দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার প্রফেসর হেলালউদ্দিন নিজামীর চুক্তির মেয়াদ গতকাল ২ মে শেষ হয়েছে। এছাড়া আগামী ১৪ মে বিএসইসি চেয়ারম্যান ড.এম খায়রুল হোসেনের মেয়াদ শেষ হবে। কিন্তু তাদের মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। যে কারণে চুক্তির মেয়াদ অনুযায়ী কমিশনার হেলালউদ্দিন নিজামীকে বিদায় নিচ্ছে।

এছাড়া কোভিড-১৯ ইস্যুতে সরকারি ছুটির কারণে এ বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্য‌োগ নেয়া যাচ্ছে না। সরকারি ছুটি শেষে গুরুত্বপূর্ণ এ ইস্যু নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ করবে বলে বিএসইসি সূ‌ত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, ২০১০ সালে পুঁজিবাজার ধসের পর গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পুন:গঠিত হয় কমিশন। সেই সময় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক ড.এম খায়রুল হোসেন। তার সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রফেসর হেলালউদ্দিন নিজামী।

এদিকে ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে মহাধসের প্রেক্ষাপটে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুনর্গঠন করা হয়। ২০১১ সালের ১৫ মে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ পান ড. এম খায়রুল হোসেন। পুঁজিবাজারের দায়িত্ব নিয়ে প্রথমদিনেই তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাবেন, বাজারে স্থিতিশীলতা আনবেন। না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।

তারপর ৯ বছর চলে গেছে। এর মধ্যে অনেক কিছুরই বদল হয়েছে। আগামী ১৪ মে এই কমিশনের সদস্য ও চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। নতুন করে দায়িত্বরতদের মেয়াদ বাড়ানোর কোন আইনী সুযোগ না থাকায় চলতি মাসেই নতুন কমিশন পাচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার।

৯ বছরে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণ কী কী কাজ করেছেন। বিএসইসির ওয়েবসাইটে বলা আছে, স্বচ্ছতা, স্থিতিশীলতা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে এম খায়রুল ইসলাম নিরলস কাজ করেছেন। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বিএসইসির সংস্কার করেছেন। খায়রুল হোসেনের দীর্ঘ নয় বছরের শাসনামলে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে অনেক আইন ও নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। নেয়া হয়েছে অনেক উদ্যোগও।

তবে অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে দরপতন চলছে। এতে পুঁজি হারাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। আস্থা তলানিতে। টানা বিক্ষোভ করছেন বিনিয়োগকারীরা। পুঁজিবাজারের কারসাজি চক্রটি এখন আরও শক্তিশালী ও সক্রিয়।

বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তারাই। সূচকের ওঠানামা খুবই নিয়ন্ত্রিত। পতন তীব্র হলে হস্তক্ষেপ করে বাজারের সূচক এক বা দুই দিনের জন্য বাড়ানো হলেও এরপরে আবার পতন শুরু হয়। এককথায় বলা যায়, পুঁজিবাজারের ওপর কোনো আস্থা নেই বিনিয়োগকারীদের।