দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আসে ওয়ালটন হাইটেক কোম্পানি লিমিটেড। এই পদ্ধতিতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যারা কোম্পানিটির শেয়ারে সর্বোচ্চ দর প্রস্তাব করেছে, তাদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়া এনার্জি প্যাকের টপ বিডারদের কাছেও ব্যাখ্যা চেয়েছে কমিশন।

ওয়ালটনের টপ বিডারদের মধ্যে সবার প্রথমে ছিল ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড। তারা ৭৬৫ টাকা দর প্রস্তাব করে। সর্বোচ্চ দাম প্রস্তাব করলেও ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ শেয়ার ক্রয় করে মাত্র এক লট, তথা ২০টি শেয়ার। দ্বিতীয় শীর্ষ দরদাতা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক সিকিউরিটিজ দর হাঁকে ৬৪১ টাকা। এছাড়া আইডিএলসি ৪১১ টাকা, গ্রামীণ ওয়ান ৩২০ টাকা এবং সিটি ব্যাংক সিকিউরিটিজ দর হাঁকে ৩১৫ টাকা।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানির ২৫২ টাকার শেয়ারে কীভাবে ৭৬৫ টাকা দাম প্রস্তাব করে, তা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাও দ্বিধান্বিত। তাই ওয়ালটনের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) বিডিংয়ের ক্ষেত্রে কী ঘটেছিল, তা জানতে চেয়েছে কমিশন। নিলামে কোনো উপযুক্ত বিনিয়োগকারী কমিশনের আইন মোতাবেক বিডিং করেছে কি না, তা খোঁজা হচ্ছে। পেছনের গল্পের ইতিহাস খুঁজতে যারা অতিমূল্যায়িত করে বা নীতিমালা ভেঙে বেশি দামে নিলামে অংশ নিয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে ‘ব্যাখ্যা তলব করা হবে’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম জানান, ‘কোনো কোম্পানি বাজারে আসার আগে দাম কেমন হবে, সে ব্যাপারে কমিশনের নিজস্ব একটা মডেল আছে। ওয়ালটনের শেয়ারে যারা টপ বিডার ছিল, তারা কোন মডেল অনুসরণ করে দাম প্রস্তাব করেছে তা জানতে চেয়েছি।’ তাদের উত্তর পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

ওয়ালটন বাজারে আসে আগস্টের শেষের দিকে। এরই মধ্যে পুঁজিবাজারের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। পুঁজিবাজারে আসার দুই দিনের মাথায় দাম বেড়ে যায় দ্বিগুণেরও বেশি। ২৫২ টাকায় বাজারে আসা এই কোম্পানির দাম এক সপ্তাহ পরই এক হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। এর পরই শুরু হয় সমালোচনা।

এই কোম্পানি বাজারে আসার আগেই বিতর্ক তৈরি করে তাদের বিগত বছরের লাভের অঙ্ক নিয়ে। ওয়ালটনের দাম এর পর থেকে কমতে শুরু করে। গতকালও ২৬ টাকা কমে শেয়ারের দাম অবস্থান করছে ৭৬৫ টাকায়। এই কোম্পানির বাজারমূল্য এখন ২৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এছাড়া কোম্পানিটি শেয়ারও ছেড়েছে এক শতাংশের কম।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কোম্পানির শেয়ারের প্রান্তসীমা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু কিছু কোম্পানির শেয়ারের প্রান্তসীমা নির্ধারণে নিলাম বা বিডিংয়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি দর অতিমূল্যায়িত করে সেই কোম্পানির ঘনিষ্ঠ কিছু কোম্পানির প্রতিনিধি। অতীতে অনেক কোম্পানির শেয়ারের প্রান্তসীমা নির্ধারণে অতিমূল্যায়নের অভিযোগ ছিল। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সে সময়ে বিশেষ গুরুত্ব না দিলেও এখন বেশ নড়েচড়ে বসেছে। তাই কোম্পানিগুলোকে নোটিস পাঠাচ্ছে বিএসইসি।