দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা:  পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন ও প্রাইম ব্যাংকের ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে। ঘোষিত ডিভিডেন্ড ও কোম্পানিগুলোর ইপিএসে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশিত ইপিএস ও ডিভিডেন্ড পায়নি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে।

প্রাইম ব্যাংক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকিং খাতের প্রাইম ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সাড়ে ১৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.৪৭ টাকা। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৩.৪৬ টাকা।

ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ৯ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। আর ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরণর জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ জুন।

আইডিএলসি ফাইন্যান্স: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্সের মুনাফায় ধস নেমেছে। চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২০-মার্চ’২০) কোম্পানিটির মুনাফা আগের প্রান্তিকের তুলনায় অর্ধেক হয়ে গেছে। কোম্পানির সর্বশেষ প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, মূলত পুঁজিবাজারের মন্দার প্রভাবে কোম্পানিটির মুনাফা এতটা কমেছে। মন্দার কারণে আইডিএলসির সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো লোকসান করেছে। এমনিতে এককভাবে আয় বেড়েছে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মে) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় আলোচিত প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে আইডিএলসি ফাইন্যান্স ২৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা নীট মুনাফা করেছে। গত বছর একই প্রান্তিকে নিট মুনাফা ছিল ৫১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে প্রায় ৪৩ শতাংশ।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সমন্বিতভাবে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি আয় (Consolidated EPS) হয়েছে ৭৮ পয়সা, যা আগের প্রান্তিকে ছিল ১ টাকা ৩৭ পয়সা। এককভাবে আইডিএলসি ফাইন্যান্স প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস (Solo EPS) করেছে ১ টাকা ১৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ১ টাকা ৯ পয়সা ছিল।

গত বছরের মতো এবছরের প্রথম প্রান্তিকেও আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ক্যাশ ফ্লো ছিল ঋণাত্মক। এ সময়ে সমন্বিতভাবে কোম্পানির ক্যাশ ফ্লো ছিল মাইনাস ২ টাকা ১৮ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে তা ৯ টাকা ২২ পয়সা ছিল। গত ৩১ মার্চ,২০২০ তারিখে সমন্বিতভাবে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৩৭ টাকা ৯৫ পয়সা, আর এককভাবে ৩০ টাকা ৯৪ পয়সা।

জিবিবি পাওয়ার: পুঁজিবাজারে বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি জিবিবি পাওয়ার লিমিটেড চলতি হিসাবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের (জুলাই’১৯-মার্চ’২০) সমন্বিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিক তথা ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে (ইপিএস) ৮০ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে তা ৭৬ পয়সা ছিল।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে কোম্পানি তৃতীয় প্রান্তিকের ইপিএস আলাদাভাবে দেখায়নি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, দ্বিতীয় প্রান্তিক (ঝুলাই’১৯-ডিসেম্ব’১৯) পর্যন্ত কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ৫৫ পয়সা। সে হিসেবে তৃতীয় প্রান্তিকে ইপিএস দাঁড়ায় ২৫ পয়সা।

এ সময়ে শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ১.২৭ টাকা। গত ৩১ মার্চ, ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৯ টাকা ৬০ পয়সা।

ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২০-মার্চ’২০) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বুধবার (১৩ মে) অনুষ্ঠিত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় এই প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিত অর্থাৎ সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ শেয়ার প্রতি আয় (Consolidated EPS) হয়েছে ১ টাকা ৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ১ টাকা ৬ পয়সা। অন্যদিকে এককভাবে শুধু ইবিএলের শেয়ার প্রতি আয় (Solo EPS) হয়েছে ১ টাকা ৩ পয়সা, যা গত বছের একই সময়ে ছিল ৯৯ পয়সা।

গত ৩১ মার্চ, ২০২০ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩৩ টাকা ৮ পয়সা। আর এককভাবে এনএভিপিএস ছিল ৩২ টাকা ৬০ পয়সা। প্রথম প্রান্তিকে সমন্বিতভাবে ইবিএলের নগদ অর্থের প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) ছিল ৫ টাকা ২৪ পয়সা, আর এককভাবে ৩ টাকা ৯৪ পয়সা।