দেশ প্রতিক্ষণ, বরিশাল: বিরল এক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহদী। তিনি ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে ৪র্থ বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন। রাজধানী ঢাকার ফ্রেন্ডশিপ স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। আবদুল্লাহ আল মাহদীর বাড়ি সিলেটের মৌলভীবাজার।

তার আকস্মিক মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে রুহের মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ছাদেকুল আরেফিন।

আবদুল্লাহ আল মাহদীর বন্ধু মিসাল বিন সলিম জানান, ৬-৭ দিন আগে হালকা ঠান্ডা, জ্বর, চোখ লাল আর শরীরে ফোসকা পড়া শুরু হয়েছিল। ডাক্তার দেখানোর পরে পক্স হিসেবে আইডেনটিফাই করে। সেভাবেই চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু পরদিন থেকে জ্বর বাড়তে শুরু করে, শরীরে ফোসকার পরিমাণ বেড়ে যায়। ১০৩-৪ ডিগ্রি জ্বর থাকার কারণে জামালপুর মেডিকেলে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে ইমার্জেন্সি ডাক্তাররাও পক্স হিসেবেই আইডেনটিফাই করেন।

পরে সেই অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট দিয়ে রিলিজ দেওয়া হয়। রাতে আবার সেই ১০৪/৫ ডিগ্রি জ্বর উঠলে ডাক্তারের সঙ্গে আলাপ করে ঢাকা আনা হয়। ঢাকায় অনেক হাসপাতাল ঘোরাঘুরির পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফ্রেন্ডশিপ স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাকে।

তখন চিকিৎসক নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে বলেন- এই রোগ ‘স্টিভেন জনসন সিনড্রোম’। খুব বেশি রেয়ার একটা রোগ। জিনগত সমস্যার কারণে মাঝে মাঝে হয়। আর লক্ষণ অনেকটাই পক্স এর মতো তাই সহজে আইডেনটিফাই করা যায় না।

জানা গেছে, ‘স্টিভেন জনসন সিনড্রোম’ তীব্র প্রতিক্রিয়া সম্বলিত (hypersensitivity) একটি বিরল রোগ, যাতে সাধারণত এক মিলিয়নে ২-৭ জন ব্যক্তি আক্রান্ত হন। এতে ত্বক ও মিউকাস ঝিল্লি আক্রান্ত হয়। দেহের চামড়া, ঠোঁট, মুখ গহ্বর, কণ্ঠ, অন্ত্র, পায়ু, মূত্রনালি, চোখ ইত্যাদি সবকিছুই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ ছাড়া ফোসকা পড়ে যায়। জীবাণু সংক্রমণও হতে পারে।

শরীরের বাইরে যতটা আক্রান্ত দেখা যায়, এ রোগে ভেতরেও তেমন আক্রান্ত হয়। কয়েক দিনের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গ যেমন- কিডনি, ফুসফুস, যকৃত অকেজো হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হতে পারে।’