দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশে এখন করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার গতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে। সংক্রমণ যখন সীমিত পর্যায়ে ছিল তখন সাধারণ ছুটি থাকলেও এখন নেই! এটাকে উল্টো মনে হলেও সরকার মানুষের ‘জীবিকা’র বিষয়টি চিন্তা করে সবকিছু খুলে দিয়েছে। ছুটি তুলে নেওয়ার পর করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা এত দ্রুত বেড়ে গেছে যে, আবারো সাধারণ ছুটির কথা ভাবতে হচ্ছে। তাছাড়া এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের চাপও আছে সরকারের ওপর।

ছুটি তুলে নেওয়ার এই সিদ্ধান্তে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞরাই একমত হতে পারেননি। তারা অন্তত আরো ১৫টা দিন এই অবরুদ্ধ অবস্থা বজায় রাখার পক্ষে ছিলেন। এবার সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং বিশেষজ্ঞদের দাবি- এই দুইয়ে মিলে সরকারের নীতিনির্ধারকরাও নড়েচড়ে বসেছেন। তারা বলছেন, পরিস্থিতি এভাবে খারাপ হতে থাকলে শিগগিরই আবার সাধারণ ছুটি কিংবা লকডাউনের পথে হাঁটবে সরকার। এ নিয়ে নিয়মিতই আলোচনা হচ্ছে সরকারের উচ্চপর্যায়ে।

আরও পড়ুন…….

এবার সংক্রমণ পরিস্থিতি এবং বিশেষজ্ঞদের দাবি- এই দুইয়ে মিলে সরকারের নীতিনির্ধারকরাও নড়েচড়ে বসেছেন। তারা বলছেন, পরিস্থিতি এভাবে খারাপ হতে থাকলে শিগগিরই আবার সাধারণ ছুটি কিংবা লকডাউনের পথে হাঁটবে সরকার। এ নিয়ে নিয়মিতই আলোচনা হচ্ছে সরকারের উচ্চপর্যায়ে।সরকার চলতি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে চায়। এই সময়ের মধ্যে যতটা সম্ভব, বাড়াতে চায় নমুনা পরীক্ষা।

তাতে সংক্রমণের মাত্রা বুঝে আগের চেয়েও কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ নিয়ে বলেন, যদি মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানে এবং তাতে পরিস্থিতির যদি এমন অবনতি হতেই থাকে তাহলে সরকার অবশ্যই কঠিন সিদ্ধান্তে ফিরে যাবে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা তো বলিনি যে এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, বরং এটাকে ট্রায়াল হিসেবে নিচ্ছে সরকার। এখন পরিস্থিতি যদি এভাবে খারাপ হতে থাকে তাহলে আবার সাধারণ ছুটি কিংবা লকডাউনের তো কোনো বিকল্প নেই।

এদিকে প্রয়োজনে সাধারণ ছুটি আরো দুই সপ্তাহ বাড়ানোর কথা বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে এসডিজি বাস্তবায়নে গঠিত নাগরিক ফোরাম। তারা বলেছে, দেশে বর্তমান সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছে। দিন দিন মৃত্যুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণের মধ্যে করোনা মহামারীর ঝুঁকি সম্পর্কে পর্যাপ্ত সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না।

কাপড়ের মাস্ক করোনা প্রতিরোধে বৈজ্ঞানিক সমাধান 

একই সাথে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য-উপকরণও সহজে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে, সাধারণ ছুটি সম্পূর্ণভাবে তুলে নেয়া হলে জনগণের মধ্যে রোগের বিস্তার বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হলে আরো দুই সপ্তাহ সাধারণ ছুটি বাড়ানোর কথা বিবেচনা করতে পারে সরকার। সামনের দিনগুলোতে সংক্রমণের মাত্রা কমে এলে ধাপে ধাপে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসা যেতে পারে।

গত সোমবার ‘সাধারণ ছুটি-পরবর্তী স্বাস্থ্যঝুঁকি’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে দেশের স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা এ মতামত প্রদান করেন। নাগরিক ফোরাম, বাংলাদেশ এ ভার্চুয়াল সংলাপের আয়োজন করে।

নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সংলাপে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, চলমান মহামারীতে নানামুখী অর্থনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হলেও জনগণের স্বাস্থ্যসেবা ও জীবনের নিরাপত্তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। বিভিন্ন সময়ে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমন্বয়ের অভাব দেখা গেছে। তবে, সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি; নাগরিকসেবাকে গুরুত্ব দিয়ে জনমুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে হবে। এ ক্ষেত্রে, সাধারণ ছুটি পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করা যেতে পারে।

সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত বলেন, সরকারের ত্রাণ ও সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা আরো বৃদ্ধি করা জরুরি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মহামারীতে দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী খুবই ঝুঁঁকির মধ্যে পড়েছে। তাদের কথা মাথায় রেখে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।