দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, লেনদেন নিয়ে অনেকে হতাশ হতে পারেন। কিন্তু আমি বলব হতাশ হওয়ার কিছু নাই। এখন দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের সুযোগ। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে কেউ দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে লোকসান হওয়ার সুযোগ নেই। ক্ষুদ্র ও সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছে টাকা নেই।

তারা বিনিয়োগ করে বসে আছে। এই বাজারকে গতিশীল করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রতিটি ব্যাংককে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য সহজ শর্তে দেওয়া ২০০ কোটি টাকার ঋণকে বিনিয়োগে আনতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

গত কয়েক বছর ধরে ট্রেডাররা শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক করছে বলে জানান ডিএসইর এই পরিচালক। তিনি জানান, ট্রেডারার আজকে কিনে, কালকে বেচে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের অভাব রয়েছে। কিন্তু শেয়ারবাজার দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জায়গা। এখন দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে হবে।

আরও পড়ুন…….

পুঁজিবাজারের প্রতি আগ্রহ নেই, ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন 

ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ফা্ন্ড, বীমাসহ অন্যান্য যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে সারপ্লাস অর্থ আছে, তারা এই মুহুর্তে শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে পারে। তাদের অ্যানালিস্ট আছে। তাদের মাধ্যমে বিশ্লেষন করে ২ বছরের জন্য বিনিয়োগ করতে পারে। এখন তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।

বীমা কোম্পানিগুলোর কাছে অনেক টাকা আছে। তাদের টাকাগুলো ফিক্সড ডিপোজিটে ও বন্ডে চলে যায়। অথচ সেখানে রিটার্ন অনেক কম। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর অধিকাংশ টাকা এফডিআর। অথচ পৃথিবীব্যাপি মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে। আমাদের দেশে বিনিয়োগ করার মতো অনেক ভালো ভালো কোম্পানি আছে। এ তালিকায় সরকারি ও বহুজাতিক অনেক কোম্পানি আছে।

রকিবুর রহমান বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ব্যাংকগুলো সুশাসনের মধ্যে ফিরে আসবে। আগে যেভাবে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের প্রভাবে ঋণ দেওয়া হতো, সেটা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে ব্যাংকগুলোর ব্যবসায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। যা শেয়ারবাজারে সুফল বয়ে আনবে।

সম্প্রতি বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংক একটি কার্যকরি সভা করেছেন বলে মনে করেন ডিএসইর এই পরিচালক। যারা আগামিতে নিয়মিত সভা করবে। যা বিগত সময়ে অকেজো ছিল। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক শেয়ারবাজারকে ভাইব্রেন্ট করার কমিটমেন্ট করেছে। এটা ভালো খবর।

বিএসইসির চেয়ারম্যান শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন। এছাড়া ভালো ভালো কোম্পানি আসার জন্য রেগুলেশন দিবেন। যাতে কেউ ঝামেলায় না পড়ে। উনি ২ মাসের মধ্যে এই ব্যবস্থা করতে যাচ্ছেন। উনারা বাজারের সূচকের উত্থান-পতন, কে কিনল আর কে বেচল, তা নিয়ে চিন্তা করবেন না। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্লাটফর্ম তৈরী করার জন্য কাজ করছেন।

এখন দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের সুযোগ। যারা ডে ট্রেডার, তাদের কোন সুযোগ নেই। এমনকি যারা ৩ মাসের জন্য বিনিয়োগ করবেন, তাদের জন্যও কোন সুযোগ নেই। যারা ১-২ বছরের জন্য বিনিয়োগ করবেন, তাদের জন্য বিশাল সুযোগ। তাই সবাইকে বিনিয়োগে আসার এবং সক্রিয় হওয়ার জন্য আহবান করব। আপনারা যাচাই-বাছাই করে বিনিয়োগ করুন। এই মূহুর্তে সবাই যার যার দায়িত্ব পালন করলে, সব হতাশা কেটে উঠবে বলে মনে করেন রকিবুর রহমান। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে। তখন তারল্যের কোন সংকট থাকবে না।

তিনি বলেন, আমরা জানি ১০ শতাংশে টেক্সের সুযোগ দিয়ে অপ্রদর্শিত টাকাকে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হবে। করোনাভাইরাসের কারনে এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। দেশে এমন অর্থের পরিমাণ কম না। তবে ওই অর্থ বিনিয়োগের জন্য কোন সেক্টর নির্দিষ্ট করে দেওয়া ঠিক হবে না। সবাইকে সবার সুবিধা মতো সেক্টরে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। এতে করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়বে। যা শেয়ারবাজারকে গতিশীল করবে।