দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে এই দিনেই সই হলো অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)। এ চুক্তির আওতায় ভুটানের বাজারে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী, কৃষিজাত পণ্য, প্রসাধনী সামগ্রী, শুঁটকি মাছ, কৃষিজাত পণ্য, চা, প্লাইউড, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যসহ মোট একশটি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলো বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পরেও বাংলাদেশ এ সুবিধা পাবে।

আজ রবিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এ বিষয়ে বিস্তারিত গণমাধ্যমকে জানান। এর আগে দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) সই করে বাংলাদেশ ও ভুটান।

চুক্তিতে সই করেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ভুটানের অর্থ-বাণিজ্যমন্ত্রী লোকনাথ শর্মা। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটান প্রান্ত থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং সংযুক্ত ছিলেন।

বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে- তৈরি পোশাক শিল্প, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী যেমন জুস, কনডেন্সড মিল্ক, বিস্কিট, মিনারেল ওয়াটার, পাউরুটি, কৃষিজাত পণ্য যেমন আলু, প্রসাধনী সামগ্রী, টয়লেট্রিজ পণ্য যেমন সাবান ও শ্যাম্পু, শুঁটকি মাছ, সিমেন্ট, চা, প্লাইউড, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য।

এছাড়া পুরুষদের জ্যাকেট, ব্লেজার, ট্রাউজার, আন্ডারওয়্যার, বাচ্চাদের পোশাক, চকলেট, বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য ও গুডস, চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য, গার্মেন্টস পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, অ্যালোমিনিয়াম ডোর, কাঠের তৈরি পণ্য, ইলেকট্রনিকস পণ্য, ফুটওয়্যার, ক্যাবলস, ঘড়ি, বেল্ট, মেটাল ও প্লাস্টিক ফার্নিচার ইত্যাদি।

আর ভুটান বোল্ডার, জিপসাম, ডোলোমাইট, ফল ও জুস, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য যেমন জ্যাম ও জেলি, মসলা, ফার্নিচারসহ অন্যান্য পণ্যে এ সুবিধা পেলো।

অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্য। ডব্লিউটিও বিধি বিধান মেনে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক প্রিফারেন্টাল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) আলোচনা/ নেগোসিয়েশন অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২২-২৩ আগস্ট ২০১৯ ভুটানের সঙ্গে থিম্পুতে পিটিএ নেগোসিয়েশন কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গত ১৬ জুন ২০২০ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সভায় খসড়া পিটিএ চুক্তি ও এর সঙ্গে সংযুক্ত রুলস অব ডিটারমিনেশন অব ওরিজিন (আরও) নিজ নিজ দেশের অনুমোদনের পর স্বাক্ষরের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। বিধি মোতাবেক চুক্তিটি স্বাক্ষরের পর ডব্লিটিওতে নোটিফাই করা হবে।

২০০৮-০৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে মোট বাণিজ্য ছিল ১২.৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ০.৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে ও একই সময়ে আমদানি করে ১২.১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দু’দেশের বাণিজ্য ৫৭.৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। এসময় বাংলাদেশ রপ্তানি করে ৭.৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে ভুটান থেকে আমদানি হয় ৪৯.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।