জবি, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: মেস ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে যখন চরম বিপাকে সম্পূর্ণ অনাবাসিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তখন একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করছেন জবি ভিসি ড. মীজানুর। মেস ভাড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পাশ্ববর্তী থানায় অভিযোগ জানিয়ে বাড়তি হয়রানির মুখে পড়ছেন জবি শিক্ষার্থীরা। এদিকে প্রতিদিন মেস মালিকরা ফোনকলে ভাড়ার জন্য তাগদা দিয়ে যাচ্ছেন। ভাড়া কিছুটা মওকুফ কিংবা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বাসা থেকে মালামাল বাহিরে ফেলে দেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। এনিয়ে মালিকদের সাথে দ্বন্ধে গেলে পরবর্তীতে মেস ভাড়া পাওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। তাই বাড়ি ভাড়া নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান শিক্ষার্থীরা।

করোনাভাইরাস কারণে সংকটে পড়েছে সারা দেশের মানুষ। এমনকি সরকার অর্থনৈতিক চাকা চালু রাখার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রণোদনা বাজেটও দিয়ে যাচ্ছেন। বড় বড় শিল্প কারখানা ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান সচল রাখার জন্য সরকারের সহায়তা নিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ। আর সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথীদের আর্থিক সহায়তা চাইলে মিসকিন ও এতিম বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্য মীজানুর রহমান। এতে বুঝা যায় শিক্ষার্থীদের প্রতি উনার আন্তরিকতা ও ভালোবাসা । দ্বিতীয় মেয়াদের সময় শেষ হয়ে আসায় উনার বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের প্রতি সুনজর নেই।

যেখানে শিক্ষক সমিতি সকল শিক্ষকদের ১দিনের বেতন দিয়ে শিক্ষার্থীদের অসচ্ছল ও অসহায় শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থেকেও একজন উপার্চায সহায়তা দূরে থাক শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই ধরনের বাজে মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না । বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সবোচ্চ কর্তৃপক্ষ হয়ে ছাত্রদের মিসকিন ও এতিম বলে কটুক্তি করা কোনভাবেই সমীচীন না। উনার এসব ন্যাক্কারজনক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আয়শা আফরিন লক্ষ্মীবাজার এলাকায় মেস ভাড়া নিয়ে থাকেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত মার্চ মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ দেয়ার পর গ্রামের বাড়ি চলে আসি। এরপর থেকে প্রতি মাসে বাড়িওয়ালা ভাড়ার জন্য ফোন দেয়। এনিয়ে দুই মাসের ভাড়াও পরিশোধ করেছি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে গত এক মাসের ভাড়া দিতে সমস্যায় পড়ি। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে ফোন দিলে উনি থানায় যোগাযোগ করতে বলেন।

অনেক কষ্টে থানায় যোগাযোগ করলে, ওনারা আমাকেই বাড়িওয়ালার সাথে কথা বলে মিউচুয়াল করতে বলেন। এরপর পুনরায় প্রক্টরকে ফোন দিলে উনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোনো বড় ভাইকে বলে সমাধান করতে। এই শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আমি প্রক্টর স্যার ও থানায় ফোন দিয়েছি। কোনো সহযোগিতা পাচ্ছিই না, উল্টো হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমাদের হল সুবিধা নেই, সে হিসেবে আমাদের সংকটকালীন সম্পূরক অর্থ সহায়তা দিতে পারে।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানকে মেসভাড়া বিষয়ে ফোন দেয়া হলে তিনি শুরুতেই বলেন, মেসভাড়া নিয়ে আমাকে কেউ কল দিবানা।

শিক্ষার্থীদের সমস্যা তাহলে কে সমাধান করবে এমন প্রশ্নের জবাবে ভিসি বলেন, তোমরা এতো মিসকিন, নিজেদের আত্মমর্যাদা পর্যন্ত নেই। আমি কি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম যে, দরিদ্রদের ভর্তি করা হয়। এটা কি দরিদ্রদের এতিমখানা, মাদ্রাসা? বিড়ি-সিগারেট, রিক্সা ভাড়া, বান্ধবীরে আইস্ক্রীম খাওয়ানো লাগতেছেনা। এসব টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেনা কেন?