মোবারক হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: শেয়ারবাজারে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর ক্ষেত্রে লটারি পদ্ধতি উঠে যাচ্ছে ২০২১ সালে। এখন থেকে আইপিওতে যিনিই আবেদন করবেন, তিনিই শেয়ার পাবেন। তবে আইপিও আবেদনের আগে প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর বাজারমূল্যে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে তথা সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ থাকতে হবে।

অর্থাৎ আইপিও আবেদন করার আগে একজন বিনিয়োগকারীর সেকেন্ডারি বাজারে ২০ হাজার টাকার বিনিয়োগ থাকতে হবে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আজ বৃহস্পতিবার তথা ২০২০ সালের শেষ দিনে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন বছরের ১ এপ্রিল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাজার বিশেজ্ঞরা বলেছেন, এ পদ্ধতিতে আইপিওর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়াবে। তবে শেয়ার কেনা-বেচায় প্রতিযোগিতা কিছুটা কমবে। তারা মনে করেন, আইপিও শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সবসময়ই থাকে। কিন্তু সবার কাছে যখন শেয়ার থাকবে তখন লেনদেনের ক্ষেত্রে বিক্রির চাপ থাকবে বেশি।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, তালিকাভুক্তির নিয়ম অনুযায়ী লেনদেনের প্রথম দিন শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বাড়বে। দ্বিতীয় দিন আরও বাড়বে ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ দ্বিতীয় দিনে ১০ টাকার শেয়ার বেড়ে দাঁড়াবে সাড়ে ২২ টাকায়। তখন বেশি লাভের আশায় সবাই ধরে রাখতে চাইবে শেয়ার। কোম্পানি ভালো হলে দাম বেশি হলেও ওই কোম্পানির শেয়ার কিনতে আগ্রহ দেখাবে বিনিয়োগকারীরা। সকল আবেদনকারী যেন শেয়ার পান তা নিশ্চিত করতে ৩১ ডিসেম্বর সমবণ্টনের নতুন ব্যবস্থা চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি, যা আগামী ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। নতুন ব্যবস্থায় বলা হয়, শেয়ার পেতে হলে আবেদনকারীর কমপক্ষে ২০ হাজার টাকার বিনিয়োগ থাকতে হবে শেয়ারবাজারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ছায়েদুল ইসলাম বলেন, ‘শেয়ার বণ্টন কিভাবে হবে তা বিএসইসির পক্ষ থেকে পরিষ্কার করতে হবে। তারা শুধু ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু এর সুফল কিভাবে বিনিয়োগকারীরা পাবে সে বিষয়ে কিছু বলেনি।’

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘এই ব্যবস্থা ভালো। কারণ, এটি কার্যকর হলে সব আবদেনকারী শেয়ার পাবেন। তবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। তা না হলে এর সুফল মিলবে না।’

বিনিয়োগকারী কে এম হাসানুর রহমান চয়ন ইসলাম বলেন, ‘আবেদন করলেই আইপিও শেয়ার পাওয়া যাবে, এটা খুবই ভালো। কারণ, যারা আইপিওতে শেয়ার পান তারাই সবচেয়ে বেশি মুনাফা পান। এর ফলে নতুন বিও অ্যাকাউন্ট হবে। বাড়বে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ। তবে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করার দায়িত্বও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে নিতে হবে।’