দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনা ভাইরাসে সৃষ্ট মহামারিতে পুঁজিবাজারেও তারল্য সংকট তৈরী হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা) বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার ফলে বাজারের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। প্রস্তাবিত বাজেট ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার ফলে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। কারন বর্তমান বৈশ্বিক মহামারির কারণে লেনদেনে খড়া দেখা দিয়েছে। ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করার পরও সূচকের পতন হচ্ছে। বাজারে আস্থা ও তারল্য সংকট বিরাজ করছে। এই সংকট থেকে উত্তরণে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগে একদিকে লেনদেন বাড়বে, অন্যদিকে বাজারে আস্থার সঙ্কট কাটবে এবং দেশের অর্থনীতির উন্নতি হবে বলে তারা মনে করেন।

আরও পড়ুন…….  

পিরোজপুরে ধর্ষণ করতে গিয়ে ধরা, উলঙ্গ অবস্থায় পালিয়েছে মাসুম খান 

পুঁজিবাজারকে গতিশীল ও উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে ছয়টি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। পদক্ষেপগুলো হচ্ছে: পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বাড়ানো, মার্চেন্ট ব্যাংকার ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা পর্যালোচনা, আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়ানো, পুঁজিবাজারে আস্থা বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাজারে মানসম্পন্ন আইপিও বাড়াতে বহুজাতিক ও সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া। এছাড়া বন্ড মার্কেট শক্তিশালী করার জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে উৎসে কর সমন্বয় করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল।

আরও পড়ুন…….  

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে একটি শক্তিশালী বন্ড মার্কেট বিকাশের জন্য আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এর আলোকে বন্ড লেনদেন মূল্যের উপর উৎসে কর কর্তনের পরিবর্তে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক লেনদেনে নির্ধারিত কমিশনের উপর উৎসে কর কর্তনের প্রস্তাব করছি। এছাড়া বন্ডের সুদ ও বাট্টার উপর উৎসে কর কর্তনের বিধান বাতিল করে সুদ ও বাট্টা পরিশোধকালে উৎসে কর কর্তনের প্রস্তাব করছি। এতে পুঁজিবাজারে বন্ডের লেনদেন বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুন……. 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট হয়েছে পুঁজিবাজার বান্ধব। অনেক দিন থেকেই এমন একটি বাজেটের প্রত্যাশা করছিলাম। পুঁজিবাজারের জন্য বাজেটের সবচেয়ে বড় চমক হচ্ছে-বিনা প্রশ্নে পুঁজিবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগ করার সুযোগ দেওয়া। এ অর্থ পুঁজিবাজারে এলে তা বাজার সচল করতে সহায়ক হবে। কিছু শর্তসাপেক্ষে এ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সবাই যদি এই নিয়ম মেনে পুঁজিবাজারে আসেন, তাহলে বাজার এবং অর্থনীতি উভয়ের জন্যই ভালো হবে। অনেকেই এ সুযোগ গ্রহণ করবেন।

এবারের বাজেটে বন্ড লেনদেন মূল্যের ওপর উৎসে কর কর্তনের পরিবর্তে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক লেনদেনে নির্ধারিত কমিশনের ওপর উৎসে কর কর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি ভালো উদ্যোগ। এতে বন্ড মার্কেট সচল হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর এ মার্কেট সচল হলে পুঁজিবাজারও গতিশীল হবে।

আরও পড়ুন…….  

বাজেটে দ্বৈত কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। এটাও ভালো খবর। কারণ আগে এক আয়ের ওপর দু’বার কর দেওয়া লাগত, এখন সেটা হবে না। শুধু পুঁজিবাজারই নয়, এবারের বাজেট হয়েছে ব্যবসাবান্ধব। সবাই উপকৃত হবেন। বাজেটে ব্যবসায়ীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। এতে তারা কিছুটা হলেও করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন। কারণ করোনার জন্য সবকিছু বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরাও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাজেটে তাদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। সবকিছু মিলে বাজেট বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ কিন্তু অসম্ভব নয়।