দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ন্যাশনাল পলিমারের শেয়ারে এ কি কান্ড এ প্রশ্ন এখন বিনিয়োগকারীদের। দ্বিতীয় দফায় ফ্লো প্রাইস প্রতাহার করা কোম্পানি ন্যাশনাল পলিমারের শেয়ার দুই দিন সর্বোচ্চ বৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হওয়ার পর এবার উল্টো দিকে দৌড় শুরু করেছে। আগের দুই দিন কোম্পানিটির শেয়ার দর সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ করে বেড়ে ডানে হল্টেড থেকেছে। আজ তৃতীয় দিন সর্বনিম্ন ২ শতাংশ কমে বামে হল্টেড হয়েছে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাইট শেয়ার অ্যাডজাস্ট হওয়ার পর গত ১০ জানুয়ারি কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস ৫৬ টাকা ৬০ পয়সায় স্থির হয়। এরপর থেকেই কোম্পানিটি ফ্লোর প্রাইসের চৌহদ্দিতে বন্দী থাকে। এই সময়ে ফ্লোর প্রাইসে কোম্পানিটির সর্বোচ্চ শেয়ার লেনদেন হয় ৫ লাখ ২২ হাজার শেয়ার। তবে ফ্লোর প্রাইসের শিঁকল কখনো অতিক্রম করতে পারেনি কোম্পানিটি।

গত ৩ জুন ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে তিনদিন সর্বনিম্ন ২ শতাংশ করে কমে ৫৩ টাকা ৪০ পয়সায় দাঁড়ায়। এই তিন দিনে শেয়ারটির সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ২৫ হাজার শেয়ার।

গত বুধবার (৯ জুন) কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন ও দরে হঠাৎ তেজ দেখা যায়। এদিন কোম্পানিটির দর ৫৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৫৮ টাকা ৭০ পয়সায়। দর বাড়ে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশের কাছাকাছি। লেনদেন হয় ১ কোটি ১৮ লাখ ১৯ হাজারের বেশি শেয়ার। যা কোম্পানিটির গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন। গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ৩৪ লাখ ৪৫ হাজার শেয়ার।

পরের দিন বৃহস্পতিবার (১০ জুন) লেনদেনের শুরুতেই কোম্পানিটির দর ৬৪ টাকা ৪০ পয়সায় উঠে যায়। অর্থাৎ সর্বোচ্চ দর যতটা বাড়া সম্ভব, ততটা। ১০ শতাংশের কাছাকাছি। দিনভর সর্বোচ্চ দরে হল্টেড অবস্থায় লেনদেন হয় ৬৪ লাখ ২৮ হাজারের বেশি শেয়ার। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত কোম্পানিটির লাখ লাখ শেয়ারের ক্রেতার অবস্থান দেখা যায়।

কিন্তু আজ (১৩ জুন) কোম্পানি ভিন্ন দৃশ্যপটে আর্বিভূত হয়। আজ লেনদেন শুরুর আগেই ফ্রি ওপেনিংয়ে সর্বনিম্ন ২ শতাংশ কম দরে অর্থাৎ ৬৩ টাকা ২০ পয়সায় ৩০ লাখের বেশি শেয়ারের বিক্রেতারা অবস্থান নেয়। দিনভর সর্বনিম্ন ৬৩ টাকা ২০ পয়সা দরে ৩ লাখ ৪৫ হাজারের কিছু বেশি শেয়ার লেনদেন হয়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত ২৮ লাখের বেশি ক্রেতার শোডাউন থাকে।

