দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (ডিএমডি) চাকরির পাশাপাশি অন্য কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য করে থাকলে সে ব্যাপারে তথ্যও নিজ নিজ ব্যাংককে জানাতে হবে। ব্যাংক পরিচালকদের ব্যবসা-বাণিজ্যের তথ্য দেয়ার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারে বলা হয়েছে, পরিচালকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত তথ্য ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিজ নিজ ব্যাংকে জমা দিতে হবে। তথ্য পাওয়ার পর পর্ষদে অবশ্যই উপস্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে নিজ দায়িত্বে এসব তথ্য সংরক্ষণ করার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে সার্কুলারে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (ডিএমডি) চাকরির পাশাপাশি অন্য কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য করে থাকলে সে ব্যাপারে তথ্যও নিজ নিজ ব্যাংককে জানাতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাংকের পরিচালকদের অনেকেরই নানা ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য আছে। অভিযোগ রয়েছে, অনেক পরিচালক সীমার অতিরিক্ত ঋণ নিয়ে থাকেন, যা আইনবহির্ভূত। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পরিচালকদের ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্য জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে।

এর ফলে ঋণ তদারকি ব্যবস্থা আরও জোরদার হবে আশা করা যায়।’ ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর বিধান অনুযায়ী, ব্যাংকের পরিচালকরা নিজ ব্যাংক থেকে তাদের ধারণ করা শেয়ারের ৫০ শতাংশের বেশি ঋণ নিতে পারেন না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচালক ও এমডি, এএমডি ও ডিএমডিদের যেসব তথ্য দিতে বলেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কৃষি, শিল্প ও অন্য ব্যবসার নাম, ঠিকানা, বিবরণ এবং পারিবারিক ব্যবসায়িক স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার বিবরণ।

প্রতি বছরই তাদের এ সংক্রান্ত তথ্য জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়েছে, পঞ্জিকা বছরের ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ পর্যন্ত বিবরণ পরের বছরের ২০ জানুয়ারির মধ্যে জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু বিদায়ী ২০২০ সালের তথ্য জমা দেয়ার ক্ষেত্রে সময় কিছুটা শিথিল করে বলা হয়েছে গত বছরের তথ্য ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যে জমা দেয়া যাবে।

গত বছরের জানুয়ারিতে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকের পরিচালকদের নিজ ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৬১৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা, যা মোট ঋণের শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ।