক চান ও সাধারণ সম্পাদক মেজবা উদ্দিন ফরহাদ বরিশালে থাকলেও প্রকাশ্যে আসছেন না। কেন্দ্রীয় নেতা সেলিমা রহমান, এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন, ঝালকাঠির শাহজাহান ওমর, বিলকিছ জাহান শিরিন, আহসান হাবিব কামাল, আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহাবুবুল আলম নান্নু, আবুল কালাম শাহীন, জিয়াউদ্দিন সিকদারসহ বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলে বিএনপি’র হেভিওয়েট কোন নেতাদেরই দেখা মিলছে না।

এমনকি বিএনপি দলটির পক্ষ থেকে ত্রাণ বা আর্থিক সহয়তার কোন উদ্যোগ নেই। দলীয় নেতৃবৃন্দ একে অপরকে দুষছেন। তাদের বক্তব্য সাংঘর্ষিক। এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারের দাবি, সরকারের অসহযোগীতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা রুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেন না।

জেলা দক্ষিণের সভাপতি এবায়েদুল হক চানের দাবি, ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে বাঁধা আসলেও তাদের পক্ষ থেকে আর্থিক সহয়তা দেয়া শুরু হয়েছে। যুব ও ছাত্রদল নেতৃবৃন্দের ব্যাখ্যা দীর্ঘদিন সরকারের বাইরে থাকায় আর্থিক দৈন্যতার কারণে দলীয় কোনো উদ্যোগ না থাকায় তারা মাঠে নামতে পারছে না। নেতৃবৃন্দের এ ধরণের বক্তব্যকে দলীয় কর্মী সমর্থকরাই হাস্যকর বলে মন্তব্য করছে।

উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস বিস্তারের সূচনালগ্নে এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার ও এবায়েদুল হক চানকে প্রথম দুই দিন মাঠে দেখা গেছে। এর মধ্যে প্রথম জন জনসচেতনতায় লিফলেট বিরতণ ও দ্বিতীয় জন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড়ে দাঁড়িয়ে হ্যান্ডস্যানিটাইজার দিয়ে পথচারীদের হাত ধৌত করে নিজের অবস্থান জানান দিতে দেখা যায়। এরপর থেকে আর সংগঠনটির কোনো স্তরের নেতৃবৃন্দের আর দেখা নেই।

এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার জানিয়েছেন, দেশের বাইরে অবস্থানকারী তার দুই সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আসতে তিনি দ্রুত ঢাকায় আসেন। এরপরই লকডাউনের কারণে বরিশাল ফিরতে পারছেন না।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁন বলেন, দীর্ঘদিন সরকারের বাইরে থাকায় আর্থিক সংকট থাকলেও এই দূর্যোগে তারা একেবারেই নিরব তা নয়। তার সংগঠনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহয়তা দেয়া শুরু হয়েছে।

ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত কর্মী সমর্থকদের এই আর্থিক সহয়তা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নির্দলীয়ভাবে ত্রাণ তৎপরতা চলছে। এ অঞ্চলের একজন শীর্ষ নেতা দলের পক্ষে ইতোমধ্যে বানারীপাড়া-উজিরপুর থেকে এই ত্রাণ কর্মসূচি শুরু করেছেন। পর্যায়ক্রমে সব উপজেলায় তা দেয়া হবে। কে সেই নেতা রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে তার নাম প্রকাশে তিনি অস্বীকৃতি জানান।

জানা গেছে, স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ সাড়ির নেতাদের মধ্যে একমাত্রা সরোয়ার বাদে অন্যরা সবাই বরিশালে রয়েছেন। তারা পালিয়ে আছেন। তবে ব্যাতিক্রম বরিশাল যুবদলের সভাপতি পারভেজ আকন বিপ্লব। তিনি কাউনিয়ার কিছু অংশে ত্রাণ সহয়তা দিয়েছেন। অথচ, হলফ নামায় উল্লেখিত হেভিওয়েট নেতারা যেমন দলে বড় পদ আকড়ে রেখেছেন, তেমনি সম্পদের পাহাড় প্রত্যেকের। কিন্তু জনগনের দুর্দিনে গালভরা কথা বলা বিএনপি নেতাদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।