কোম্পানিটির এই ধরনের লেনদেনের দৃশ্য দেখে বিনিয়োগাকারীরা রীতিমতো হতবাক। আগেরদিন যেখানে ১০ শতাংশ বেশি দরে দিনভর ৬৪ টাকা ৪০ পয়সায় লাখ লাখ ক্রেতার সমাগম ছিল, সেখানে আজ ২ শতাংশ কম দরে লেনদেনের আগেই ৩০ লাখের বেশি বিক্রেতার শোডাউন! এটা কী সত্যি সত্যি শেয়ার বিক্রি করার জন্য। না অন্য কোন উদ্দেশ্য? বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির লেনদেন খতিয়ে দেখার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে দাবি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে রত্ন লুকিয়ে আছে: রকিবুর রহমান: বাংলাদেশের পুঁজিবাজার রিটার্নে মে মাসে বিশ্বে প্রথম হয়েছে। এই প্রথমই নয়, এই বাজারে রয়েছে আরও অনেক সম্ভাবনা। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের জন্য রত্ন লুকিয়ে রয়েছে বলে জানান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান। রবিবার একটি অনলাইন পোর্টালকে এ কথা বলেছেন তিনি।

তিনি বলেন, পাঁচ বছর আগে ভিয়েতনাম মার্কেট ইমেজিং মার্কেট ছিলো। আজকে বাংলাদেশের মার্কেট ইমেজিং মার্কেটে পরিণত হয়েছে। ইমেজিং মার্কেটে অনেক সুযোগ তৈরি হয় বিনিয়োগ করার। আর এটাই সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইকোনোমি ভিয়েতনাম থেকে আকারে অনেক ছোট। কিন্তু তা ভিয়েতনাম থেকে অনেক এগিয়ে গেছে। সুতরাং বাংলাদেশের পুঁজিবাজার রিটার্নে বিশ্ব সেরা হলেও বাজারটির ভবিষ্যতে রয়েছে অপার সম্ভাবনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইকোনোমির জিপিডিতে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন হিসেবে মাত্র ১৮ শতাংশ কন্ট্রিবিউট করে। যেটা কিছু না। যতক্ষণ পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কন্ট্রিবিউট করতে পারবে না ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্যাপিটাল মার্কেট আন্তর্জাতিক স্টাটাসে বাংলাাদেশের পুঁজিবাজার দ্বারাতে পারবে না।

রকিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএসইসির অনেকগুলো ভালো সিদ্ধান্তের কারণে। ওটিসি মার্কেটের চার কোম্পানির শেয়ার লেনদেন শুরু হবে। এছাড়াও আরও ৩০টি কোম্পানি ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে লেনদেন করবে। এদের বোর্ড পুনরায় গঠণ করা হয়েছে। মালিকদের মেয়াত তিন বছরের জন্য ব্লক করে দেয়া হয়েছে। যার কারণে এই কোম্পানিগুলো অনেক ভালো করবে বলে জানান তিনি। এছাড়াও জেড গ্রুপের অনেক কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে। এগুলোও ভালো করবে। যার ফলে এখানেও সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেছে।

বড় অংকের বিদেশী বিনিয়োগ পাচ্ছে এসিআই: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ্যাডভান্স কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (এসিআই) লিমিটেডে বড় অংকের বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। কোম্পানিটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসিআই মোটরস লিমিটেড প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু করার মাধ্যমে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রায় ৮৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। আজ রোববার এসিআই লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, এসিআই মোটরস লিমিটেড ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৫৫৫টি প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু করবে। প্রতি শেয়ারে ৪৪০ টাকা প্রিমিয়ামসহ ইস্যুমূল্য হবে ৫৪০ টাকা। এর মধ্য দিয়ে কোম্পানিটি ৮৩ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭০০ টাকা সংগ্রহ করবে।

আলোচিত শেয়ার খ্যাতনামা কিছু বিদেশী বিনিয়োগকারী পার্টনারশিপ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ম্যানেজড অ্যাকাউন্ট সিভি এর অনুকূলে ইস্যু করা হবে। এই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে কমনওয়েলথ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (সিডিসি), নেদারল্যান্ডের এফএমও এবং নরওয়ের নর ফান্ড।

আলোচিত প্রেফারেন্স শেয়ার একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরযোগ্য (Convertible)। এই শেয়ার ইস্যুর পর এসিআই মোটরসে এসিআই লিমিটেডের মালিকানা কিছুটা কমে ৫২ দশমিক ৭০ শতাংশ থেকে ৪৬ দশমিক ৮০ শতাংশ হবে।

