দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে টানা ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর লেনদেন শুরু হয়েছে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে। লেনদেন শুরুর প্রথম দিনে আজ (রোববার) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। তবে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত থাকায় লেনদেন তুলনামূলক কম হয়েছে।

লেনদেন শুরুর পর থেকে শুরু হওয়া সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল শেষ পর্যন্ত। দিনশেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৫২ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৬০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ৩০ পয়েন্ট বেড়ে ৯৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানি ও ফান্ডগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৬০টির, দর কমেছে ৬৮টির ও দর অপরিবর্তিত ছিল ১৯৫টির।

আরও পড়ুন…….

দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৪৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হওয়ার আগে শেষ কার্যদিবসে বাজারটিতে লেনদেন হয় ৩৪৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২০৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

টাকার অংকে বাজেটে সবথেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার ৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন।

আরও পড়ুন…….

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো, সিলভা ফার্মা, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, রেকিট বেনকিজার এবং মুন্নু সিরামিক। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৪১ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ১০৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩১টির, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৪টির।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাংলাদেশে শুরু হয় গত ৮ মার্চ। ওইদিন বাংলাদেশে প্রথম তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য প্রকাশ পায়। এর প্রভাবে ৯ মার্চ পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স একদিনে রেকর্ড ২৭৯ পয়েন্ট পড়ে যায়। এরপর দফায় দফায় দরপতন হতে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৯ মার্চ থেকে পুঁজিবাজারে লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা কমিয়ে আনা হয়।

এরপরও পতন ঠেকানো না গেলে প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস (দামের সর্বনিম্ন সীমা) নির্ধারণ করে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারের পতন কিছুটা হলেও থামানো যায়। তবে ২৬ মার্চ থেকে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ করে দেয়া হয়।