ষ্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে গত ১৭ মে যোগদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা ও করোনার প্রভাবে নানামুখী সংকটে থাকা পুঁজিবাজারকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছেন তিনি। বিনিয়োগকারীদের সম্পদের নিরাপত্তা, ফ্লোর প্রাইস, আইপিওসহ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে কী পদক্ষেপ নেবেন, তা নিয়ে এসইসির চেয়ারম্যান কথা বলেছেন একটি সংবাদ মাধ্যমের সাথে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সংবাদটি তুলে ধরলাম:

রও পড়ুন…

দেশ প্রতিক্ষণ: বর্তমান বাজারে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও অর্থের নিরাপত্তার ইস্যুটি আলোচনায় রয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজের হাত থেকে বিনিয়োগকারীদের সম্পদের সুরক্ষায় আপনারা কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম: ব্রোকারদের এই ইস্যুটি এসইসির দায়িত্বের মধ্যে না, এটি স্টক এক্সচেঞ্জ দেখে। আমরা তাদের সহায়তা করি। স¤প্রতি ক্রেস্টের ঘটনার পর আমরা মনিটরিংয়ে রেখেছি। স্টক এক্সচেঞ্জ আমাদের হালনাগাদ তথ্য জানাচ্ছে। সিডিবিএলে সব শেয়ারের হিসাব-নিকাশ থাকে। কোনো শেয়ার কখনো ট্রান্সফার হলে সিডিবিএল থেকে এসএমএস চলে যায়।

রও পড়ুন…

ডিএসই শীর্ষ ৬ প্রভাবশালী বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের অভিযোগ! 

বিনিয়োগকারীরাও যে কোনো সময়ে অনলাইনে তাদের শেয়ার হোল্ডিং পজিশন দেখতে পান। ক্রেস্ট সিকিউরিটিজে যারা লেনদেন করেন তারা নিশ্চয় নিজেদের টাকা-পয়সার খোঁজখবর রাখেন, সতর্ক থাকবেন। অন্য কোনো ব্যক্তিগত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেস্টের মালিক পালিয়ে গিয়েছিলেন, পরে আটকও হয়েছেন। স্টক এক্সচেঞ্জের এমডির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ যেসব জায়গায় তাদের সহযোগিতা প্রয়োজন আমরা দিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়ে কোম্পানি ও ব্যক্তিগত সব ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক হিসাবে দেখা গেছে, ক্রেস্টের ঘটনায় আমাদের বিনিয়োগকারীদের কোনো ক্ষতি হবে না।

দেশ প্রতিক্ষণ: ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি?
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : এজন্য আমরা স্টক এক্সচেঞ্জ ও সিডিবিএলকে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে বলেছি, যাতে বিনিয়োগকারীরা অনলাইনে তাদের শেয়ারহোল্ডিং পজিশন নিয়মিতভাবে চেক করেন। অসংগতির তথ্য আমাদের জানালে আমরা দ্রæত ব্যবস্থা নিতে পারব। কোনো শেয়ার হস্তান্তর হলে এসএমএস আসার কথা। তাই আমরা বিনিয়োগকারীদের বলি যে, এসএমএস ও কেওয়াইসিতে দেওয়া মোবাইল নম্বর যাতে ঠিক থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের কিন্তু পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে এগুলো চেক করার। কিন্তু যার টাকা তাকেও সতর্ক থাকতে হবে।

দেশ প্রতিক্ষণ: ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর থেকে অনেক শেয়ারে লেনদেন হচ্ছে না, জরুরি প্রয়োজনেও বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না। বিদেশি ও স্থানীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার পক্ষে। আবার করোনা পরিস্থিতিতে ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলেও বড় দরপতনের শঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কী করবে এসইসি?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : করোনা পরিস্থিতিতে সবাই নিজেদের সঞ্চয় ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে খুব শঙ্কিত। যদিও এখন মানুষ নিজের জীবন রক্ষাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তারা সঞ্চয়, বিনিয়োগ যা আছে সেটা তাদের বিপদ আপদের জন্য রাখার চেষ্টা করছেন। এই সময়ে বিনিয়োগকারীদের যতটুকু অংশগ্রহণ আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা দিনে দিনে বাড়ছে এবং এটা খুব আশাব্যঞ্জক। আপনারা নিশ্চয় খেয়াল করেছেন গত কয়েকদিনে তাদের অংশগ্রহণ বেড়েছে, আস্থাও বাড়ছে। যে পরিস্থিতিতে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়েছে, তা কিন্তু আমরা করিনি।

সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। যে পর্যায়ে গিয়ে ফ্লোর প্রাইসের বিষয়টি আসে সেই পরিস্থিতির যদি কিছুটা উন্নতি হয়, মানে চাহিদায় উন্নতি হয় তাহলে ফ্লোর প্রাইস থাকবে না। পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার ও আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা যে সিদ্ধান্তটি নেব, আপনি থাকলেও হয়তো ওই সময়ে একই সিদ্ধান্ত নিতেন। আমাদের বাজারের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একদম ভিন্ন, যেটা নিয়ে সরকার কাজ করছে। বিদেশে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী থাকে ৮০ শতাংশ আর সাধারণ বিনিয়োগকারী থাকেন ২০ শতাংশ। কিন্তু আমাদের এখানে ঠিক উল্টো। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে আমাকে ৮০ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীকে সুরক্ষার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়, না হলে অনেকের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

দেশ প্রতিক্ষণ: ফ্লোর প্রাইসের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ ঘোষণার জন্য অনেকেই অভিমত দিচ্ছেন।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : সেটা আমরা করতে পারি না। এখন কথার কথা, যদি সূচক দ্রæত বাড়তে থাকে তখন তো বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের ঠিক হবে না। মার্কেটকে ফ্রি-ফ্লো করতে দিতে হবে। এখন যদি আমি বলি যে, ফ্লোর প্রাইস এক বছর থাকবে। আর বাজার যদি তিন মাস পর সূচক পাঁচ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করে তখন সেটা আমি কেন রাখব। এটা বরঞ্চ খারাপ হবে। বরং কভিড যতদিন আছে ততদিন আমরা দেখি।

দেশ প্রতিক্ষণ: আগের কমিশন ডিসক্লোজার বেইজ পদ্ধতিতে আইপিওর অনুমোদন দিত। এক্ষেত্রে তথ্যের সত্যতার দায়দায়িত্ব ইস্যুয়ার ও ইস্যু ম্যানেজারের ওপর বর্তায়। কিন্তু আইপিওর ক্ষেত্রে তথ্যের ঘাটতি ও মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হলেও ইস্যুয়ার ও ইস্যু ম্যানেজারদের উল্লেখযোগ্য কোনো শাস্তি হয়নি। এতে বাজারে একদিকে যেমন দুর্বল আইপিও এসেছে অন্যদিকে কমিশনও আইপিও অনুমোদন দিয়ে সবচেয়ে বেশি বিতর্কের মধ্যে পড়েছে। আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে বাস্তব পরিদর্শনের ব্যবস্থা রাখার চিন্তাভাবনা রয়েছে কিনা?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : আইপিওর ক্ষেত্রে আমাদের ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন বা বাস্তব পরিদর্শনের কোনো আইন নেই। এজন্য ট্রাস্টি, ইস্যু ম্যানেজার রয়েছে। তারাই ডিউডিলিজেন্স সার্টিফিকেশন দেয়। তবে পরিদর্শনের গুরুত্ব রয়েছে। এজন্য আমরা ইনফরমালি খোঁজখবর নিচ্ছি। অন্যরাও কোম্পানির জমি, বিল্ডিং, উৎপাদন ইত্যাদির তথ্য ও ছবি দিয়ে সহযোগিতা করছেন। আগামীতে আমরা এটা ইনকরপোরেট করব। মিথ্যা তথ্য ও অসংগতির কারণে আমরা গত তিন মিটিংয়ে ২৬টি কোম্পানিকে জরিমানা ও সতর্ক করেছি। অ্যাকাউন্টিংয়ে যারা উল্টোপাল্টা করে তাদেরও জরিমানা করেছি। এসব বিষয়ে আমরা কঠোর থাকব, যাতে ডিসক্লোজারের বিষয়ে কেউ ভুল তথ্য দিয়ে পার পেতে না পারে।

