দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বন্ডের লেনদেন ত্বরান্বিত করা, ব্রোকারেজ-মার্চেন্ট ব্যাংকের বিদেশে ডিজিটাল আউটলেট অনুমোদন, তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ‘জেড’ ক্যাটেগরি থেকে বের করে আনা ও ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা চাইলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সহযোগিতা চাওয়া হয়।

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠক শেষে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফ করেন বিএসইসি কমিশনার মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো তার পরিশোধিত মূলধনের ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু অনেক ব্যাংক নির্ধারিত সীমায় বিনিয়োগ আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

এছাড়া ব্যাংকগুলো বিশেষ তহবিল গঠন করেছিল ২০০ কোটি টাকার। অনেক ব্যাংকই এখনও তাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। যে উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এ তহবিল গঠন করার অনুমতি দিয়েছে, তা ব্যাহত হচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করেছি ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে তাগাদা দিতে।

কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর শেয়ারবাজারের উন্নয়নে কমিশনকে সহযোগিতা করতে খুবই আন্তরিক। তাদের সঙ্গে আমরা যেকোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারছি। এখন নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে সমন্বয় করে কাজ হচ্ছে। এতে করে কোন কিছু আর এখন ঝুলে নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সহযোগিতায় আমরা খুশি।

তিনি বলেন, আজকে আমরা শেয়ারবাজারের জন্য ফান্ড নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন এই ফান্ড সংগ্রহ ও ব্যবহারের টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে শীঘ্রই বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আবার মিলিত হব। এখন আমাদেরকে ফান্ড নেওয়ার উপায় ও যথার্থ ব্যবহারের রাস্তা খুজে বের করতে হবে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান ও মার্চেন্টগুলো বিদেশে ডিজিটাল আউটলেট খুলতে চায়। ডিজিটাল আউটলেট খুলতে পারলে বিদেশি বিনিয়োগ আনা যাবে। বিদ্যমান ফরেন এক্সচেঞ্জ নীতিমালা অনুযায়ী এটি সম্ভব। এ বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়।

এছাড়া মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসের পুঁজি স্বল্পতার বিষয়ে আলোচনা হয়। তাদের জন্য স্বল্প সুদে সহজ ঋণের ব্যবস্থা করতে গভর্নরের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের পুঁজি ঋণাত্মক হয়ে গেছে। তাদের এখান থেকে বের করে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুল আলম জানান, বিএসইসির পক্ষ থেকে আইসিবির মাধ্যমে সম্ভাব্য ঋণ তহবিলের পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা বলা হয়েছে। এই ঋণ তহবিল অনুমোদিত হলে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলো বাজারে আরও সক্রিয় হতে পারবে।

মাহবুবুল আলম আরও জানান, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে আছে, তাদের উন্নয়নে কী ধরনের ভূমিকা নেওয়া যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। এর বাইরে ট্রেজারি ও করপোরেট বন্ড নিয়েও আলোচনা হয়। অল্টারনেটিভ বিনিয়োগ হিসেবে বন্ডের লেনদেন দ্রুত করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হয়।

জানা গেছে, বিএসইসির পক্ষ থেকে দাবিকৃত বিষয়গুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।