দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানি আরামিট সিমেন্টের রিজার্ভ নিয়ে ডিএসই ভুল তথ্য উপস্থাপন করছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। বিষয়টি দ্রুত ঢাকা স্টক একচেঞ্জের ওয়েবসাইটে সংশোধন করা উচিত বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারী ও বাজার বিশ্লেষকরা। মুলত অপর স্টক এক্সচেঞ্জ চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ লিমিটেডে রিজার্ভ ও সারপ্লাস ৪৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা দেখানে হলে ও ঢাকা স্টক একচেঞ্জে লোকসান ৬২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা দেখানে হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন কোনটি সঠিক ঢাকা স্টক একচেঞ্জ না চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে দ্রুমজাল সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) Other Comprehensive Income সব ধরে রিজার্ভেও পরিমান দাঁড়ায় ৪৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কিন্তু ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) ওয়েবসাইটে নেতিবাচক দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে রিজার্ভ হবে ৪৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

এ বিষয় কোম্পানির সচিব সৈয়দ কামরুজ্জামান (এফসিএম) বলেন, আমাদের কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ দেওয়া হলেও চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ আপডেট করলেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ আপডেট করেনি। এখানে কোম্পানির কোন দায়বদ্ধতা নেই। এ বিষয় ঢাকা স্টক একচেঞ্জের পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি দেখছি।

সিমেন্ট খাতের ৬ কোম্পানির মুনাফায় বড় উল্লম্ফন : করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের সিমেন্ট শিল্পের মুনাফায় ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলো চলতি বছরে ভালো ব্যবসা করেছে। মূলত করোনাকালীন সময়ে সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে সিমেন্টের ভালো চাহিদা থাকার পাশাপাশি ব্যাংক ঋণে সুদের হার কমে যাওয়ায় কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে তালিকাভুক্ত সাতটি সিমেন্ট কোম্পানির মুনাফায় উল্লস্ফল হয়েছে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলো বিগত কয়েক বছরের তুলনায় ব্যবসায় চমক দেখিয়েছে।

মুলত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে দেশীয় সিমেন্ট কোম্পানিগুলোর মধ্যে নিট মুনাফায় সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে এমআই সিমেন্টের। তাদের এ সময়ে নিট মুনাফা বেড়েছে গত বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৮৩১ শতাংশ বেশি।

মেঘনা সিমেন্ট: জানুয়ারি-মার্চ সময়ে মেঘনা সিমেন্ট মিলসের রাজস্ব আয় হয়েছে ২৮২ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব আয় ছিল ২২৫ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় বেড়েছে ২৫ শতাংশ। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ। আর গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেড়ে ৭৩৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে আগের বছরের তুলনায় কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৫৩ শতাংশ।

এমআই সিমেন্ট: জানুয়ারি-মার্চ সময়ে এমআই সিমেন্ট ফ্যাক্টরির রাজস্ব আয় হয়েছে ৫১১ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব আয় ছিল ৪৪৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে ৯ গুণেরও বেশি।

গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২২০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আর এ সময়ে কোম্পানিটি গত বছরের লোকসান কাটিয়ে ৭০ কোটি টাকা নিট মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রিমিয়ার সিমেন্ট: জানুয়ারি-মার্চ সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রিমিয়ার সিমেন্টের আয় ১৪ শতাংশ বেড়ে ৩৬৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে আট গুণেরও বেশি। গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেড়ে ৯৫৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে তিন গুণ।

আরামিট সিমেন্ট: জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এই তিন মাসে আরামিট সিমেন্টের রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ কমে ৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অবশ্য এ সময়ে কোম্পানিটি আগের বছরের লোকসান কাটিয়ে ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে। এদিকে গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ কমে ১৫৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

হাইডেলবার্গ সিমেন্ট: চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে হাইডেলবার্গ সিমেন্টের বিক্রি হয়েছে ৫৫০ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ৩৮২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১০ গুণের বেশি।

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ: জানুয়ারি-মার্চ সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের রাজস্ব আয় ২৩ শতাংশ বেড়ে ৬৩১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১০৩ কোটি টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা হয়েছিল ৫২ কোটি টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৯৮ শতাংশ।

মূলত বাজারে নতুন সিমেন্ট আনার পাশাপাশি চুনাপাথর চিপের ব্যবসা থেকে আয় যোগ হওয়ার কারণে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে। এছাড়া প্রচলিত সিমেন্টের ব্যবসায়ও প্রবৃদ্ধি হয়েছে কোম্পানিটির।

কনফিডেন্স সিমেন্ট: কনফিডেন্স সিমেন্টের পরিচালনা পর্ষদ প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই–সেপ্টেম্বর, ২০২০) অনিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) আগের হিসাব বছরের চেয়ে বেড়েছে। এ সময়ে পণ্য বিক্রি ১৫ শতাংশ বাড়লেও সুদ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় কনফিডেন্স সিমেন্টের নিট মুনাফা বেড়েছে ২৪৬ শতাংশ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছরের প্রথম তিন মাসে বাজারে সিমেন্টের চাহিদা বেশ ভালো ছিল। পাশাপাশি ব্যাংকের সুদের হার কমে যাওয়ার কারণে কোম্পানিগুলোর আর্থিক ব্যয় আগের তুলনায় বেশ কমে গেছে। ফলে ব্যবসা বাড়ার পাশাপাশি ব্যয় কমে যাওয়ার কারণে এ সময়ে কোম্পানিগুলোর মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

বিএসইসির বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত: পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে জমাকৃত অর্থের বিপরীতে সুদ হিসাবে যে আয় হয়, তা বিনিয়োগকারীদের মাঝে বন্টনের নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সোমবার (২১ জুন, ২০২১) বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে।

নির্দেশনায় বলা হয়, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের জন্য স্টক ব্রোকারের কাছে যে অর্থ জমা দেন সেটি সমন্বিত গ্রাহক হিসাব নামে একটি আলাদা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা থাকে। জমাকৃত এ অর্থের বিপরীতে যে সুদ আয় আসে তা এতদিন ধরে স্টক ব্রোকারই ভোগ করে আসছিল।

তবে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রণয়ন করা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বিধিমালা ২০২০-এ সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের সুদ আয় স্টক ব্রোকারের নয়, বরং গ্রাহককে আনুপাতিক হারে বণ্টন করার কথা বলা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২১ জুন নির্দেশনা জারির মাধ্যমে বিষয়টির স্পষ্টীকরণ করেছে বিএসইসি।

জানা যায়, ২০২০ সালের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বিধিমালার বিধি ৬-এর ১ উপবিধি অনুসারে, নিবন্ধিত স্টক ব্রোকারদের সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে থাকা অর্থের বিপরীতে প্রাপ্ত সুদ আয় ব্যাংকের চার্জ পরিশোধের পর গ্রাহকদের মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টন করে দিতে হবে। যদি এক্ষেত্রে সুদ আয় অবণ্টিত থাকে তাহলে তা এক্সচেঞ্জের বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিলে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে স্থানান্তর করতে হবে। গতকাল সোমবার জারি করা বিএসইসির নির্দেশনায় সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের সুদ আয় গণনা ও কীভাবে গ্রাহকদের মধ্যে বণ্টন করা হবে সেটি স্পষ্ট করা হয়েছে।

নির্দেশনা বলা হয়, বার্ষিক হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, ব্যাংক চার্জ ও অন্যান্য বার্ষিক চার্জ বাবদ মোট সুদ মোট আয় থেকে বাদ দিয়ে নিট সুদ আয় হিসাব গণনা করতে হবে। সমন্বিত গ্রাহক হিসাব থেকে কার্যকর সুদ আয়ের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে বার্ষিক নিট সুদ আয়কে সমন্বিত গ্রাহক হিসাবের বার্ষিক ক্রেডিট ব্যালেন্সের ভারিত গড় দিয়ে ভাগ করে যা থাকবে সেটিকে ১০০ দিয়ে গুণ করতে হবে। প্রতি আর্থিক বছর শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে স্টক ব্রোকারকে ক্রেডিট ব্যালেন্সের ভারিত গড়ের ভিত্তিতে কার্যকর সুদহার প্রয়োগ করে যোগ্য গ্রাহকদের মধ্যে নিট সুদ আয় বণ্টন করতে হবে।

