দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথমবারের মতো দুবাই ও কানাডাতে ব্রোকারেজ হাউজের শাখা হিসেবে ‘ডিজিটাল বুথ’ খুলতে যাচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ইউসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এবং পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজ। প্রতিষ্ঠান দু’টিকে বুথ খোলার অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)।

ডিজিটাল বুথ খুলতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ জন্য ব্রোকারেজ হাউজ দু’টি সেদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য কাজ শুরু করেছে। লাইসেন্স পেলেই আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ডিজিটাল বুথ চালু করতে চায় দুবাইতে ইউসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এবং কানাডাতে পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজ।

গত ৩০ ডিসেম্বর বিএসইসির উপ-পরিচালক ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে ইউসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টকে দুবাইতে ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। আর ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমোদনের বিষয়টি উভয় স্টক এক্সচেঞ্জসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকেও অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজকে কানাডাতে ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। তবে এখনও প্রতিষ্ঠানটিকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়নি। দু’এক দিনের মধ্যে পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজকে ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি দিয়ে চিঠি দেওয়া হবে।

জানা গেছে, বিএসইসির অনুমোদন পাওয়ার পরপরই ইউসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট দুবাইতে ডিজিটাল বুথ খোলার জন্য ওই দেশের পরামর্শক নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। ওই পরামর্শকের সুপারিশের আলোকেই প্রতিষ্ঠানটি বুথ খোলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লাইসেন্স পেলেই ফেব্রুয়ারি মাসেরই মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই বুথটি চালু করতে চায় ইউসিবি ক্যাপিটাল।

আর বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের হাতেই এ বুথ উদ্ধোধন করাতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া বিএসইসির অনুমোদন পেয়েই পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজ কানাডার অনটারিও কমিশনে ডিজিটাল বুধ খোলার জন্য আবেদন করেছে। তাদের লাইসেন্স পেলেই ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই ডিজিটাল বুথ চালু করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে শেয়ারবাজারে ব্যপ্তি বাড়াতে বিদেশে ব্রোকারেজ হাউজের শাখা হিসেবে ডিজিটাল বুথ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এরই ধরাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ব্রোকারেজ হাউজ দু’টি ডিজিটাল বুথ স্থাপনের অনুমতি চেয়ে ডিএসই ও সিএসইর পাশাপাশি বিএসইসিতেও আবেদন করে।

তবে বিদেশে ডিজিটাল বুথ স্থাপনের ক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের সম্মতি নিয়ে বিএসইসতে আবেদন করার বিধান থাকলেও, ব্রোকারজে হাউজ দু’টি তা পরিপালন করেনি। হাউজ দু’টি ডিএসই ও সিএসইর অনুমতি না নিয়ে বিএসইসিতে আবেদন করেছে। যেহেতু বিদেশে বুথ খোলার অনুমোদন এবারই প্রথম দেওয়া হচ্ছে, তাই বিষয়টিকে নমনীয়ভাবে দেখছে বিএসইসি। তবে বিদেশে ডিজিটাল বুথ খোলার ক্ষেত্রে বিএসইসির সকল বিধান পরিপালন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইউসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ও পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষ।

গত ১৩ ডিসেম্বর বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সাক্ষরিত ডিজিটাল বুথ খোলার নির্দেশনায় বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জের সম্মতিক্রমে যেকোনো স্টক ব্রোকার ডিজিটাল বুথের জন্য কমিশনে আবেদন করতে পারবে। সিটি করপোরেশনের মধ্যে, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়াও দেশের বাইরেও ডিজিটাল বুথ স্থাপন করা যাবে। ডিজিটাল বুথ পরিচালনার জন্য স্টক ব্রোকারের প্রয়োজনীয় কাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা, আর্থিক সক্ষমতা ও জনবল থাকতে হবে।

আর বিদেশে বুথ খুলতে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্রোকারকে নন-জুডিশিয়াল ৩০০ টাকার স্টাম্পে অমীমাংসিত দাবি, বৈধ দাবি বা অপরিশোধিত দাবির ক্ষেত্রে তারা এককভাবে দায়বদ্ধ থাকবে বলে লিখিত দিতে হবে। ব্রোকার হাউজের পর্ষদ মনোনীত ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা যেকোনো শীর্ষ কর্মকর্তা বা পরিচালকের স্বাক্ষর থাকতে হবে সেই স্টাম্পে।

এ বিষয়ে ইউসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ রহমত পাশা বলেন, ‘দুবাইতে ডিজিটাল বুথ খোলর জন্য বিএসইসির অনুমোদন পেয়েছি। তবে এ ধরনের বুথ খোলার ক্ষেত্রে সেখানকার কর্তৃপক্ষে অনুমোদন সাপেক্ষে লাইসেন্স নিতে হবে। সেজন্য আমরা একজন পরামর্শক নিয়োগ দিব। পরামর্শেকের সুপারিশের ভিত্তিতে সেখানকার কর্তৃপক্ষের কাছে বুথ খোলার জন্য আবেদন করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ডিজিটাল বুথ চালু করা হবে।’

পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজের প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা (সিওও) মো. হুমায়ুন হাবিব জানান, ‘কানাডাতে ডিজিটাল বুথ খোলার জন্য বিএসইসি পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজকে অনুমোদন দিয়েছে। এরই ধরাবাহিকতায় বুধ খোলার জন্য সেখানকার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তাদের লাইসেন্স পেলেই শিগগিরই ডিজিটাল বুথ চালু করা হবে।