দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বর্তমান করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তাদের কর্মকর্তাদের বেতন কাটার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সূত্র মতে, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নিশ্চিত করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর এক কর্মকর্তা জানান, পরিচালনা পর্ষদের একটি অংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ৭টি স্তরে ভাগ করে ৬টি স্তর থেকে বেতন কাটার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এতে করে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যারা ৫০ হাজার টাকার নিচে বেতন পান তাদের বেতন কাটা হবে না। তবে যারা ৫০ হাজার টাকার উপরে পান তাদের বেতনের পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে ৫-৩০% পর্যন্ত বেতন কাটার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

এর মধ্যে যাদের বেতন ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে তাদের ৫% কাটার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এছাড়া দেড় থেকে দুই লাখ টাকা বেতনের ক্ষেত্রে ১০%, দুই থেকে আড়াই লাখের ক্ষেত্রে ১৫%, আড়াই থেকে সাড়ে তিন লাখের ক্ষেত্রে ২০%, সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার লাখের ক্ষেত্রে ২৫% এবং সাড়ে চার লাখ টাকার উপরে হলে ৩০% বেতন কাটার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন…….  

পুঁজিবাজার ইস্যুতে সরকারের সাথে আলোচনা করবে বিএসইসি 

পুঁজিবাজারে সামান্য উত্থান হলেও লেনদেন বেড়েছে 

সিজিআইএ গ্লোবাল কাউন্সিলের সদস্য হলেন অধ্যাপক নিজামী 

তিনি আরো জানান, এজন্য স্বতন্ত্র পরিচালক সালমা নাসরিনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান, মুনতাকিম আশরাফ, অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুদ এবং ডিএসএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ছানাউল হক।

কমিটিকে কর্মীদের কাজের পরিমাণ ও দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিভাগভিত্তিক কী পরিমাণ মানবসম্পদ প্রয়োজন এবং কী পরিমাণ অতিরিক্ত বা ঘাটতি আছে তাও মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসইর এক পরিচালক বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে টানা ৬৬ দিন বাজার বন্ধ থাকার পর গত ৩১ মে থেকে লেনদেন চালু হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রতিদিন খুবই সীমিত টাকার লেনদেন হচ্ছে। এদিকে নিকুঞ্জের নতুন ভবনে যাওয়ায় অপচয় বাবদ ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। তাই অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, ২০১৯-২০ হিসাব বছরে ডিএসইকে লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ডিএসই এর মালিক শেয়ারহোল্ডাররা। কিন্তু শেয়ারহোল্ডার যেখানে ৫ শতাংশ লভ্যাংশ পাচ্ছেন না, সেখানে ডিএসইর অনেক কর্মকর্তা বছরের পর বছর অস্বাভাবিক বেতনসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন। এগুলো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসা উচিত। আমরা এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করেছি, কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’