দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনা পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীসহ সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষার্থে পুঁজিবাজারে লেনদেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বৃহস্পতিবার বিএসইসির’ চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৭২৬তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভা বলা হয়, কোভিড-১৯ এর বিস্তাররোধে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রানালয়, গ্রণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্তৃক প্রণীত সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত অফিস আদেশ পরিপালন সাপেক্ষে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন ও সেটেলমেন্টসহ এতদসংক্রান্ত সকল কর্মকাণ্ড পুনরায় শুরু করার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের পক্ষ হতে অনাপত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

এদিকে আগামী ৩১ মে থেকে লেনদেন চালুর বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়েছে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে এ বিষয়টি বিএসইসিকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। বিএসইসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী ওই তারিখ থেকেই লেনদেন চালু করার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা।

আরও পড়ুন…….

পুঁজিবাজারকে যে কোনো মুল্যে শক্তিশালী বাজার গড়ে তোলা হবে: শিবলী রুবাইয়াত 

কেরানীগঞ্জে ৭০ বছর বৃদ্ধাকে রাস্তায় ফেলে গেল সন্তান, বৃষ্টিতে ভিজলেন মা 

জানা গেছে, করোনার প্রভাব মোকাবিলায় গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। তবে দীর্ঘ দিন লেনদেন বন্ধ থাকায় বিনিয়োগকারীরাসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন লেনদেন বন্ধ থাকার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি ভুল বার্তা যাচ্ছে। সে জন্য এসব বিষয় উল্লেখ করে লেনদেন চালুর বিষয়ে বিএসইসিকে অনুরোধ জানিয়েছে ডিএসই। একইসঙ্গে এ বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে সিএসই কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলার অংশ হিসেবে সরকারের সাধারন ছুটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে শেয়ারবাজারও ২ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। যা শুরু হয়েছে গত ২৬ মার্চ। তবে চলমান মহামারিতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের শেয়ারবাজার চালু রয়েছে। তারপরেও বাংলাদেশের শেয়ারবাজার এই দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় সমালোচনা উঠেছে।

আরও পড়ুন…….

করোনাভাইরাসের কারনে সরকার সর্বপ্রথম গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারন ছুটি ঘোষণা করে। এরপরে প্রথম দফায় ৭দিন সাধারন ছুটি বাড়িয়ে ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয় এবং দ্বিতীয় দফায় ৩দিন সাধারন ছুটি বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করে। এরপরে ১১ দিন বাড়িয়ে সাধারন ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত, আরও ১০দিন বাড়িয়ে ৫ মে পর্যন্ত এই ছুটি বর্ধিত করা হয়। যা ৫ম দফায় ১১দিন বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হয়েছিল। আর সর্বশেষ ১৪ দিন সাধারন ছুটি বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ধাপে ধাপে শেয়ারবাজারও বন্ধ ঘোষণা করেছে ডিএসই।

উল্লেখ্য, মতিঝিলের ডিএসই বিল্ডিং এবং ডিএসই এনেক্স বিল্ডিং এর প্রবেশের সময় সরকারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্যবিধি মেন ট্রেকহোল্ডার এবং ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও বিনিয়োগকারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যেমন-হ্যান্ড স্যানিটাইজার, থার্মাল স্ক্যানার এবং অন্যান্যের মাধ্যমে প্রত্যেক বিনিয়োগকারীদের ব্রোকারেজ হাউজে প্রবেশের ব্যবস্থা করেছে৷

আরো উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সকল ব্রোকারেজ হাউজকে কোভিড-১৯ এ সতর্কতার জন্য-কোন হ্যান্ড ও আলিঙ্গণ না করা, পরিমিত দূরত্ব বজায় রাখা, হাঁচি বা কাশি বা সন্দেহজনক লক্ষণ সমুহ যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী এবং ক্লায়েন্ট রয়েছে তাদের সনাক্ত করণ, অফিস প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য প্রতিবার হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাকরণ, ব্রোকারেজ হাউজে কর্মচারী এবং ক্লায়েন্টদের মাস্ক সরবরাহ করা, দর্শনার্থীদের অফিসে প্রবেশ করতে নিরুৎসাহিতকরণ, কর্মীদের শিপটিং অফিসের ব্যবস্থা করা এবং অফিসে মুখোমুখি বৈঠক থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন৷