দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, শেয়ারের দাম বাড়ানো কমানো বিএসইসির কাজ না।বাজারে ত্রুটি থাকলে বিএসইসি সেটা ধরে সংশোধনের কাজ করতে পারে। বাজার কেনা-বেচার বেপারে দায়ী করলে আমাদের কোনোকিছু করার নাই। আমরা ব্যবসা কিংবা কেনা-বেচা করি না।

রও পড়ুন..

ডিএসইর ট্রেক ৫ কোটি টাকা, জামানত ৩ কোটি

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে বিভিন্ন সেক্টরের দাম বৃদ্ধি পাওয়া ও কমার বিষয় নিয়ে অনেকেই আমাদের ফোন করেন, ফেসবুকে লেখেন, ই-মেইল করেন, চিঠি লেখেন। জানতে চান, এই সেক্টর কেন বাড়ছে, ওই সেক্টর কেন কমছে। সত্যিকার অর্থে আমরা যদি কেনা-বেচার দিকে নজর দিতে যাই তাহলে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে শান্তি পাওয়া যাবে না।

মঙ্গলবার (০৬ অক্টোবর) ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ উপলক্ষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মো: ইউনুসুর রহমান ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএফও আব্দুল মতিন পাটোয়ারি।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, আমাদের কমিশনে দায়িত্ব নেওয়ার বয়স মাত্র ৪ মাস। আমাদেরকে আপনারা (বিনিয়োগকারী) একটু সময় দেন। আমরা আগামি ১ বছরের মধ্যে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেওয়ার চেষ্টা করব। আর ২ বছরের মধ্যে মডার্ন ক্যাপিটাল মার্কেটের ছায়া দেখতে পাবেন। এছাড়া ৩ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ বাজারের একটি রুপ পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বিনিয়োগকারীরা আমাদের শেয়ারবাজারের প্রাণ। তারা না থাকলে পুজিঁ আসত না। তাহলে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও আসত না। আমাদের কথার উপর বিশ্বাস করে তারা টাকা পয়সা এনে বিনিয়োগ করেন। তাদের বিনিয়োগকে দুষ্চিন্তামুক্ত রাখতে ও সঠিক ব্যবহারের জন্য আমাদেরকে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, লেনদেন ১ হাজার কোটির আশেপাশে ঘোরপাক খাচ্ছে। তবে এটাকে এবছরের মধ্যে দেড় হাজারে নিয়ে যেতে হবে। এজন্য ডিএসইর আইটি বিভাগের সমস্যা সমাধান করতে হবে। তাদের আইটির কারনে মাঝেমধ্যেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মাঝেমধ্যেই ওয়েবসাইট দেখা যায় না।

এফডিআরের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা শেয়ারবাজারে চলে আসবে বলে জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান। কারন মানুষ যখন দেখবে এফডিআর এর ৫-৬ শতাংশের থেকে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে ১০ শতাংশ রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে, তখন তারা এদিকে ঝুঁকবে। যাতে করে সামনে বাজারে লেনদেন অনেক বেড়ে যাবে। এজন্য মিউচ্যুয়াল ফান্ডে সুশাষন আনতে হবে। এ খাতটি আগামিতে ভালোভাবে চলার জন্য কাজ শুরু করছি।

তিনি বলেন, ‘জেড’ ক্যাটাগরির সব কোম্পানির সঙ্গে আমাদের কমিশন পৃথকভাবে মিটিং করেছে। কেউ কেউ ‘জেড’ থেকে বেরিয়ে এসেছে। আগামি ৩ মাসের মধ্যে অনেকেই বেরিয়ে আসবে। যৌথভাবে আলোচনার কারনে অনেকে বেরিয়ে আসছে। তবে ৫-৬টি কোম্পানির অবস্থা বেশি ভালো ছিল না। এগুলোর জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে। এই কাজ শেষে ওটিসি মার্কেট নিয়ে বসব। সেখান বের করে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করব।

কোম্পানি আইন পরিবর্তন করে বাই ব্যাক আইন করবেন বলে জানিয়েছেন শিবলী রুবাইয়াত। তবে এরইমধ্যে ৫টি কোম্পানি ও ২টি ডিবেঞ্চার ডিলিষ্টিং করার কথা স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়ে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। এই ডিবেঞ্চার ২টি ২০-২৫ বছরের পুরোনো। এতে বিনিয়োগকারীদের টাকা আটকে ছিল। আমরা এসে সেগুলো খুজে ৫৭ কোটি টাকা আদায়ের চেষ্টা করে দিয়েছি।

তিনি বলেন, আইসিবি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছে না। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজমেন্টের ভেতরে বেশ কিছু ঘাটতি দেখতে পেয়েছি। এ নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত। এই সমস্যা কাটিয়ে আইসিবিকে দ্রুত পূর্ণগঠন করা হবে। আগামি ২ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে সরকারের কাছে সবকিছু তুলে ধরব।