দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) হঠাৎ ব্লক মার্কেটে লেনদেনের পরিমান বাড়ছে। গত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে গতকাল লেনদেনের হিড়িক পড়ছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের লেনদেনের শীর্ষে। ব্লক মার্কেটে মোট ২১ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ২ কোটি ৫০ লাখ ৪৩ হাজার ৯৮৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৮৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা।

ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার। কোম্পানিটি ৬০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স ৮ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। উত্তরা ব্যাংক ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

ব্লক মার্কেটে লেনদেন করা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে: অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স, বিবিএস কেবলস, বিডি ফিন্যান্স, বিকন ফার্মা, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, সিটি ব্যাংক, সিভিও পেট্রো কেমিক্যাল, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, এম.এল ডাইং, ওরিয়ন ফার্মা, ফনিক্স ইন্স্যুরেন্স, আরডি ফুড, রিং শাইন টেক্সটাইল, রবি, সী পার্ল বীচ ও ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশ কোম্পানি লিমিটেড।

৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিএসইসি: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৬৬টি কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইসের (পতনের সর্বনিম্ন সীমা) নির্দেশনা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বুধবার (০৭ এপ্রিল) কমিশনের ৭৬৯তম নিয়মিত সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা আগামিকাল থেকে কার্যকর হবে। বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে ও শেয়ারবাজারের উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে ৬৬টি কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হল। যা গতবছরের ১৯ মার্চ করোনা মহামারির কবলে পতনরোধে দেওয়া হয়েছিল।

জানা গেছে, বর্তমানে ১১০টি কোম্পানি সিকিউরিটিজ ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। এরমধ্যে ৬৬টি থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হল। বাকিগুলোর ক্ষেত্রে পরবর্তীতে সম্ভবত ২ ধাপে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনা তুলে নেওয়া হবে। কমিশনের এই নির্দেশনার ফলে ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা শেয়ারগুলোর লেনদেন শুরু হওয়ার সুযোগ তৈরী হয়েছে। এরআগে দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারগুলোর কেনাবেচা বন্ধ রয়েছে।

সূত্র মতে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে ও শেয়ারবাজারের উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে ৬৬ টি কোম্পানিকে ফ্লোর প্রাইস সংক্রান্ত কমিশনের আদেশ নং বিএসইসি/সিএমআরআরসিডি/ ২০০১-০৭/০৪ তারিখ ১৯ মার্চ ২০২০ এর কার্যকারিতা হতে অব্যাহতি প্রদান করেছে। যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

কোম্পানিগুলো হচ্ছে: পিপলস লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড, আরএন স্পিনিং মিলস লিমিটেড, বাংলাদেশ সার্ভিস লিমিটেড, আইএফআইএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড-১, জাহিন স্পিনিং মিলস লিমিটেড, রিং শাইন টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, অলিম্পিক এক্সোসরিজ, ডিবিএইচ ফাস্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড লিমিডেট, ফনিক্স ফাইন্যান্স ফাস্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, নুরানী ডাইং এন্ড সোয়েটার লিমিটেড, রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস, এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোর্থ ফান্ড, ইভাইন্স টেক্সটাইল, প্যাসিফিক ডেনিম লিমিটেড,

মেট্রো শিপিং লিমিটেড, কাটালি টেক্সটাইল লিমিটেড, ফার ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, দেশ বন্ধু পলিমার লিমিটেড, ইয়াকিন পলিমার লিমিটেড, সাফকো স্পিনিং মিলস লিমিটেড, ওয়েস্টান মেরিন শিপ ইয়ার্ড লিমিটেড, সেন্ট্রাল ফার্মা সিউটিক্যালস লিমিটেড, বিচ হ্যাচারি লিমিটেড, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, শেফাড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, হামিদ ফ্যাবিক্স লিমিটেড, প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং লিমিটেড, সাইহাম কটন মিলস লিমিটেড, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেড, গোল্ডেন হারফেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড,

এএফসি এগ্রো বায়োটেক লিমিটেড, বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লোস্টিক্স লিমিটেড, খুলনা প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিমিটেড, সিলভা ফার্মাসিউটিকেলস লিমিটেড, ইন্ডো বাংলা ফার্মা সিউটিকেলস লিমিটেড, আর্গন ডেনিমস লিমিটেড, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, শাশা ডেনিম লিমিটেড, সুরিদ নিট কোম্পাজিট লিমিটেড, স্কয়ার নিট কোম্পাজিট লিমিটেড, ভিএফএস থ্রেড ডেনিম লিমিটেড, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড, ফনেক্স ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টম্যান্ট লিমিটেড, এডভেন্ট ফার্মা লিমিটেড, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড,