দেশ প্রতিক্ষণ: আইপিওতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন। প্যানেলভুক্ত প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিরীক্ষা করার পরও তাতে আস্থা রাখতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা আনতে এফআরসির সহায়তা নেওয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন অনেকেই।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : আমরা এফআরসিকে (ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল) গুরুত্ব দিয়ে আমাদের সঙ্গে যুক্ত (ইনভলব) করছি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে যে, এখন থেকে এফআরসি, আইসিএবি অথবা নির্ভরযোগ্য অন্য কোনো নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইটে কোম্পানির ব্যালেন্সশিটের তথ্য থাকবে, যেটা আমরা তিন প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করব। এতে করে সুবিধা নেওয়ার জন্য কোম্পানি আলাদা প্রতিবেদন দিলেও আমরা তা গ্রহণ করব না। এক্ষেত্রে এফআরসি বড় ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও অ্যাকাউন্টিং ও ডিসক্লোজার সংক্রান্ত ইস্যুগুলোতে এফআরসির কাছ থেকে আরও বেশি সহায়তা নেওয়া হবে।

দেশ প্রতিক্ষণ: আইপিও আবেদনের সময় কোম্পানি যে আয় দেখায় তালিকাভুক্তির দুই তিন বছর পরই তা আর ধরে রাখতে পারছে না। এমনটি হলে এসইসি কিংবা স্টক এক্সচেঞ্জ তা খতিয়ে দেখতে পারে কিনা?
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : এটা শুধু আমাদের দেশেই নয় বিশে^র প্রায় সব দেশেই এ সমস্যা রয়েছে। আপনি যদি খোঁজ নেন, তাহলে দেখতে পাবেন এখন যুক্তরাষ্ট্রে কতগুলো কোম্পানি দেউলিয়া ঘোষণার জন্য ফাইল করেছে। একটা ব্যবসা কখন ভালো করবে কখন খারাপ করবে তা বলা যায় না। এনরনের মতো বিশে^র একটি বড় করপোরেট কোম্পানি, ৬০০ বিলিয়ন ডলার যাদের সম্পদ, সেটি মাত্র দুই দিনে বন্ধ হয়ে গেছে, যা কখনো কেউ চিন্তাও করতে পারেনি। একটা আইপিও বাজারে এলে সেখানে বিনিয়োগ করব কি করব না, সেখানে বিনিয়োগকারীদেরও বিচার-বিশ্লেষণ থাকা উচিত। যদিও আমরা দেখে দিচ্ছি। আর আমরা দেওয়ার সময়ও কোম্পানির ট্র্যাক রেকর্ড দেখেই অনুমোদন দেব। আমরা নতুন কোম্পানির অনুমোদন এখন দিচ্ছি না। আপনারা যদি খেয়াল করেন, তাহলে দেখবেন আগের কমিশনের প্রসেস করা ছিল তারপরও আমরা দেখে দিয়েছি ওয়ালটন। একই ভাবে একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিরও আইপিওর অনুমোদন দিয়েছি। সামনে যে দুই তিনটা আইপিও আছে সেগুলোর প্রতিটাই পুরনো কোম্পানি, যাদের ব্যবসা সুনামের সঙ্গে ন্যূনতম ১০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে।

