দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনা মহামারির মধ্যেও ৮টি কোম্পানির শিল্প উদ্যোক্তারা ২০২০ সালে শেয়ারবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে ৯৮৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা মূলধন সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে ৩টি কোম্পানি প্রিমিয়াম বাবদ ৩১১ কোটি টাকার মূলধন উত্তোলন করে৷

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন : এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের ১৫০ কোটি টাকার মূলধন উত্তোলনের জন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৪ কোটি ২ লাখ ৯৩ হাজার ৫৬৬টি সাধারণ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে ইস্যু করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। ওই শেয়ারের মধ্যে ২ কোটি ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৬টি সাধারণ শেয়ার নিজ নিজ বিডিং মূল্যে উপযুক্ত (যোগ্য) বিনিয়োগকারীর কাছে ইস্যু করা হবে।

যোগ্য বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে এক্সচেঞ্জের ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেমের বিডিংয়ের মাধ্যমে কোম্পানির শেয়ারের কাট-অব প্রাইস ৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ২ কোটি ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৬টি সাধারণ শেয়ার ৩১ টাকা মূল্যে (কাট-অব প্রাইস থেকে ১০ শতাংশ কমে) সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ইস্যু করা হবে। কোম্পানি থেকে আরো জানানো হয়, আইডিওর মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানিটি ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং আইপিওর খরচখাতে ব্যয় করবে।

তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড এ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ: ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির আইপিওর আওতায় অভিহিত মূল্য ১০ টাকা দরে ৩ কোটি শেয়ার ইস্যু করে পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। ওই অর্থ দিয়ে মেশিনারিজ ও ইকুইপমেন্ট ক্রয়, ঋণ পরিশোধ এবং আইপিওর খরচ মেটাতে ব্যয় করা হবে।

মীর আক্তার হোসেন লিমিটেড: বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ২ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৪৭টি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১২৫ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। এর মধ্যে আইপিওতে ৫৪ টাকা মূল্যে ১ কোটি ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪৭টি সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ৫৬ কোটি ৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০০ টাকা এবং যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ কোটি ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৮০০টি শেয়ার ৬০ টাকা মূল্যে ছেড়ে ৬২ কোটি ৩১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলন করবে। পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহীত অর্থ দিয়ে কোম্পানির নির্মাণ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি ক্রয়, ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) খরচ খাতে ব্যয় করবে।

এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংক : কোম্পানিটি ১০ টাকা ইস্যু মূল্যের ১২ কোটি সাধারণ শেয়ার বিক্রি করে ১২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। সংগৃহীত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি বাণিজ্যিক স্পেস ক্রয়, লোন পরিশোধ, ডিজিটাল হেলথকেয়ার প্লাটফর্ম উন্নয়ন এবং আইপিও খরচ পরিচালনা করবে।

লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেডে: লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেডের ১৫০ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলনের জন্য বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৪ কোটি ৫২ লাখ ৪৩ হাজার ১৪৪টি সাধারণ শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের আইপিও অনুমোদন করেছে।

দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স: কোম্পানিটি ১০ টাকা ইস্যু মূল্যের ১.৬০ কোটি সাধারণ শেয়ার বিক্রি করে ১৬ কোটি টাকা তুলবে। যা দিয়ে সরকারি ট্রেজারী বন্ড, ফিক্সড ডিপোজিট, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ এবং আইপিও খরচ পরিচালনা করা হবে।

সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স : শেয়ারবাজারে ১ কোটি ৯০ লাখ সাধারণ শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ১৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে কোম্পানি সরকারি ট্রেজারি বন্ড, ফিক্সড ডিপোজিট, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।

ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ: ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৮২ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৯টি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ৬০ হাজার ৩৮৪টি শেয়ার প্রতিটি ৫০ টাকা মূল্যে (প্রান্ত সীমা থেকে ২০ শতাংশ বাট্টায়) ইস্যুর মাধ্যমে ২১ কোটি ৮০ লাখ ১৯ হাজার ২০০ টাকা উত্তোলন করবে। আর বাকি ৩৮ লাখ ৯৩ হাজার ২৬৫টি শেয়ার কাট-অব প্রাইসে অর্থ ৬২ টাকা করে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে ইস্যুর মাধ্যমে ২৪ কোটি ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৩০ টাকা উত্তোলন করবে।

কোম্পানিটির কাট-অব প্রাইস নির্ধারণের জন্য গত ১ নভেম্বর বিকেল ৫টায় নিলাম শুরু হয়। যা শেষ হয় ৪ নভেম্বর বিকেল ৫টায়। শেয়ারবাজার থেকে উত্তোলিত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি ভবন নির্মাণ, যন্ত্রপাতি ও উপকরণ ক্রয় এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।

অপরদিকে ২০১৯ সালে ১টি করপোরেট বন্ড সহ মোট ৯টি সিকিউরিটিজ প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও’র মাধ্যমে মোট ৬৫২ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করা হয়৷ এর মধ্যে ৩টি কোম্পানি প্রিমিয়াম বাবদ ২৩৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা মূলধন উত্তোলন করে৷