কুইন সাউথ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট মিলস লিমিটেড ৯, ওমেক্স ইলেক্টট্রোড লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, সাইহাম টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, সোনারগাও টেক্সটাইলস লিমিটেড, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, গ্লোবাল হারভেস্ট ক্যামিকেলস লিমিটেড, নাভানা সিএনজি লিমিটেড, ঢাকা ইলেক্টিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড, ইউনিক হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট,

স্টান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, ফারিস্ট ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড কো. উত্তরা ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টম্যান্টস লিমিটেড, ওসমানিয়া গ্লাস সিট ফ্যাক্টরি কোম্পানি লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, নাহি অ্যালম্যুনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল লিমিটেড, দুলামিয়ার কটন স্পিনিং মিলস লিমিটেড, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, প্যারামাউন্ড টেক্সটাইল লিমিটেড, এম এল ডাইং লিমিটড।

আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের রাঙামটিতে ‘ডিজিটাল বুথ’ চালু: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলায় দ্বিতীয় ‘ডিজিটাল বুথটি’ চালু করবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ। আজ শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ সকাল ১০টায় ডিজিটাল বুথটির অনুষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু করা হবে।

করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারঘোষিত লকডাউনের মধ্যেই এই বুথ চালু করা হবে। তবে, বুথ উদ্বোধনের ক্ষেত্রে কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না। রাঙামাটিতে ডিজিটাল বুথ চালু হওয়ার ফলে সেখানকার বিনিয়োগকারীরা বিও হিসাব (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) খুলে শেয়ারবাজারে লেনদেন করতে পারবেন। এর আগে, গত ৩১ মার্চ বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলায় দেশের প্রথম ডিজিটাল বুথটি চালু করে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে রাঙামাটি জেলায় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন সাপেক্ষে ডিজিটাল বুথটি চালু করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জের উল্লাহপারা, নীলফামারীর সৈয়দপুর, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জসহ আরও বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল বুথ খোলার জন্য আবেদন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ডিএসই যাচাই-বাছাই শেষে বিএসইসি অনুমোদন দিলে এসব জেলায় বুথ খোলা হবে।

আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাঙ্গামাটিতে ডিজিটাল বুথ চালু করা আগে ভবন ভাড়া নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এ বুথ পরিচালনার জন্যও কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল বুথ চালু করার জন্য সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, ফটিকছড়ি ও ভোলা জেলায় ডিজিটাল বুথ খোলার জন্য আবেদন করে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ। ওই চারটি জায়গায় প্রতিষ্ঠানটিকে বুথ স্থাপনের অনুমতি দেয় বিএসইসি। তবে আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে দু’টি জেলায় বুথ খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই ধরাবাহিকতায় ব্রোকারেজ হাউজটি চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি ও বরিশালের ভোলায় ডিজিটাল বুথ চালু করা সিদ্ধান্ত নেয়। এ দু’টি বুথের পারফরমেন্সের ভিত্তিতে কক্সবাজার ও ফটিকছড়িতে ডিজিটাল বুথ চালু করার অনুমোদন দেবে বিএসইসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে দুটি জেলায় ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। এরই ধরাবাহিকতায় আমরা দ্বিতীয় ডিজিটাল বুথ রাঙ্গামাটিতে চালু করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লকডাউনের মধ্যেই কোনো প্রকাশ আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই বুথটি আজ চালু করা হবে।’

প্রসঙ্গত, রাঙ্গামাটি পৌরসভার বনরুপায় ১০৭ শহীদ আবদুল রশীদ রোডের এস.আর. টাওয়ারের তৃতীয় তালায় আইল্যান্ড সিকিউরিটিজের ডিজিটাল বুথটি স্থাপন করা হয়েছে।

পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেনের উত্থানের কারন ব্যাক ও বীমা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উর্ধ্বমুখী প্রবনতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। টানা ৩ কার্যদিবস সূচকের উত্থানে বিনিয়োগকারীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। মুলত মার্জিন লোনের রেশিও বাড়ানোর ফলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে এ আস্থা ফিরে আশার কারন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তেমনি সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ব্যাংক ও বীমার উত্থানে সূচক ও লেনদেন বাড়ছে। এদিকে লকডাউনের মধ্যে ব্যাংকের সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্ধারণ করা দুই ঘণ্টার লেনদেনে তৃতীয় দিনের মতো সূচকের উত্থান দেখল পুঁজিবাজার।

২০২০ সালে প্রথম পর্যায়ে যখন করোনা মহামারি শুরু হয় তখন আতঙ্কে বিনিয়োগ কমেছিল পুঁজিবাজারে। পতন ছিল নিত্যদিনের। কিন্তু এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে যখন লকডাউন ঘোষণা করল তখন প্রথম দিকে আতঙ্ক থাকলেও এখন স্বাভাবিক লেনদেন। বরং বিনিয়োগকারীরা এ সময় মনে করেছিলেন লকডাউনে লেনদেন কমে আসবে। সূচকের পতন হবে অহরহ। কিন্তু সেই অবস্থা থেকে বের হয়ে তৃতীয় দিনের মতো উত্থানে শেষ হলো লেনদেন।

অন্যদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউনের খবরে গত রোববার (০৪ এপ্রিল) পুঁজিবাজারে বড় ধস নামে। কিন্তু লকডাইনের দিন থেকে পুঁজিবাজার উত্থানে থাকে। লকডাউনের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের মতো আজ (বুধবার) তৃতীয় দিনও উত্থানে শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন। এদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্সে অর্ধশত পয়েন্ট যোগ হয়েছে। এদিন অন্যান্য সূচকও বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর।

জানা গেছে, আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৫.৯৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৩৭.৩৩ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৯.৫৫ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২২.৯২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১২১৪.১৬ পয়েন্টে এবং ২০১১.১৯ পয়েন্টে। আজ ডিএসইতে ৫৮১ কোটি ৯৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিন থেকে ৭৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫০৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকার।

ডিএসইতে আজ ৩৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৯৯টির বা ৫৭.৮৫ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ৪৩টির বা ১২.৫০ শতাংশের এবং ১০২টির বা ২৯.৬৫ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৮২.১২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪৪৩.৮৩ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ২১৪টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৯টির দর বেড়েছে, কমেছে ২২টির আর ৫৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৩০ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

৯ কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা সংকটে হল্টেড: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বুধবার লেনদেনের দেড় ঘণ্টার মধ্যে বিক্রেতা উধাও হয়ে গেছে ৯ কোম্পানির শেয়ারে। এতে কোম্পানিগুলোর শেয়ার হল্টেড হয়ে মূল্য স্পর্শ করছে সার্কিট ব্রেকারে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলো হচ্ছে- ইনডেক্স অ্যাগ্রো, অগ্রণী ইন্সুরেন্স, নর্দার্ন ইন্সুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্সুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও লিবরা ইনফিউশন লিমিটেড। কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা ছিল না। এই রিপোর্ট আপলোডের সময় পর্যন্ত সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কোম্পানিগুলোর হাজার হাজার ক্রেতার অফার দেখা যায়।

৭৫ টাকায় লেনদেন শুরু ইনডেক্স এগ্রোর: পুঁজিবাজারে অভিষেক হওয়া ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের লেনদেন শুরু হযেছে ৭৫ টাকায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, ১০ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত কোম্পানিটির প্রায় ১৭ হাজার শেয়ার ১৪৮ বারে হাত বদল হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন ৭৫ টাকায় শুরু হয়েছে।

অর্থাৎ প্রথম দিন কোম্পানিটির শেয়ার দর সর্বোচ্চ সীমা ২৫ টাকা বা ৫০ শতাংশ বেড়েছে। আইপিওতে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫০ টাকা করে। ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের ডিএসইতে ট্রেডিং কোড হচ্ছে : “INDEXAGRO” এবং কোম্পানি কোড হচ্ছে : ৯৯৬৪৩।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন পাওয়া ইনডেক্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদনকারীদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়া শেয়ার বিজয়ীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবে গত ৪ এপ্রিল প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে আইপিওতে আবেদনকারীদের মধ্যে শেয়ার বরাদ্দ দেয়ার জন্য গত ২২ মার্চ লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

কোম্পানিটির আইপিওতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হয়। ২৩ ডিসেম্বর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৫৪তম সভায় কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়।

কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৮২ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৯টি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ৬০ হাজার ৩৮৪টি শেয়ার প্রতিটি ৫০ টাকা মূল্যে (প্রান্ত সীমা থেকে ২০ শতাংশ বাট্টায়) ইস্যুর মাধ্যমে ২১ কোটি ৮০ লাখ ১৯ হাজার ২০০ টাকা উত্তোলন করে। আর বাকি ৩৮ লাখ ৯৩ হাজার ২৬৫টি শেয়ার কাট-অফ প্রাইসে অর্থাৎ ৬২ টাকা করে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে ইস্যুর মাধ্যমে ২৪ কোটি ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৩০ টাকা উত্তোলন করে।

কোম্পানিটির কাট-অফ প্রাইস নির্ধারনের জন্য গত ১ নভেম্বর বিকাল ৫টা থেকে ৪ নভেম্বর বিকাল ৫টায় নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। আর গত ১০ সেপ্টেম্বর বিএসইসির ৭৩৯তম সভায় কোম্পানিটির বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়া হয়। শেয়ারবাজার থেকে উত্তোলিত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি ভবন নির্মাণ, যন্ত্রপাতি ও উপকরণ ক্রয় এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।

৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সমাপ্ত ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩.৩৬ টাকা। যা আগের বছর একই সময়ে হয়েছিল ৩.৬২ টাকা। আর ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫৫.১৭ টাকায়। কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড এবং ইবিএল ইনভেস্টমেন্ট।