ষ্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্টের ভবিষ্যত নিয়ে দু:চিন্তায় বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীদের টাকায় ব্যবসা করলেও সমাপ্ত অর্থবছর শেষে কোম্পানিটি নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে। একই সাথে কোম্পানিটির মুনাফায় ধস নেমেছে।

রও পড়ুন…

বুধবার ব্লক মার্কেটে নতুন ৩ কোম্পানির চমক 

এছাড়া কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ব্যর্থতা, যোগ্য নেতৃত্বের অভাব, প্রাতিষ্ঠানিক অদক্ষতা, হিসাব সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় ত্রুটি ও আর্থিক অপব্যবস্থাপনায় এখন ডুবতে বসেছে কোম্পানিটি। এদিকে সিমেন্টের অত্যাবশ্যকীয় কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর সমন্বয়ের সুযোগ না থাকায় ২০১৯ হিসাব বছরে লোকসান গুনতে হয়েছে সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডকে। যদিও আগের বছরের তুলনায় ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে।

রও পড়ুন…

ফ্লোর প্রাইস নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির অবকাশ নেই: অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত 

পৃথিবীর একমাত্র পুঁজিবাজারে শেয়ারের দর বাড়লেই তদন্ত! 

পুঁজিবাজারে এখন বিনিয়োগের সঠিক সময়, লেনদেনে চমক আসছে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

এদিকে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট লিমিটেড গত (জানুয়ারী-জুন, ২০২০) সময়ের অর্ধ বার্ষিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্র মতে, (জানুয়ারী-জুন, ২০২০) অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুসারে চলতি হিসাববছরের ৬ মাসে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৫৪ পয়সা। আগের বছর একই প্রান্তিকে ইপিএস ছিল ২ টাকা ৬৯ পয়সা। (এপ্রিল-জুন, ২০২০) দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৩ টাকা ৩১ পয়সা। আগের বছর একই প্রান্তিকে ইপিএস ছিল ৭২ পয়সা।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরে হাইডেলবার্গ ১ হাজার ১৯৮ কোটি টাকার সিমেন্ট বিক্রি করেছে, যেখানে এর আগের বছর বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকার। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির গ্রস মুনাফা হয়েছে ১২২ কোটি টাকা, যা এর আগের বছরে ছিল ১৯৩ কোটি টাকা। কর পরিশোধের পর ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির ১৮ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে, যেখানে এর আগের বছরে মুনাফা ছিল ৮০ কোটি টাকা।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৩০ পয়সা, যেখানে আগের বছর ইপিএস ছিল ১৪ টাকা ৩৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৭১ টাকা ৮৮ পয়সা, যা এর আগের বছরে ছিল ৮২ টাকা ৬৮ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফএস) হয়েছে ৪ টাকা ৬৫ পয়সা, যা আগের বছরে ছিল ১১ টাকা ৩১ পয়সা।

আগামী ২৪ জুন বেলা ১১টায় কোম্পানিটির নারায়ণগঞ্জের কারখানায় বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুুষ্ঠিত হবে। বিনিয়োগকারী বাছাইয়ের জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ মে। ২০১৮ হিসাব বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এর আগে ২০১৭ সালে ১৫০ শতাংশ, ২০১৬ সালে ৩০০ শতাংশ, ২০১৫ সালে ৩০০ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৩৮০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।

১৯৮৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫৬ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৪১০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। মোট শেয়ারের ৬০ দশমিক ৬৭ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ২৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ১ দশমিক ১১ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ১২ দশমিক ২২ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।