দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্টক ডিভিডেন্ড দেয়ার ক্ষেত্রে আগে কোন বিধি-নিষেধ ছিল না। এ কারণে বেশিরভাগ কোম্পানিই কারণে-অকারণে স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতো। কিন্তু স্টক ডিভিডেন্ড দেয়ার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম চালু হওয়ায় কোম্পানিগুলোর সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কেবল স্টক ডিভিডেন্ড কিংবা ক্যাশ ডিভিডেন্ডের চেয়ে স্টক ডিভিডেন্ড বেশি দিলেই জরিমানা হিসেবে দিতে হবে বাড়তি ট্যাক্স। এই নিয়ম চালুর প্রথম বছরেই আইনের ফাঁদে পড়েছে ১৪ কোম্পানি।

২০১৯-২০ অর্থবছরের আয়কর পরিপত্র অনুযায়ী পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে কমপক্ষে স্টক ডিভিডেন্ডের সমপরিমাণ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিতে হবে। যদি স্টকের পরিমাণ ক্যাশের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে পুরো স্টক শেয়ারের ওপর ১০ শতাংশ হারে ট্যাক্স দিতে হবে। একইভাবে যারা কোনো ক্যাশ না দিয়ে শুধু স্টক ডিভিডেন্ড দেবে তাদেরও সমহারে ট্যাক্স দিতে হবে।

২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যবসায় ক্যাশের চেয়ে বেশি স্টক ঘোষণা করেছে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোম্পানির সংখ্যা ৫টি। এ কোম্পানিগুলো হচ্ছে-কাট্টলী টেক্সটাইল, অ্যাসোসিয়েট অক্সিজেন, ন্যাশনাল ফিড, সোনালি পেপার ও এসিআই।

পক্ষান্তরে ৯টি কোম্পানি পুরোটাই স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। এগুলো হচ্ছে-নূরানী ডাইং, ড্রাগন সোয়েটার, ইভিন্স টেক্সটাইল, প্যাসিফিক ডেনিমস, অ্যাডভেন্ড ফার্মা, ন্যাশনাল ফিড, দেশ গার্মেন্টেস, ওয়াইম্যাক্স, স্টাইল ক্রাফট এবং প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স। যে কারণে নিয়ম অনুযায়ী এ কোম্পানিগুলোকে স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১০ শতাংশ হারে অতিরিক্ত ট্যাক্স বা জরিমানা দিতে হবে।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ক্যাশের চেয়ে বেশি স্টক শেয়ার ঘোষণা করায় কোম্পানিগুলোকে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ হারে মোট ১১ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জরিমানা গুনতে হবে বস্ত্র খাতের কোম্পানি ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং মিলসকে। এ প্রতিষ্ঠানটিকে দুই কোটি ৬২ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

এদিকে বেশি বেশি স্টক শেয়ার দেওয়ার জন্য মন্দা ব্যবসাকে দায়ী করছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, করোনার কারণে তারা এবার অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যে কারণে ক্যাশ ফ্লোতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের ক্যাটেগরির টিকিয়ে রাখার প্রতিযোগিতা। যে কারণে বাধ্য হয়েই তারা স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

প্রসঙ্গত, যেসব কোম্পানি কেবল স্টক ডিভিডেন্ড কিংবা ক্যাশ ডিভিডেন্ডের বেশি স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে, এমন সব কোম্পানির ক্ষেত্রেই বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) স্টক ডিভিডেন্ডকে ক্যাশে ডিভিডেন্ডে রূপান্তরের মাধ্যমে শাস্তি এড়ানোর সুযোগ রয়েছে। কোনো কোম্পানি যদি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভায় স্টক ডিভেডেন্ড প্রত্যাহার করে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয় তাহলে তাদের কোনো শাস্তি ভোগ করতে হবে না।