দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার আসছে অবকাঠামো নির্মাণ প্রতিষ্ঠান মীর আখতার হোসেন লিমিটেড কোম্পানিটি আইপিওর মাধ্যমে বাজার থেকে ১২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। ইতোমধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত কোটার শেয়ার বিক্রি করার জন্য নিলাম প্রস্তাব জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (৭ অক্টোবর) বিকাল ৫টা পর্যন্ত এই নিলাম চলবে।

রও পড়ুন..

পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা উচ্চ সুদের কারণে অস্বস্তিতে

ডিএসইর ট্রেক ৫ কোটি টাকা, জামানত ৩ কোটি

পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করা অর্থ সরঞ্জামাদি ও যন্ত্রপাতি কেনাসহ ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে কোম্পানিটি। মীর আখতার হোসেন লিমিটেড দেশের অন্যতম শীর্ষ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান। ১৯৬৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই কোম্পানি মিরপুরে ১ হাজার ৮৮৪ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভার, রেডিসন ওয়াটার ব্লু হোটেল, টঙ্গী ফ্লাইওভার, তৃতীয় বুড়িগঙ্গা সেতু, বসুন্ধরায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভর্সিটি বাংলাদেশের ক্যাম্পাসসহ ২২ বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করেছে।

বর্তমানে কোম্পানিটি চট্টগ্রামে শাহ আমানত বিমানবন্দরের উন্নয়ন, সিলেটে ওসমানী বিমানবন্দর উন্নয়ন, কক্সবাজার বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ কাজসহ ৩৪টি বড় অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে। চলমান প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ৫ হাজার ৭৬১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এগুলো বাস্তবায়ন হলে-নতুন করে আরও বড় অবকাঠামো নির্মানের সুযোগ আসবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে গত পাঁচ বছরের এই কোম্পানির মুনাফায় টানা প্রবৃদ্ধি হয়েছে। দিনদিন ব্যবসা সম্প্রসারণ হচ্ছে। আর তাতে পাঁচ বছরে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয়ও (ইপিএস) বেড়ে প্রায় দেড়গুণ হয়েছে।

২০১৯ সালের জুন সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মীর আখতারের মুনাফা হয়েছে ৩৯রকোটি ৫৩ লাখ ৩ হাজার ৪৭১রটাকা। এর আগের বছরে অর্থাৎ ২০১৫-১৬ মুনাফা হয়েছে ৫০রকোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার ১৬০রটাকা। এর আগের বছর ১৬-১৭ সালে হয়েছে ৫২রকোটি ৯১ লাখ ২৫ হাজার ৫৫৫ টাকা। ২০১৭-১৮ সালে ৬১ কোটি ৮৭ লাখ ৭৩ হাজারর ৯৬৫টাকা এবং ২০১৮-১৯ সালে মুনাফা হয়েছে ৬৩ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫৭ টাকা।

প্রসপেক্টাস অনুসারে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মীর আখতার হোসেন লিমিটেডের শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস ছিল ৬ টাকা ৩২ পয়সা। পাঁচ বছর আগে তথা ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৯৫ পয়সা। পরের বছর এটি বেড়ে হয় ৫ টাকা ২ য়সা। তার পরের দুই বছরে ইপিএস ছিল যথাক্রমে ৫ টাকা ২৯ পয়সা ও ৬ টাকা ১৯ পয়সা।

সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসায় গ্রহকদের কাছে আস্থা অর্জনকারী এই কোম্পানির এখন নিজস্ব জমিসহ ৩৯৭ কোটি ৬ লাখ ২২ হাজার টাকা সম্পদে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে সম্পদ রয়েছে ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার। প্ল্যান্ট অ্যান্ড মেশিনারি রয়েছে ৫১কোটি টাকার। এছাড়াও স্পেস, এবং অফিস প্রতিষ্ঠানের সম্পদের পরিমাণ ৩৯৭কোটি ৬ লাখ ২২ হাজার টাকা। গত ৩০ জুন, ২০১৯ তারিখে পুনর্মূল্যায়ন সঞ্চিতি ছাড়া কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য বা এনএভিপিএস ছিল ৩৩ টাকা ৬৩ পয়সা।

কোম্পানিটির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১০ কোটি। কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দুই পরিচালক ৫৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৮ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর নাসির হোসেন। চেয়ারম্যান সোহেলা হোসেনের কাছে আছে ১৫ শতাংশ শেয়ার। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড।