দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: গত ১৩ মার্চ দেশে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ছিল মাত্র ছয় জেলায়। কিন্তু এর এক সপ্তাহ পর অর্থাৎ ২০ মার্চ সর্বোচ্চ সংক্রমিত জেলা বেড়ে দাঁড়ায় ২০টিতে। এর চার দিন পর অর্থাৎ ২৪ মার্চ সে সংখ্যা আরও ৯টি বেড়ে দাঁড়ায় ২৯টি। সর্বশেষ গত এক সপ্তাহে আরও দুটি জেলায় সর্বোচ্চ সংক্রমিত জেলা হিসেবে চিহ্নিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সবমিলে বর্তমানে দেশে করোনার উচ্চ সংক্রমিত জেলার সংখ্যা ৩১টি।

উচ্চ সংক্রমণযুক্ত জেলাগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মৌলভীবাজার। অন্য চার শীর্ষ জেলা হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট। এর পরপরই উচ্চ সংক্রমণযুক্ত জেলার মধ্যে রয়েছে নরসিংদী, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, বরিশাল, রাজশাহী, বগুড়া, নড়াইল, নীলফামারী, গাজীপুর, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, যশোর, মাদারীপুর, নওগাঁ, রংপুর, কিশোরগঞ্জ, নাটোর, টাঙ্গাইল ও কক্সবাজার।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করতে রোগের মাত্রা, রোগীর সংখ্যা, সংক্রমণের হারের মতো তথ্যগুলো প্রতি সপ্তাহেই বিশ্লেষণ করা হয়। ২৪ মার্চের ডেটা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সংক্রমিত ২৯টি জেলা ছিল। কিন্তু সর্বশেষ দেখা যাচ্ছে ৩০টি জেলাতেই সংক্রমণের মাত্রা বেশি। আরেকটা জেলা কক্সবাজারে সংক্রমণের মাত্রা বেশি নয়, কিন্তু রোগীর সংখ্যা ও এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে সেটাও সর্বোচ্চ সংক্রমিত জেলার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সবমিলে এখন ৩১টি জেলা সর্বোচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে।’

দেশে সর্বোচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ জেলা বেড়ে যাওয়ায় এ বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, উচ্চ সংক্রমিত জেলায় বিশেষ পদক্ষেপ নেই ‘এর মানে হচ্ছে সংক্রমণ আসলে সারা দেশেই ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে।’

গত এক মাস ধরেই দেশে সংক্রমণ বাড়ছে। সর্বোচ্চ সংক্রমিত জেলাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে মার্চের শুরুতেই। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত এসব জেলায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বিশেষ কোনো নির্দেশনা যায়নি। এমনকি এসব জেলার সংক্রমণ বৃদ্ধির খবর পেলেও তা নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। স্থানীয় সিভিল সার্জনরা জানিয়েছেন, গত সোমবার সারা দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, সেই নির্দেশনাগুলো মানার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

এই ৩১ জেলার মধ্যে শুধু দুটি জেলায় মৌলভীবাজার ও কক্সবাজারে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজারে সন্ধ্যা ৭টার পর দোকানপাট বন্ধ ও ৬টার পর প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়ার ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বাকি জেলাগুলোতে সারা দেশের মতোই সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জনরা।

এসব জেলায় সিভিল সার্জন ও দেশের বিশেষজ্ঞরা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সর্বোচ্চ সংক্রমিত জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে কঠোর কর্মসূচি নিতে হবে। বিশেষ করে সংক্রমিত জেলায় যান ও মানুষ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সব ধরনের সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। তা না হলে নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়বে। এমনকি পরবর্তী সময়ে এসব জেলা থেকে অন্যত্র রোগটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার কথাও বলেছেন এসব সিভিল সার্জন।

সংক্রমণের শীর্ষে মৌলভীবাজার : দেশে পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের সর্বশেষ হার ২০ শতাংশ। সেখানে মৌলভীবাজারে সংক্রমণের হার ২২ দশমিক ২ শতাংশ। এ তথ্য নিশ্চিত করে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ জেলা সর্বোচ্চ সংক্রমণের এক নম্বরে আছে। চার মাস পর এখানে গত ১১ মার্চে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। আগের চার মাস কোনো রোগী ছিল না। ১১ মার্চ থেকে আজ ৩১ মার্চ (গতকাল বুধবার) পর্যন্ত ৪১৪ পরীক্ষায় ৯২ জন পজিটিভ। শনাক্ত হার ২২ দশমিক ২ শতাংশ। দুজন মারা গেছেন।’

বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘লোকজন মাস্ক পরে না। সামাজিক দূরত্ব মানে না। সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো বেড়ে গিয়েছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখানে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকবে। সন্ধ্যা ৬টার পর দরকার ছাড়া কেউ বের হতে পারবে না। প্রয়োজনে বের হলেও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। জেলার সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। খাবার রেস্টুরেন্টগুলোতে ৫০ শতাংশ চেয়ার সরিয়ে ফেলা হয়েছে। সেখানে ৫০ শতাংশের বেশি কাস্টমার ঢুকতে পারবে না। এসব নিয়ম কেউ না মানলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে সংক্রমিত জেলায় আন্তঃবাস চলাচল নিষিদ্ধ বা সীমিত করার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল নিশ্চিত করছি। আমরা যদি মাস্ক পরাতে ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করাতে পারি, তাহলেই করোনা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।’

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া আমাদের জেলা প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, জেলাব্যাপী সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ। বিয়ে, ওয়াজ, কীর্তন কিছুই করা যাবে না। এতদিন স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে প্রচার চালিয়ে আসছিল স্থানীয় প্রশাসন। আজ থেকে জেলাব্যাপী আরও গতি বৃদ্ধি করা হবে। সেই সঙ্গে বন্ধ থাকবে সব পর্যটন স্পট।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘আমরা গত কদিন ধরে জেলাব্যাপী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে। আগামীকাল (আজ) থেকে আমরা আরও কঠোর হব। সন্ধ্যা ৭টার পর সব দোকানপাঠ বন্ধ থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হবে। আগামী ১৫ দিন সারা জেলায় মাইকিং করে ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হবে। প্রতিটি হোটেল-রিসোর্টের ৫০ শতাংশ বুকিং বাতিল করতে হবে এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

অন্য জেলায় বিশেষ পদক্ষেপ নেই : সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ ম-ল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগের থেকে এখানে শনাক্ত হার ও রোগী বেশি। জনসমাগম কমাতে হবে। নতুন করে জনসমাগম যেন কম হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। বাজারহাট, মেলা, কমিউনিটি সেন্টারে লোকসমাগম সীমিত করতে হবে। যখন ওপর থেকে কোনো নির্দেশনা আসবে, সিদ্ধান্ত হবে, সেটাই বাস্তবায়ন করা হবে। নিজেরা সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। প্রশাসন নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।’

ঢাকার সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘ঢাকা জেলায় পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্ত হার ১৭ শতাংশের মতো। এখনো বইমেলা, বাংলাদেশ গেমস, কোনো মার্কেটই বন্ধ হয়নি। তাহলে আমরা নিয়ন্ত্রণ করব কী করে? কঠোর উদ্যোগ না নিলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।’

এ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকায় সংক্রমণ বেশি। কারণ ঢাকার সঙ্গে সব জেলার যোগাযোগ বেশি। বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন ঢাকায় আসছেন। এটা সারা দেশের সেন্টার। এখানে লোকজন নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। যদি নিয়ন্ত্রণ করা যেত, তাহলে করোনাও নিয়ন্ত্রণ হতো। চলাচল বন্ধ করা না গেলে নিয়ন্ত্রণ হবে না। লোকজনের যাতায়াত অনেক বেড়ে গেছে।

এটা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে কখনই করোনা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। কঠোরভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হতে পারবেন না, বিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। এসব সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। আগামীকাল (আজ) থেকে হয়তো পারিবারিক অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, সব বন্ধ হয়ে যাবে। অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, বিয়েশাদির কমিউনিটি সেন্টারগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘চট্টগ্রাম জেলার মধ্যে মহানগরে আগের চেয়ে রোগী বেশি। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার যে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, সেটাই বাস্তবায়ন করছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুরু হয়েছে। বাকিগুলো দুয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হবে। জনসমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ বা সীমিত করার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া ও ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।’

এ সিভিল সার্জন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘শুধু চট্টগ্রাম নয়, পুরো বাংলাদেশে বেড়েছে। ধীরে ধীরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে। ৩১ জেলায় সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এ জেলাগুলোয় গড়ে সংক্রমণ হার ১০ শতাংশ। ১৮ জেলায় সংক্রমণ ১৫ শতাংশের ওপরে। আট জেলায় ২০ শতাংশের ওপরে। যেভাবে মানুষ চলছে, তাতে বাড়াটা খুবই স্বাভাবিক। করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার যেসব নির্দেশনা দিয়েছে, সেগুলো যদি শুধু কাগজে-কলমে হয়, তাহলে নিয়ন্ত্রণ হবে না। মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়িত হলে অবশ্যই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসবে।’

