দেশ প্রতিক্ষণ, বরিশাল: করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ায় বরিশাল জেলায় নানান পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পার করেছে লকডাউনের ৪৭ তম দিন। বিগত ১২ এপ্রিল এই জেলার মেহেন্দীগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় দুইজন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলে ওইদিনই জেলা প্রশাসক জেলাটি লকডাউন করেন। সেইদিন থেকে আজ (২৮ মে) পর্যন্ত ১৯৪ জন করোনা পজেটিভ রোগী পাওয়া গেছে। যার মধ্যে বুধবার (২৭ মে) শেবাচিম হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব প্রদত্ত তথ্যে জানা গেছে, ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ১৩ জন করোনা সনাক্ত হয়েছেন।

সনাক্তদের মধ্যে ১৩ জনই বরিশাল মহানগরীর বাসিন্দা। এরমধ্যে চিকিৎসক, পুলিশ, নার্সসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোক রয়েছেন। শুধু যে আজ মহানগরীর আক্রান্তের সংখ্যা বেশি তা কিন্তু নয়, বিভিন্ন কারণে বরিশাল মহানগরী করোনার হটস্পটে পরিণত হয়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তেদের মধ্যে ৫৮ জন নারী এবং ১৩৬ জন পুরুষ। অর্থাৎ ৭০ শতাংশ হচ্ছে পুরুষ। মাত্র ৩০ শতাংশ নারী আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে এই জেলায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, লকডাউন শিথিল করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারনে বরিশাল মহানগরী করোনার হটস্পটে পরিণত হয়ে উঠছে। ধরণা করা হচ্ছে, ঈদ বাজার মনিটরিংয়ে ঢিলেমী থাকায় অস্বাভাবিকভাবে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়েছে মহানগরীতে।

আরও পড়ুন…….

হিসেব বলছে, আজ পর্যন্ত বরিশাল জেলায় যে ১৯৪ জন আক্রান্ত হয়েছে তার মধ্যে ১৪০ জনই মহানগরীর বাসিন্দা। আর ৫৪ জন হচ্ছেন ১০ উপজেলা মিলে। যারমধ্যে সদর উপজেলায় ৪ জন, বাবুগঞ্জে ১২ জন, উজিরপুর ১০ জন, মেহেন্দীগঞ্জ ৬ জন, বাকেরগঞ্জে ৬ জন, হিজলায় ৪ জন, মুলাদীতে ৪ জন, বানারীপাড়ায় ৩ জন, আগৈলঝাড়া ৩ জন এবং গৌরনদীতে ২ জন আক্রান্ত।

বয়সের হিসেবে, শূণ্য থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আক্রান্ত ১৫ জন, ২০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত আক্রান্ত ১৪৮ জন, ৫০ থেকে তার উর্ধে ৩১ জন।বরিশালে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ১৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে এই নি‌য়ে জেলায় ক‌রোনা আক্রা‌ন্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৯৪ জনে।

আরও পড়ুন…….

৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে চলবে বাস, নৌযান ও ট্রেন 

বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম. অজিয়র রহমান মিডিয়া সেলে জানিয়েছেন, ২৭ মে আক্রান্তদের মধ্যে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক (৪২), একজন নার্স (২৮), সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একজন নার্স (৫৭), বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন সদস্য (৪০), নগরীর চাঁদমারি এলাকার ৩ জন বাসিন্দা, চাঁদমারি বিদ্যুৎ অফিসের একজন নারী (৭৫), আলেকান্দা এলাকার একজন বাসিন্দা (১২), রুপাতলী মাওলানা ভাসানী সড়ক এলাকার একজন বাসিন্দা (৩২), কাঠপট্টি এলাকার বাসিন্দা (৫১), পুলিশ লাইন রোড আমবাগান এলাকার বাসিন্দা (৪১), চৌমাথা এলাকার একজন নারী বাসিন্দা (৬০), ব্যাপ্টিস্ট মিশন রোড এলাকায় একজন বাসিন্দা (৪৫)।

এদের অবস্থান অনুযায়ী এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।পাশাপাশি তাদের অবস্থান এবং কোন কোন স্থানে যাতায়াত ও কাদের সংস্পর্শে ছিলেন তা চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে, জেলায় যতজন আক্রান্ত হয়েছেন তারমধ্যে মাত্র ৪৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। যা মোট আক্রান্তের ২৮ শতাংশ।