দেশ প্রতিক্ষণ: অন্যান্য দেশের তুলনায় এখানে আইপিও অনুমোদন থেকে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত পর্যন্ত প্রক্রিয়ায় অনেক বেশি সময় নেওয়া হচ্ছে। সময় কমিয়ে আনার কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। সিআইবির যে সময়টা লাগে তা এখন আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনলাইনে ই-মেইলের মাধ্যমে সম্পন্ন করছি। এর ফলে সিআইবি চেকিং খুব তাড়াতাড়ি হবে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও আমরা সময় কমাচ্ছি। আইপিও আমরা এখন খুব অল্প সময়েই দিয়ে দিতে পারি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে কোম্পানিও জবাব দিতে দেরি করে। এজন্য আমরা অনলাইনে আবেদন নিচ্ছি। এটা আগামী মাসে হয়তো হয়ে যাবে। অনলাইনে সবকিছু ঠিকমতো না দেওয়া পর্যন্ত সাবমিশনই করতে পারবে না। আমরা যখন দেখি চাহিদায় উন্নতি হচ্ছে না তখন সরবরাহে চাপ দিলে মার্কেটের ক্ষতি হয়। তাই চাহিদা-সরবরাহ বিবেচনায় নিয়ে আইপিওর অনুমোদন দেওয়া হবে। এজন্য আমাদের ডিমান্ড সাইড ইমপ্রুভ করতে হবে, বাজারে আরও ক্যাপিটাল আসতে হবে। বন্ডগুলোর ট্রেডিং শুরু হলে দেখবেন বাজার মূলধন বেড়ে যাবে, ইনডেক্স ওপরে ওঠা শুরু হবে।

দেশ প্রতিক্ষণ: বেসরকারি খাতের ব্র্যান্ডভ্যালুর কোম্পানি আনতে আপনারা কী পদক্ষেপ নেবেন?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : ভালো কোম্পানি আনার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু অসুবিধা রয়েছে। যেমন বড় কোম্পানি বিশেষ করে বহুজাতিক কোম্পানি বিদেশ থেকে স্বল্প সুদে ঋণ নিতে পারে। তারা কেন আমাদের পুঁজিবাজারে আসবে। তাদের এই বাজার থেকে টাকা সংগ্রহের কোনো ইচ্ছাই নেই। তাদের আকৃষ্ট করতে আমাদের যেটা করতে হবে, তা হলো কর সুবিধা। কিন্তু এবারের বাজেটে সেটা কমে গেছে। তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে কর ব্যবধানের সুবিধা ১০ শতাংশ থেকে কমে সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এটা নিয়ে আমি এনবিআরের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে তালিকাভুক্ত হলে কর সুবিধা আগের চেয়ে আরও বেশি হয়। কারণ তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানিকে অনেক ধরনের কমপ্লায়েন্স পরিপালন করতে হয়। আর এটা করতে গিয়ে কোম্পানির খরচ ৩-৪ শতাংশ বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে তালিকাভুক্তিতে দেওয়া কর সুবিধায় পোষায় না। যদি কমপ্লায়েন্স পরিপালন ব্যয়সহ ১০ শতাংশ কর সুবিধা দেওয়া যায়, তাহলে কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসবে।

দেশ প্রতিক্ষণ: ২০১০ সালের বাজার ধসের পর সবচেয়ে বেশি সংকট ছিল বিনিয়োগকারীদের আস্থায়। আস্থা ফেরাতে আপনারা কী উদ্যোগ নেবেন?

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম : মানুষের আস্থা আসে বিশ^াস থেকে। আমরা চেষ্টা করছি সুশাসন (বেটার গর্ভনেন্স) দেওয়ার জন্য। গভর্নেন্সের মাধমে যেখানে এনফোর্সমেন্ট দরকার তা দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসা সহজীকরণ আমরা আরও সহজ করে দিচ্ছি। একমাসের মধ্যেই অনলাইনে সাবমিশনসহ অনেক কিছু করেছি। ইতিমধ্যেই আমরা কাস্টোডিয়ান সার্ভিস, ক্রেডিট রেটিং সার্ভিস অনলাইনে চালু করেছি। আইপিও সাবমিশন, প্রসপেক্টাস, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরসহ আগামীতে সবকিছু অনলাইন ভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে। আপনি ক্রাইটেরিয়া পূরণ না করলে আবেদনই করতে পারবেন না। আমরা চাই না মানুষকে আর কষ্ট দিতে। আমরা চাই ২০২২ সালের মধ্যে অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই ২৪ ঘণ্টা আপনি ক্যাপিটাল মার্কেটের যে কোনো সুবিধা নিতে পারবেন। এজন্য আমরা ডিজিটাল কনসালটেন্ট নিয়োগ দিচ্ছি, যিনি খুব শিগগিরই আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। সুত্র: দেশ রুপান্তর