দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারের ২ কোম্পানির মুনাফায় চমক দেখিয়েছে। এর একটি সামিট পাওয়ার আরেকটি রেকিট বেনকিজার। এর মধ্যে সদ্য ডিভিডেন্ড দেওয়া রেকিট বেনকিজার ২০১৯ সালের ব্যবসায় অর্জিত মুনাফার ৯৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ হিসেবে শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রেকিট বেনকিজার: রেকিট বেনকিজারের পরিচালনা পর্ষদ ২০১৯ সালের ব্যবসায় অর্জিত মুনাফার ৯৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ হিসেবে শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানিটির প্রকাশিত ২০১৯ সালের আর্থিক হিসাব থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে জনজীবন ও ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়লেও পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিজারের মুনাফার পালে হাওয়া লেগেছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ওষুধ ও রসায়ন খাতের এই কোম্পানিটি ব্যবসা করে আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ মুনাফা অর্জন করেছে।

কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভায় জানুয়ারি-মার্চ সময়ের ব্যবসায়িক তথ্য পর্যালোচনা শেষে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রেকিট বেনকিজার ২০১৯ সালের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি ১৩১.০৬ টাকা মুনাফা হয়েছে। এর বিপরীতে অভিহিত মূল্য ১০ টাকা বিবেচনায় প্রতিটি শেয়ারে ১২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। শেয়ারপ্রতি ১৩১.০৬ টাকার মুনাফা বিবেচনায় এই লভ্যাংশের পরিমাণ ৯৫ শতাংশ।

কোম্পানিটির ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি ১৩১.০৬ টাকা হিসেবে মোট ৬১ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ টাকার নিট মুনাফা হয়েছে। অর্জিত মুনাফার ১২৫০ শতাংশ হিসেবে শেয়ারপ্রতি ১২৫ টাকা করে মোট ৫৯ কোটি ০৬ লাখ ২৫ টাকা বা ৯৫.৩৮ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আর মুনাফার বাকি ২ কোটি ৮৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা বা ৪.৬২ শতাংশ রিজার্ভে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটি। এদিকে কোম্পানিটির পর্ষদ ২০১৮ সালের ব্যবসায় ৭০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

মুনাফার এই উল্লম্ফনের ওপর ভর করে ২০১৯ সালের সমাপ্ত হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য রেকর্ড পরিমাণ ১২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ডেটল, মরটিন, হারপিক, ভ্যানিশ, লাইজল ও ভিটসহ কয়েকটি প্রসাধন পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করা

কোম্পানিটি ১৯৮৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকেই শেয়ারহোল্ডারদের মোটা অঙ্কের লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বরাবরই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। যে কারণে এখন শেয়ারবাজারের সব থেকে দামি শেয়ারের প্রতিষ্ঠান এটি।

তবে এক হিসাব বছরে এর আগে কখনো ১২৫০ শতাংশের এত বড় লভ্যাংশ দেয়নি বহুজাতিক এই কোম্পানিটি। এর আগে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ২০১৮ সালে ৭০০ শতাংশ নগদ, ২০১৭ সালে ৭৯০ শতাংশ নগদ, ২০১৬ সালে ৭৭৫ শতাংশ নগদ এবং ২০১৫ সালে ৬৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

সামিট পাওয়ার: সামিট পাওয়ারের ৯ মাসে (জুলাই’১৯-মার্চ’২০) ৪৩৫ কোটি টাকা মুনাফা হয়েছে। যা আগের বছর একই সময় থেকে ৫৫ কোটি টাকা বা সাড়ে ১৪ শতাংশ বেশি। কোম্পানিটির ৯ মাসের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪.০৮ টাকা। আর শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১০৬ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ২৩৯টি। সে হিসাবে ৯ মাসে কোম্পানিটির মোট মুনাফা হয়েছে ৪৩৫ কোটি ৬৯ লাখ ৩৯ হাজার ১৩৫ টাকা।

আগের বছর একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিল ৩.৫৬ টাকা। সে হিসাবে মোট মুনাফা হয়েছিল ৩৮০ কোটি ১৬ লাখ ৪২ হাজার ৯৭০ টাকা। আগের বছর একই সময় থেকে চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস ০.৫২ টাকা বেশি হয়েছে। অর্থাৎ মুনাফা ৫৫ কোটি ৫২ লাখ ৯৬ হাজার ১৬৫ টাকা বা ১৪.৬১ শতাংশ বেড়েছে।

এদিকে অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক বা শেষ ৩ মাসে (জানুয়ারি-মার্চ’২০) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.২৪ টাকা। এ হিসেবে কোম্পানিটির মোট মুনাফা হয়েছে ১৩২ কোটি ৪১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৭৬ টাকা। আর আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস হয়েছিল ১.০২ টাকা।

সে হিসাবে মোট মুনাফা হয়েছিল ১০৮ কোটি ৯২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৮৪ টাকা। আগের বছর একই সময় থেকে চলতি অর্থবছরের ৩ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস ০.২২ টাকা বেড়েছে। অর্থাৎ এই সময়ের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা ২৩ কোটি ৪৯ লাখ ৩২ হাজার ৯৯২ টাকা বা ২১.৫৭ শতাংশ বেড়েছে। ৩১ মার্চ ২০২০ পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩০.৪৭ টাকায়।