দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ন্যাশনাল ফিড মিল লিমিটেড সম্ভাব্য অনাদায়ী অর্থের বিপরীতে যথাযথ প্রভিশন না রেখে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে কোম্পানির তৈরি আর্থিক প্রতিবেদনে সম্পদের পরিমাণ বেশি দেখানো হচ্ছে, যা কিনা আন্তর্জাতিক হিসাব মানের (আইএফআরএস-৯) স্পষ্ট লঙ্ঘন। আইএফআরএস না মেনে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করাই কোম্পানির নিরীক্ষকও আপত্তি জানিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ন্যাশনাল ফিড মিলের আর্থিক প্রতিবেদনে ২০১৯ সালের ৩০ জুন তারিখে সম্পদ হিসেবে পাওনা অর্থের পরিমাণ দেখানো হয়েছে ৭২ কোটি ৬৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২১ টাকা। ২০১৯ সালের ৩০ জুন থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন এই সময়ের মধ্যে পাওনা অর্থ আদায়ের পরিবর্তে অতিরিক্ত এক কোটি ৬১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৭৩ টাকা বেড়ে ৩০ জুন ২০২০ তারিখে সম্পদ হিসেবে মোট পাওনা অর্থ দাঁড়িয়েছে ৭৪ কোটি ২৮ লাখ ৭৬ হাজার ৪৯৪ টাকা। আলোচিত সময়ের কোম্পানির পাওনা অর্থ সন্তোষজনকভাবে আদায় করতে পারেনি কোম্পানিটি। কিন্তু আন্তর্জাতিক হিসাবমান অনুযায়ী অনাদায়ী ওই অর্থের বিপরীতে যথাযথ প্রভিশন রাখেনি।

আর সাধারণত অনাদায়ী অর্থের বিপরীতে কোনো প্রভিশন না রাখলে আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানির সম্পদ বেশি দেখায়, যা স্পষ্টই আন্তর্জাতিক হিসাব মান-৯ এর লঙ্ঘন। হিসাব মান-৯ এর লঙ্ঘনের কারণে কোম্পানির নিরীক্ষক তার প্রতিবেদনে আপত্তি জানিয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি কোম্পানিটির প্রথম (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২০) প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৭ পয়সা, আগের বছর একই সময় ছিল ১৩ পয়সা। আর ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ১৬ পয়সা, যা ২০২০ সালের ৩০ জুন তারিখে ১২ টাকা ৭৬ পয়সা। এই প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে দুই পয়সা অথচ আগের বছর একই সময় ছিল পাঁচ পয়সা।

কোম্পানিটি ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ২০০ কোটি অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট আট কোটি ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭৪টি শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৩০ দশমিক ৪০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫১ দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দুই শতাংশ নগদ (উদ্যোক্তা ব্যতিত) ও আট শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১৭ পয়সা, আর ২০২০ সালের ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৭৬ পয়সা। ওই সময় শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ছয় পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের অনুমোদনের জন্য আগামী ১৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।