এর আগে গত বছর এসিআই মোটরস প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যু করে একই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১২৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। এসিআই মোটরসের পারফরন্সে সন্তুষ্ট হয়ে কোম্পানিটিতে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা তাদের অংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

উল্লেখ, এসিআই মোটরস লিমিটেড মূলত কৃষি যন্ত্রপাতি, নির্মাণ খাতের যন্ত্রপাতি এবং মোটরসাইকেল ও পিক-আপ বাজারজাত করে থাকে। কোম্পানিটির বিক্রি করা কৃষি যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে কম্বাইন্ড হারভেস্টর, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, ডিজেল ইঞ্জিন ইত্যাদি। অন্যদিকে অটোমোবাইলসের মধ্যে আছে জাপানের ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল ও চীনের ফোটন ব্র্যান্ডের পিক-আপ।

ডিএসই’র তিন খাতের শেয়ারে লেনদেনের উল্লম্ফন: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের নিনন্মুখী প্রবনতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সঙ্গ কমেছে লেনদেনেও। আগের দিনের চেয়ে লেনদেন ৬০০ কোটি টাকা কম হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে মন্দা বাজারেও আজ ওষুধ ও রসায়ন, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বিবিধ খাত লেনদেনে উল্লম্ফন হয়েছে।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা বলছেন, আজ ওষুধ ও রসায়ন, মিউচুয়াল ফান্ড ও বিবিধ খাতে বিনিয়োগকারীরা বিক্রয়ের চেয়ে ক্রয় করেছেন বেশি। তাই এই দুই খাতে লেনদেন বেড়েছে। ওষুধ ও রসায়ন: ওষুধ ও রসায়ন খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৯২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ৩১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বা ৫২.৩৮ শতাংশ।

মিউচুয়াল ফান্ড খাত: মিউচুয়াল ফান্ড খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ২৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ১২৪.২৪ শতাংশ।

বিবিধ খাত: বিবিধ খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ১৪০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ২২ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ১৮.৬৪ শতাংশ।

বস্ত্র ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারে সুবাতাস: পুঁজিবাজারে বীমা খাতের পর বস্ত্র খাতের শেয়ারে পাগলা দৌড় শুরু হইছে। পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি নতুন করে আগ্রহ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। মুলত দুই খাতে পুঁজিবাজারে সুবাতাস বইছে। গত দুদিন বিমা কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। আজ রোববারও নতুন করে বিমা কোম্পানির পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক খাতের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন তারা।

এই তিন খাতের শেয়ার বিক্রি করে এবার নতুন করে বস্ত্র ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারে বিনিয়োগ করছেন। ফলে দুটি খাতে বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের বিষয়ে আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। রোববার সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় দিনের লেনদেন শুরু হয়। এর ফলে লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৩১ পয়েন্ট। বৃহস্পতিবারের মতোই এদিন ব্যাংক-বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির চাপের মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। শুরু হয় সূচক পতনের ধারায়, আর এই ধারা অব্যাহত ছিল দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত।

এরপর বিদ্যুৎ, জ্বালানি, বস্ত্র ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতের শেয়ারের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে দুপুর ১টা পর্যন্ত সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়। তবে বিদ্যুৎ ও বস্ত্র খাতের কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে। ফলে দিনের বাকি সময় লেনদেন হয় সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায়। দিন শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ৩০ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেড়েছে ৫৭ পয়েন্ট।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত ৫৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩২টির, কমেছে ২৬টির। আর মিউচুয়াল ফান্ড খাতে তালিকাভুক্ত ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩১টির, কমেছে মাত্র ১টি প্রতিষ্ঠানের ইউনিট শেয়ারের দাম। আর বাকি ৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। আর কমেছে ৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। এই তিন খাতের শেয়ারের দাম বাড়ায় রোববার বড় ধরনের দরপতন থেকে রক্ষা পেয়েছে দেশের পুঁজিবাজার।

