দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনার কারণে ২০২০ সালে দেশের উৎপাদনমুখী প্রায় সব শিল্পখাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের লকডাউনে উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ কোম্পানির আয় কমেছে। এ সময় নির্মাণ খাতসংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ধীরগতির কারণে সিমেন্ট খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সিমেন্ট খাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের আয়ও কমেছে।

তবে ২০২০ সালে বিক্রি থেকে আয় কমলেও ব্যয় সংকোচনের কারণে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ২০১৯ সালের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া কোম্পানিটি সমাপ্ত অর্থবছওে ১০ শতাংশ ক্যাংশ ডিভিডেন্ড দিলেও সন্তুষ্ট নন বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা এ কোম্পানির কাছ থেকে আরো ভালো ডিভিডেন্ড প্রত্যাশা করছিলেন। তবে কোম্পানিটি ধারাবাহিক ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে।

লাফার্জহোলসিম জানিয়েছে, করোনা মহামারীর কারণে ২০২০ সালে কোম্পানির নিট বিক্রি আগের বছরের তুলনায় শতকরা ৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ৬২২ কোটি টাকা হয়েছে। ২০১৯ সালে কোম্পানির পণ্য বিক্রি থেকে ১ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা ছিল। ২০২০ সালে করপূর্ববর্তী পরিচালন মুনাফা আগের বছরের চেয়ে শতকরা ১ ভাগ বেড়ে ২৯৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

অপরদিকে ২০২০ সালে করপরবর্তী মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২৩৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে শতকরা ৩৬ ভাগ বেশি। ২০১৯ সালে করপরবর্তী মুনাফা ছিল ১৭৩ কোটি টাকা। ব্যয় সংকোচন ও লাফার্জহোলসিম একীভূতকরণের কারণে কর সুবিধা এতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। ২০২০ সালে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৩ পয়সা। যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৫০ পয়সা।

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী চমকপ্রদ এই আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে বলেন, ‘ হেলথ, কস্ট এবং ক্যাশ এই তিন বিষয়ে আলোকপাত করার কারণেই কোম্পানি দারুণ এই ফলাফল অর্জন করতে পেরেছে। সেই সঙ্গে ডিজিটাল পদক্ষেপ ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা এই ফলাফল অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের সব কর্মী ও সরবরাহকারীদের কঠোর পরিশ্রম এবং আমাদের প্রতি গ্রাহকদের আস্থার বিনিময়েই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।’

২০২০ সালে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ ‘হোলসিম ওয়াটার প্রটেক্ট’ নামে বিশেষায়িত সিমেন্ট বাজারে এনেছে এবং গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল অ্যাপ উদ্বোধন করেছে, যার মাধ্যমে গ্রাহকরা বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন। ২০২০ সালে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, কন্ট্রাক্ট নেগোসিয়েশন এবং উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধির কারণে তুলনামূলক কম ভলিউম গ্রোথের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে। ২০২০ সালে কোম্পানির স্থায়ী খরচও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। কোম্পানির ব্যয়সাশ্রয়ী ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালন দক্ষতা মহামারীর বছরেও নিজস্ব গতি ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে। সামনের দিনগুলোতেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে বাজারের ঊর্ধ্বমুখী চাহিদার সুবিধা নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।