দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের শেয়ার কবে আসবে পুঁজিবাজারে। এ প্রশ্ন এখন বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল গত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে বলেছিলেন, আগামী অক্টোবর মাসে সরকারি মালিকানাধীন চারটি ব্যাংকের শেয়ার বাজারে আসবে। কিন্তু নভেম্বর শেষ হয়ে যাওয়ার পরও এই ব্যাংকগুলোর শেয়ার বাজারে আসাতো দূরে থাক, প্রক্রিয়াই শুরু করা সম্ভব হয়নি।

ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী বছরেও এসব ব্যাংকের শেয়ার বাজারে আনা সম্ভব হবে না। গত ২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে আনার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ দরকার। আমরা যেকোনো মূল্যে পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে চাই। তাই আগামী অক্টোবরের মধ্যে আরো চারটি রাষ্ট্রীয় ব্যাংক পুঁজিবাজারে আসছে। এ ছাড়া বাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ার আরো বাড়ানো হবে।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেছিলেন, সরকারি যেসব ব্যাংক রয়েছে তার মধ্যে একটির শেয়ার বাড়ানোসহ চারটি ব্যাংক আমরা পুঁজিবাজারে নিয়ে আসব। ইতোমধ্যে বাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ার বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করব। পাশাপাশি আমরা নতুনভাবে পুঁজিবাজারে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডকে (বিডিবিএল) নিয়ে আসব। এরপর অগ্রণী, জনতা এবং সবশেষ সোনালী ব্যাংককে নিয়ে আসব। এ বিষয়ে একটি কমিটিও করে দিয়েছি। কমিটিতে পাঁচটি ব্যাংকের প্রতিনিধি থাকবেন এবং এটিকে দেখাশোনা করবে আইসিবি।’

কবে নাগাদ এসব ব্যাংক বাজারে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অক্টোবরের পরে যাবো না। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর মধ্যেই আমরা এগুলো করে ফেলব। এ বছরের মধ্যেই আমরা ভালো কাজ যা আছে করে ফেলব।’

তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংককেও আমরা নিয়ে আসব। তবে এটাতে একটু সময় লাগবে। তবে ইভেন্চুয়ালি আমরা তাদেরকেও নিয়ে আসব। অন্য চারটা আমরা সেপ্টেম্বরের মধ্যে তালিকাভুক্ত করে ফেলব। এ কাজগুলো হয়তো দুই পর্যায়ে হতে পারে। আমরা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কাজগুলো করতে চাই।’

এ বিষয় নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে গত সোমবার যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর এই প্রক্রিয়া কিছুটা শুরু হলেও করোনার কারণে সব উদ্যোগ স্থবির হয়ে পড়ে। তাই এ সময়ের মধ্যে শেয়ার ছাড়ার কাজটি শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগামী বছর সরকারি এই চার ব্যাংকের শেয়ার ছাড়ার কাজটি শুরু করা হবে।

অন্য দিকে, রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের একটির সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে আসার জন্য কোনো কোম্পানিকে অবশ্যই লাভজনক হতে হয়। একই সাথে তাদের নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি থাকতে হয় আপ-টু ডেট। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ক্ষেত্রে এসবের ঘাটতি রয়েছে। এসব কারণে আগামী এক বছরের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংক, সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও বিডিবিএলের শেয়ার পুঁজিবাজারে আনা সম্ভব হবে না।

তবে চেষ্টা করলে পুঁজিবাজারে থাকা রূপালী ব্যাংকের শেয়ার বাজারে ছাড়া সম্ভব। এ বিষয়ে রূপালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার অনুমতি দিলে তারা বিদ্যমান বাজারে থাকা শেয়ারের বিপরীতে রাইট শেয়ার ইস্যু করতে প্রস্তুত।