ডিএসইর তথ্য মতে, রোববার ডিএসইতে মোট ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ১৯২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির। তাতে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৯ কোটি ৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৬৬৯ কোটি ২৫ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় এদিন আগের দিনের তুলনায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৬ দশমিক ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৯৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১২ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এরপর বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ারের। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, ফরচুন সু, ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স, লঙ্কা বাংলা ফাইন্যান্স, রিং সাইন টেক্সটাইল, সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্স, লুব-রেফ, পাইওনিয়ার ইনস্যুরেন্স এবং প্রগতি ইনস্যুরেন্স লিমিটেড।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৭ কমে ১৭ হাজার ৫২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১৪৪টির, কমেছে ১৫৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির শেয়ারের দাম। এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯০ কোটি ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮০৯ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১৪ কোটি ৬৪ লাখ ১৯ হাজার ৭৭ টাকা।

চার কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ: ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফিরে আসা ৪ কোম্পানি গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানিগুলো হলো:

বিডি মনোস্পুল: চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে দশমিক ১০ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ১ টাকা ৩৭ পয়সা। অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির আয় হয়েছে ২৮ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৫ টাকা ০৬ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৪১ টাকা ০৮ পয়সা।

তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল: চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে দশমিক ৩০ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ১১ পয়সা। অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৯৮ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৮১ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৮১ টাকা ৫১ পয়সা।

মুন্নু ফেব্রিক্স: চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে দশমিক ০.০১ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ০.০২ পয়সা। অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির আয় হয়েছে ০.০৪ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ০.০৬ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২৭ টাকা ৩৪ পয়সা।

পেপার প্রোসেসিং: চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪০ পয়সা। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ১ টাকা ১৭ পয়সা। অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৪৪ পয়সা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৩ টাকা ৫৩ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২৭ টাকা ৪৪ পয়সা।

ওটিসির ৪ কোম্পানি মূল মার্কেটে ফিরেই বাজিমাত: ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে থেকে মূল মার্কেটে ফিরেছে ৪ কোম্পানি। কোম্পানিগুলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পুনরায় তালিকাভুক্তির মাধ্যমে আজ রোববার (১৩ জুন) থেকে পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করল। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানি চারটি হলো: বিডি মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, মুন্নু ফেব্রিকস ও তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস।

ডিএসইতে বিডি মনোপুল পেপারের কোম্পানি কোড ১৯৫০৫। পেপার প্রেসেসিংয়ের কোম্পানি কোড ১৯৫০৬। তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইলের কোম্পানি কোড ১৭৪১৯ এবং মুন্নু ফেব্রিক্সের কোম্পানি কোড ১৭৪৩৯। জানা গেছে, কোম্পানিগুলো প্রাথমিকভাবে ডিএসইতে জেড ক্যাটাগরিতে লেনদেন শুরু করবে। আর পরবর্তী বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হবে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
উল্লেখ, স্বল্প মূলধনী কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করার জন্য ওটিসি মার্কেট গঠন করা হলেও পরবর্তীতে সেটি দূর্বল মৌলের, লোকসানী ও বন্ধ কারখানার কোম্পানির ডাম্পিং স্টেশনে পরিণত করা হয়।

উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়া, পর পর তিন বছর লভ্যাংশ দিতে না পারা কোম্পানিগুলোকে পর্যায়ক্রমে মূল বাজার থেকে তালিকাচ্যুত করে ওটিসিতে পাঠানো হয়। ক্রেতা নির্ভর ওটিসি মার্কেটে লেনদেন প্রক্রিয়ায় অনেক জটিল। এখানে শুধু বিক্রেতার শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব বোর্ডে দেখানো হয়। কোনো ক্রেতার প্রস্তাব দেখানো হয় না। মূল বোর্ডের মত অর্ডার মডিফাই করা যায় না।

একে তো দূর্বল কোম্পানির চিহ্নিত বোর্ড, তারউপর লেনদেনের জটিল প্রক্রিয়া। এসব কারণে ওটিসি মার্কেটে শেয়ার কেনাবেচা তেমন হয় না বললেই চলে। এটি নিয়ে তাই ওটিসি কোম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষোভের শেষ নেই। এ বাস্তবতায় বর্তমান কমিশন ওটিসি মার্কেটের কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেগুলোর অবস্থা তুলনামূলক ভাল সেগুলোকে মূল বাজারে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে বেশ কিছু কোম্পানির উদ্যোক্তাদের সাথে বৈঠকও করে বিএসইসি।এরই ফলাফল হিসেবে আলোচিত চার কোম্পানি মূল বাজারে ফিরতে আগ্রহ দেখালে ডিএসইর পর্ষদ সেটি অনুমোদন করে।

ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ওটিসি বাজারে তালিকাভুক্ত এ চার কোম্পানির লেনদেন স্থগিত রয়েছে। সর্বশেষ ওটিসি বাজারে বিডি মনোস্পুল পেপারের শেয়ার ৫০ টাকায়, পেপার প্রসেসিংয়ের শেয়ার ১৬ টাকায়, মুন্নু ফেব্রিকসের শেয়ার ১০ টাকা ও তমিজউদ্দিনের শেয়ার ১২ টাকায় লেনদেন হয়।

বিএসইসি ও ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, মূল বাজারে ফিরলেও কোম্পানি চারটির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সব শেয়ারের তিন বছরের লক-ইন বা বিক্রয় নিষেধাজ্ঞা থাকবে।  অর্থাৎ এ তিন বছর কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা তাঁদের হাতে থাকা কোনো শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন না। মূল বাজারে ফেরার পর কোম্পানিগুলোতে যাতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে, এ কারণে এ বিক্রয় নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ব্লক মার্কেটে লেনদেনের শীর্ষে ৩ কোম্পানি: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৪৭টি কোম্পানির ১২৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, কোম্পানিগুলোর ৩ কোটি ৮৩ লাখ ১১ হাজার ৫৯৬টি শেয়ার ৮৮ বার হাত বদলের মাধ্যমে ১২৯ কোটি ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছি পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকার মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১ কোটি ১১ লাখ ২২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে এনআরবিসি ব্যাংকের।

এছাড়া প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকার, আমান ফিডের ৯৫ লাখ ৮০ হাজার টাকার, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের ৭ কোটি ২৪ লাখ টাকার, বিকন ফার্মার ৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকার, বেক্সিমকোর ১ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ৭ লাখ ৯২ হাজার টাকার, কনফিডেন্স সিমেন্টের ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার,

ড্রাগন সোয়েটারের ১৭ লাখ টাকার, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৩৯ লাখ ৪ হাজার টাকার, এমারেল্ড অয়েলের ৫ লাখ ১২ হাজার টাকার, ফরচুন সুজের ৫ কোটি ১২ লাখ ৬৫ হাজার টাকার, জেনেক্সের ১ কোটি ৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকার, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ১৭ লাখ ২ হাজার টাকার, গ্রামীণফোনির ৭ কোটি ৭০ লঅখ টাকার, জিপিএইচ ইস্পাতের ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার, গ্রীণডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ১৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকার,

এইচআর টেক্সটাইলের ৮ লাখ ৭২ হাজার টাকার, ইনডেক্স এগ্রোর ৩৩ লাখ ১৮ হাজার টাকার, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৪৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকার, কাট্টালি টেক্সটাইলের ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩ হাজার টাকার, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ১ কোটি ৭৫ লাখ ৬ হাজার টাকার, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার, মোজাফফর হোসাইন স্পিনিংয়ের ৭ লাখ ৯ হাজার টাকার, মীর আখতারের ১২ লাখ ৮২ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৪ কোটি ৫৯ লাখ ২০ হাজার টাকার, নিউ লাইন ক্লোথিংসের ৯৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকার,

ন্যাশনাল ফিডের ৫২ লাখ ৯৯ হাজার টাকার, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের ৭ কোটি ১৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকার, নর্দার্ণ ইসলামী ইন্স্যুরেন্সে ২৬ লাখ ৬ হাজার টাকার, ন্যাশনাল পলিমারের ১৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ৭৬ লাখ ৭২ হাজার টাকার, পাওয়ার গ্রীডের ১ কোটি ৮ লাখ টাকার, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকার, আরএকে সিরামিকের ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকার,

রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকার, রূপালী ব্যাংকের ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার, সাফকো স্পিনিংয়ের ৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকার, সায়হাম কটনের ৪৫ লাখ টাকার, সাউথইস্ট ব্যাংকের ৫ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ইউনিক হোটেলের ২ কোটি ২ লাখ ২০ হাজার টাকার, উত্তরা ব্যাংকের ৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকার, ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের ৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকার এবং ওয়াটা কেমিক্যালের ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

ডিএসইতে টানা লেনদেনের শীর্ষে বেক্সিমকো: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ রোববার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির মোট ২১৮ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

রোববার কোম্পানিটি মোট ২ কোটি ২১ লাখ ৫১ হাজার ৯৬টি শেয়ার হাতবদল করেছে। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড। কোম্পানিটির ১ কোটি ৪৪ লাখ ২ হাজার ৬৮৩টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৫৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ফরচুন সুজ তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। কোম্পানিটির ১ কোটি ৭ লাখ ১২ হাজার ১৮৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

লেনদেনের তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- গ্রীণডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, রিংশাইন টেক্সটাইল, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, লুব-রেফ বাংলাদেশ, পাইওনিয়র ইন্স্যুরেন্স ও প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

একটিভ ফাইনকে ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের নির্দেশ বিএসইসি’র: পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রাসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি একটিভ ফাইন কেমিক্যালসের (এএফসি) পরিচালনা পর্ষদকে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণ করে কৌশলগত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে কোম্পানির বিদ্যমান স্বতন্ত্র পরিচালকদের পরিবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ ১১ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে তলব করে বিএসইসি। তলব করা ওই কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটিভ ফাইন কেমিক্যাল ছিল। এরই ধরাবাহিকতায় গত ২৭ মে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিএসইসির আলোচনা হয়। ওই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নির্দেশ দিয়েছে।

২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর ও ২০১৯ সালের ২১ মে জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের মোট পরিশোধিত মূলধনের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ ধারণের বিধান রয়েছে। তবে অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালসের মোট পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে মাত্র ১২.০৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে পরিচালকদের হাতে। ফলে এখনও ১৭.৯৬ শতাংশ শেয়ারধারণ করতে হবে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৭ মে বিকেল ৪টার দিকে একটিভ ফাইন কেমিক্যালের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বিএসইসির বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের আলোচনা অনুযায়ী, বিদ্যমান স্বতন্ত্র পরিচালকদের পরিবর্তন করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করার কারণে আদালতে দায়ের করা পিটিশনে সর্বশেষ অবস্থার তথ্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশের চিঠি হাতে পাওয়ার পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ ধারণ সাপেক্ষে কৌশলগত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বিএসইসিতে জমা দিতে হবে। আর এজিএম সংক্রান্ত পিটিশনের সর্বশেষ অবস্থা এবং স্বতন্ত্র পরিচালক পরিবর্তনের বিষয়টি চিঠি হাতে পাওয়া পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে বিএসইসিকে অবহিত করতে হবে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই নির্দেশনা পরিপালন করে প্রতিবেদন দাখিল না করলে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএসইসি। একটিভ ফাইন কেমিক্যালসের সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের এজিএম ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। তবে কোম্পানিটি ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের এজিএম করেনি। ফলে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী এজিএম করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছে। সেটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় একটিভ ফাইন কেমিক্যালস। ২৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২৩ কোটি ৯৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৮০টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ১২.০৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৮.৩২ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩.১১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৬.৫৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের জীবন বীমা কোম্পানি ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত (সাসপেন্ড) করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ চার মাসের জন্য স্থগিত করে আইডিআরএ। এখন নতুন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে। গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) জারি করা আইডিআরএর এ সংক্রান্ত নির্দেশনায জারি করে।

নির্দেশনায় বলা হয়, চার মাসের জন্য ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদ সাসপেন্ড করা হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি কারোনাভাইরাসের কারণে অনিশ্চিত লকডাউন ও সার্বিক চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপের ফলে সাসপেনশনের নির্ধারিত উদ্দেশ্যসমূহ এখন পর্যন্ত পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

