দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশের উপকূলে ঢুকে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় আম্পান। সুপারসাইক্লোনটির বর্ধিতাংশ অতিক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশের সীমানা। এরইমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে অধিকাংশ মানুষকে। আম্পানের প্রভাবে উপকূলের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টি হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে পটুয়াখালি ও ভোলায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মানিকা ইউনিয়নের চর কচ্ছপিয়া গ্রামের সিদ্দিক ফকির (৭০) বাড়ির পাশে গাছের নিচে চাপা পড়েন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এর আগে সকালে চট্টগ্রামে শ্রমিক হিসেবে কাজ করা মোহাম্মদ রাফিকুল ইসলাম (৩৫) ফিরছিলেন। লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘট থেকে ট্রলারে করে ভোলার ইলিশা ঘাটে আসার পথে মেঘনায় ট্রলার উল্টে নিহত হন তিনি।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেই সাথে বরগুনা, বরিশাল, বাগেরহাটসহ উপকূলের বেশিরভাগ জেলায় জারি রয়েছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, পূর্ব মেদিনীপুর, ২৪ পরগনাসহ বেশ কয়েকটি জেলার ওপর দিয়ে তাণ্ডব অতিক্রম করতে সময় লাগতে পারে ৪ ঘণ্টা। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার। এদিকে, আম্পানের প্রভাবে শ্রীলঙ্কায় ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রাণ গেছে ২ জনের। আবহাওয়াবিদ জানান, পুরোপুরি স্থলভাবে উঠে আসতে ছয় থেকে আট ঘণ্টা লাগতে পারে। এর প্রভাবে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সন্ধ্যায় আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন সাগর এলাকা উত্তাল রয়েছে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তি দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা বয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তি দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এর আগে বিকালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত হানে আম্পান। এতে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়, গাছাপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে তিনজন এবং উডিশায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে।