দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সম্প্রতি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ খাতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। বোনাস শেয়ারের মাধ্যমে কোম্পানির যে পরিমাণ মূলধন বাড়বে তা নির্মাণাধীন নতুন ইউনিট ও নভেল করোনা ভাইরাসের কাজে ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যানুসারে বর্তমানে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মোট শেয়ার সংখ্যা ৪০ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪৫টি। ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণার কারণে কোম্পানিটির ৪ কোটি ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৬৪৪টি শেয়ার বাড়বে। এতে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনে ৪০ কোটি ৫৫ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪০ টাকা বাড়বে।

কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, এ অর্থের কিছু অংশ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের নির্মাণাধীন নতুন ইউনিটে ব্যয় করা হবে। কোম্পানিটির বিদ্যমান কারখানায় ৬ লাখ বর্গফুটের ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনে নতুন এ ইউনিটটি স্থাপনের কাজ চলছে। এতে বিনিয়োগ করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। নতুন ইউনিটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কভিড-১৯ এর কারণে বিদেশী প্রকৌশলীরা এসে যন্ত্রপাতি স্থাপন করতে না পারার কারণে ইউনিটটি এখনো চালু করা সম্ভব হয় নি।

এখানে সলিড, সেমি সলিড, লিকুইড, ক্রীম ও অয়েনমেন্ট উত্পাদন করা হবে। বছরে ৫০০ কোটি ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল, ১৩ কোটি বোতল এবং সেমি সলিড পণ্যের জন্য ৭ কোটি টিউবস উত্পাদনের সক্ষমতা রয়েছে ইউনিটটির। এখানে উত্পাদিত ওষুধ স্থানীয় বাজারের বিক্রির পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা হবে।

তাছাড়া এ বছরের আগস্টে অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আনতে সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের (এসআইআই) সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা দেয় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। ভ্যাকসিনটির উন্নয়নে ভারতের সেরাম ইনস্টিউটের সঙ্গে যৌথভাবে বিনিয়োগ করবে বেক্সিমকো। এখাতেও বোনাস শেয়ারের কিছু অর্থ বিনিয়োগ করা হবে।

সম্প্রতি প্রকাশিত বার্ষিক আর্থিক ফলাফল অনুসারে, ২০১৯-২০ হিসাব বছরে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের কর পরবর্তী সমন্বিত মুনাফা হয়েছে ৩৫৪ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের হিসাব বছরে মুনাফা হয়েছিল ৩০৪ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮ টাকা ৬৭ পয়সা।

যেখানে এর আগের হিসাব বছরে ইপিএস ছিল ৭ টাকা ৪৮ পয়সা। ৩০ জুন ২০২০ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা ১২ পয়সায়। ঘোষিত লভ্যাংশ ও অন্যান্য এজেন্ডা অনুমোদনের জন্য এ বছরের ১৯ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০ টায় ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা(এজিএম) আহ্বান করা হয়েছে। এজন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ নভেম্বর।

এর আগে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে আসা কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৪০৫ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ২ হাজার ২৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রতিষ্ঠান ৩১ দশমিক ৪১, বিদেশী ৩৩ দশমিক ৬১ ও বাকি ২১ দশমিক ৭৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

সর্বশেষ ডিএসইতে গতকাল বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার ১২৬ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৫২ টাকা ১০ পয়সা ও সর্বোচ্চ দর ১২৭ টাকা ৭০ পয়সা।