এ অবস্থায় ডেল্টা লাইফের আয়-ব্যয়, সরকারি রাজস্ব তথা ভ্যাট ফাঁকি, আয়কর ফাঁকি, স্ট্যাম্প ডিউটি ফাঁকি এবং অন্যান্য গুরুতর অনিয়মের বিষয়ে নিরীক্ষা প্রতিবেদন সম্পন্ন করতে আইডিআরএ কর্তৃক পরবর্তী নির্দেশ প্রদান না করা পর্যন্ত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সাসপেনশন অব্যাহত থাকবে।

এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটিতে মাসিক ৪ লাখ টাকা সম্মানীতে আইডিআরএ’র সাবেক সদস্য সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় আইডিআরএ।

এ বিষয়ে সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লাকে পাঠানো চিঠিতে আইডিআরএ উল্লেখ করে, বীমা আইন ২০১০ এর ৯৬ ধারার (১) উপধারা অনুযায়ী প্রশাসক হিসেবে চূড়ান্তভাবে দায়িত্ব গ্রহণের ৪ মাসের মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

আল-আরাফাহ্ ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে হতাশ বিনিয়োগকারীরা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি আল-আরাফাহ্ ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে হতাশ বিনিয়োগকারীরা। ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়ার পরও সেই হারে দর না বাড়ায় আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে হতাশায় বিনিয়োগকারীরা। অনেক বিনিয়োগকারীই মনে করছেন সন্তোষজনক হারে ডিভিডেন্ড না দেয়ায় শেয়ার দর ধারাবাহিকভাবে কমে আগের অবস্থানে চলে এসেছে।

গত ৯ মে কোম্পানিটি ডিভিডেন্ড ঘোষণার দিন কোম্পানিটির দর ছিল ২১ টাকা ৫০ পয়সা। বর্তমানে একই দরে নেমে এসেছে কোম্পানিটির শেয়ার দর। কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৪১ পয়সা আয় করলেও বিনিয়োগকারীদেরকে দেয়া হয়েছে এক টাকা ৫০ পয়সা। যে কারণে এ কোম্পানির শেয়ারে আগ্রহ কমে যাওয়ায় ধারাবাহিকভাবে দর কমেছে।

জানা যায়, এ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর ৯ কার্যদিবসে অর্থাৎ ১১ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪ টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ টাকায়। এরপর ২৭ মে থেকেই কোম্পানিটির দর ধারাবাহিকভাবে কমে আবারও আজ ২১ টাকা ৫০ পয়সা লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ ডিভিডেন্ড ঘোষণার আগে যে দর ছিল বর্তমানে সেই দরে অবস্থান করছে কোম্পানিটির শেয়ার।

উল্লেখ্য, এ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। ঘোষিত ডিভিডেন্ড সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের সম্মতিতে অনুমোদনের জন্য আগামী ৯ আগস্ট, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ কোম্পানির ২৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ জুন।

সমাপ্ত অর্থবছরে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (কনসোলিডেটেড ইপিএস) ২ টাকা ৪১ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ২ টাকা ৪০ পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (সলো ইপিএস) ২ টাকা ২৮ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ২ টাকা ২৭ পয়সা। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) ২২ টাকা ৩৫ পয়সা।

ইতিমধ্যে কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মাচ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (কনসোলিডেটেড ইপিএস) হয়েছে ২৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৫১ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ২৫ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে সমন্বিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ২২ টাকা ৬১ পয়সা।

অনেক বিনিয়োগকারী মনে করছেন ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় কমায় আরো বেশি হতাশ করেছে। এর প্রভাবেও এ শেয়ারের দর কমে থাকতে পারে। তবে মুল কথা হলো ডিভিডেন্ড পেয়েও মুনাফা করতে পারেনি কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা।

আজ এ কোম্পানির ৯ লাখ ১৩ হাজার ১৩টি শেয়ার ৫০৮ বার হাতবদল হয়েছে, যার বাজার মূল্য এক কোটি ৯৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। আজ এ কোম্পানির শেয়ার দর ২ টাকা ৩০ পয়সা বা ৯.৬৬ শতাংশ কমেছে। এতে কোম্পানিটির ডিভিডেন্ড নেয়া বিনিয়োগাকারীরা লোকসানে