মুন্সীগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সাঈদ আল মামুন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গত নভেম্বরে রোগী শনাক্ত ছিল ৩২২, ডিসেম্বরে ছিল ৩৩৫; এ বছর জানুয়ারিতে অনেক কমে শনাক্ত দাঁড়ায় ৫৬ জন। ফেব্রুয়ারিতে আরও কমে হয় ২৭ জন। কিন্তু মার্চে হঠাৎ বেড়ে দাঁড়ায় ২৭৬ জন।’ মার্চে বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবকিছু খোলা ছিল। স্বাস্থ্য সচেতনতা একেবারেই ছিল না। মাস্ক পরছে না। জনসমাগম বেশি।

বিভিন্ন মেলা, খেলাধুলা হয়েছে। সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। নিয়ন্ত্রণে সরকার বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে। সেগুলো আগামীকাল (আজ) থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে। আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ বা সীমিত করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এখন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চলাচল বন্ধের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

নিয়ন্ত্রণে সরকারি নির্দেশনায় সম্বল : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘এ ধরনের জেলাগুলোতে এলাকাভিত্তিক সংক্রমণের মাত্রা বিশ্লেষণ করি। সেসব জায়গায় সংক্রমণের মাত্রা বেশি থাকে, সেখানে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের যারা আছেন, তাদের নিয়ে বসে কার্যকারিতাগুলো ঠিক করি। আগে তো আমরা এসব জেলায় চলাচল নিয়ন্ত্রণ, বেশি পরীক্ষা, শনাক্ত করে কোয়ারেন্টাইনের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এখন যেহেতু প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন কার্যক্রম এসেছে, এখন আমরা সেটাকে কার্যকর করার জন্য কাজ করব।’

এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এসব নির্দেশনা ঠিকমতো পালন করলে আশা করি সংক্রমণ আর ছড়াবে না। তবুও সাবধানের জায়গাটা রয়েই যায়। আমরা কতখানি পালন করতে পারব, সেটা বিবেচনার বিষয়। এখানে শুধু সরকার বা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে দায়ী করলে বা তাদের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না। আমাদের নাগরিকদের যে দায়িত্ব আছে, সেটা পালন করতে হবে। সরাসরি ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হবে না।’

সর্বোচ্চ সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জনস্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘আমার কাছে তিনটি জিনিস মনে হয়। ১. আমাদের দেশে অর্ধেক জেলায় উচ্চ সংক্রমণ হচ্ছে না। যে জায়গায় উচ্চ সংক্রমণ হচ্ছে না, সেখানে যেন সংক্রমণ না ছড়ায়, সেজন্য উচ্চ সংক্রমণমুক্ত জেলাগুলোয় স্বাস্থ্যবিধিগুলো ভালোভাবে মানার চেষ্টা করতে হবে এবং উচ্চ সংক্রমিত জেলা থেকে যাতে লোকজন কম যাতায়াত করে, যাতায়াত করলেও তাদের যেন পরীক্ষা করা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

সরকারি প্রজ্ঞাপনে বলা আছে, সর্বোচ্চ সংক্রমিত জেলাগুলোতে আন্তঃজেলা বাস চলাচল নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। এ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে উচ্চ সংক্রমণ ও নিম্ন সংক্রমণ জেলাগুলোর মধ্যে। এখানে জোর দিতে হবে। প্রকৃত অর্থেই বাস চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ২. সরকার যে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছে, সেখানে ১০টি মন্ত্রণালয় অন্তর্ভুক্ত। বাস্তবায়নের দায়িত্ব এসব মন্ত্রণালয়ের। এসব মন্ত্রণালয়কে নিজ থেকে পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে হবে। ৩. আমরা শুধু ১৮টি নির্দেশনা দিলাম। কিন্তু মানুষকে কিছুই বলছি না। মানুষকে বলতে হবে এ উচ্চ সংক্রমণে মানুষ মারা যাচ্ছে, যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে, এসব তথ্য মানুষকে দিতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। সংক্রমণের ঝুঁকি সম্পর্কে বোঝানোর কোনো চেষ্টাই হচ্ছে না।’