দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, পুঁজিবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কমশিন কাজ করছে। আমরা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাজ থেকে কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা না পেলেও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পাচ্ছি। আমাদের মার্কেটে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ খুবই প্রয়োজন। তার জন্য অর্থমন্ত্রী, অর্থ সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শুধুমাত্র সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ না করে আপনারা প্রাইমারি মার্কেটে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করুন।

সোমবার (০৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার ধারন না করার জন্য এরই মধ্যে ১৭ জন পরিচালককে অপসারন করা হয়েছে। আর উদ্যোক্তা/পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ারধারনের আল্টিমেটাম দেওয়া সময় শেষের দিকে। এক্ষেত্রেও কঠোর অবস্থান নেবে কমিশন। কারন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করাই আমাদের দায়িত্ব। আমরা এই মার্কেটটাকে শক্তিশালী মার্কেটে রুপান্তর করতে চাই।

রও পড়ুন..

পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা উচ্চ সুদের কারণে অস্বস্তিতে

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরি করার কাজ হচ্ছে: শিবলী রুবাইয়াত

আজকের অনুষ্ঠানে গেম্বলিং নিয়ে অনেকে কথা বলেছেন উল্লেখ করে শিবলী রুবাইয়াত বলেন, আমরাও অনেক আগে থেকেই গেম্বলিং শব্দটি শুনে আসছি। আসলে এই জিনিসটি সেকেন্ডারি মার্কেট থেকেই শুনে আসছি। ইক্যুইটিভিত্তিক মার্কেটের কারনে সেকেন্ডোরি মার্কেটে গেম্বলিং হয়। তবে বন্ড, ডেরিভিটিবসসহ মার্কেটটাকে সত্যিকার অর্থে বড় করতে পারলে, আজ আমাদেরকে সেকেন্ডারি মার্কেট নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হতো না।

তিনি বলেন, এরইমধ্যে আমরা ৬-৭ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন বন্ডের অনুমোদন দিয়েছি। সেখানে ভালো কোম্পানির বন্ড দেওয়া হয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, প্রাণ, আমরার মতো কোম্পানিকে বন্ড অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সামনে আরও ভালো ভালো কোম্পানিকে নিয়ে আসা হবে। এছাড়া ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য সুকুক বন্ড আনার কাজ করছি। সুতরাং ক্রমানয়ে বন্ড মার্কেটটি খুব ইন্টারেস্টিং হয়ে যাবে।

বিএসইসির এই চেয়ারম্যান বলেন, ভালো ভালো কোম্পানিকে দ্রুত আইপিও দিয়ে দেব। আমাদেরকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়িদের দিক বিবেচনা করতে হবে। যারা ব্যবসা করতে আসেন, তাদের যদি আইপিও দেওয়া বন্ধ করে দেই, তাহলে তারা যাবে কোথায়। তাহলে আবার ব্যাংকে যেতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিতে হবে। এতে করে ঋণখেলাপির সংখ্যা বাড়বে। একইসঙ্গে অনেক কোম্পানি বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হবে।

শেয়ারবাজার বিনিয়োগের ভালো মাধ্যম বলে আশ্বস্ত করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। তাই এখানে বিনিয়োগের আহবান করেছেন তিনি। শুধু সেকেন্ডারি মার্কেট তাকিয়ে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রাইমারি মার্কেটে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য বলেছেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শক হুসাইন সামাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও অধ্যাপক আবু আহমেদ। এতে বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম, কমিশনার ড. মিজানুর রহমান, কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও কমিশনার খোন্দকার কামালউজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। আর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএসইসির পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।