দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির মুনাফায় বড় ধস নেমেছে। এর মধ্যে একটি সোনালী আশ আরেকটি বঙ্গজ লিমিটেড। সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ:  পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে । মুনাফা কমায় কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে ৫৬ পয়সা। কোম্পানিটির অক্টোবর-ডিসেম্বর’৩১ সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই চিত্র দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে সমাপ্ত প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। এরপর অনুমোদন করে প্রকাশের জন্য বলা হয়।

কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি আয় অর্থাৎ ইপিএস হয়েছে ১২ পয়সা। এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬৮ পয়সা। আর দুই প্রান্তিক অর্থাৎ জুলাই’২০-ডিসেম্বর’২০ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২৬ পয়সা। গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ১ টাকা ২৩ পয়সা।

৩০ জুন ২০২০ সমাপ্ত বছরে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সে বছর ১৬ লাখ ৭ হাজার টাকা মুনাফা হয়েছিল। এর আগের বছরও ১০ শতাংশ মুনাফা হয়েছিল। তবে সে বছর মুনাফা হয়েছিল ২৭ লাখ ৩ হাজার টাকা। মাত্র ২ কোটি ৭১ লাখ টাকার পেইড-আপের এই কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ২৭ লাখ ১২ হাজার টাকা।

১৯৮৫ সালে পাট খাত তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৫০ দশমিক ৭৮ শতাংশ শেয়ার। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ শেয়ার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৪৩ দশমকি ৫৯ শতাংশ শেয়ার। গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয় ২২৫ টাকা ৭৯ পয়সা।

বঙ্গজ লিমিটেড: চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) বঙ্গজ লিমিটেডের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৭ পয়সা। এ হিসাবে প্রথমার্ধে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ৯৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ইপিএস হয়েছে ১৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ৩২ পয়সা। উল্লেখ্য, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বঙ্গজের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১২ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ২৫ পয়সা।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বঙ্গজ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৩৩ টাকা। ইপিএস হয়েছে ৬০ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২ টাকা ১৭ পয়সা। ৩০ জুন এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২১ টাকা ২৯ পয়সা।

২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের মোট ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল বঙ্গজ। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও বাকি ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য ১৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা। লোকসানের কারণে কোম্পানিটি ২০১৭ হিসাব বছরে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। সে হিসাব বছর তাদের শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৬২ পয়সা।

সর্বশেষ ঋণমান অনুযায়ী, বঙ্গজের সার্ভিল্যান্স রেটিং দীর্ঘমেয়াদে ‘ট্রিপল বি প্লাস’ ও স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-থ্রি’। ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত ও গত বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনসহ অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রত্যয়ন করেছে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড (ইসিআরএল)।

ডিএসইতে বৃহস্পতিবার বঙ্গজ শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ১১৮ টাকা ১০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ১০১ টাকা ১০ পয়সা ও ১৭৩ টাকা।

১৯৮৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বঙ্গজ লিমিটেডের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ৭ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৭৬ লাখ ২৪ হাজার ৬৪৪।

এর মধ্যে ৩০ দশমিক ৯৯ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬ দশমিক ৪৩, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ১৩ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৬২ দশমিক ৪৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত ১৯৬ দশমিক ৮৩।