বিএসইসির নির্দেশনায় কোন শ্রেণীর গ্রাহকরা সুদ আয়ের অর্থ পাবেন, সেটি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। যদি কোনো আর্থিক বছরের ন্যূনতম এক মাস একজন গ্রাহকের হিসাবে ধারাবাহিকভাবে ১ লাখ টাকার ক্রেডিট ব্যালেন্স থাকে তাহলে তিনি সুদ আয় পাওয়ার যোগ্য হবেন। যদি কোনো গ্রাহকের হিসাবে এক আর্থিক বছরে কমপক্ষে ৫০০ টাকা সুদ আয় জমা হয় তাহলেও তিনি সুদ আয় পাবেন। প্রত্যেক স্টক ব্রোকারকে সমন্বিত গ্রাহক হিসাব পরিচালনা ও সংরক্ষণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি এ হিসাবে থাকা অর্থ স্থায়ী আমানত হিসাবে রাখা যাবে বলে জানিয়েছে বিএসইসি।

৫ কোম্পানির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধিতে ডিএসইর রেড এলার্ট: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ কোম্পানির শেয়ার দর কোনো প্রকার মূল্য সংবেদনশীল তথ্য বা কারণ ছাড়াই বাড়ছে। কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-কে এ তথ্য জানানো হয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো: বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, ম্যাকসন্স স্পিনিং ও প্রাইম টেক্সটাইল লিমিটেড।

ডিএসই জানায়, কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বেশ কিছুদিন ধরেই অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। দর বাড়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে কোম্পানিগুলোকে গত ২১ জুন নোটিশ দেয় ডিএসই। নোটিশের জবাবে কোম্পানিগুলো জানায়, দর বাড়ার অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। কারণ ছাড়াই কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে।

বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার: কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ১৩ জুন ছিল ৫৫ টাকা। ২২ জুন কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ১০৬ টাকা ৯০ পয়সায়। সাত কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৫১ টাকা ৯০ পয়সা বা ৯৪ শতাংশ।

পেপার প্রসেসিংয়: কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ১৩ জুন ছিল ১৭ টাকা ৬০ পয়সা। ২২ জুন কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ টাকা ৯০ পয়সায়। ফলে এই সাত কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৬ টাকা ৩০ পয়সা বা ৯৩ শতাংশ।

তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল: কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ১৩ জুন ছিল ১৩ টাকা ২০ পয়সা। ২২ জুন কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ টাকা ৪০ পয়সায়। ফলে এই ১১ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১২ টাকা ২০ পয়সা বা ৯২ শতাংশ।

ম্যাকসন্স স্পিনিং: কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ১৪ জুন ছিল ১৬ টাকা ৪০ পয়সা। ২২ জুন কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২১ টাকা ১০ পয়সায়। ছয় কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪ টাকা ৭০ পয়সা বা ২৯ শতাংশ বেড়েছে।

প্রাইম টেক্সটাইল: কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ১৪ জুন ছিল ১৮ টাকা ৬০ পয়সা। ২২ জুন কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়ে দাঁড়ায় ২২ টাকা ২০ পয়সায়। সাত কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩ টাকা ৬০ পয়সা বা ১৯ শতাংশ বেড়েছে।

ডিএসই ১২ কোম্পানির শেয়ার বিক্রেতা উধাও: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১২ কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করার মতো কোনো বিনিয়োগকারী নেই। আজ মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালীন সময় কোম্পানিগুলোর শেয়ার বিক্রেতা শূন্য হয়ে যায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্যজানা গেছে। কোম্পানিগুলোর হলো : মনোস্পুল পেপার, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, মালেক স্পিনিং, প্রাইম টেক্সটাইল, ড্রাগন সোয়েটার, ম্যাকসন্স স্পিনিং, হা-ওয়েল টেক্সটাইল, মুন্নু ফেব্রিক্স, এনভয় টেক্সটাইল, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, দেশবন্ধু পলিমার এবং ইয়াকিন পলিমার।

মনোস্পুল পেপার : আগেরদিন মনোস্পুল পেপার শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৯৭.২০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১০৬.৯০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০৬.৯০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৯.৭০ টাকা বা ৯.৯৭ শতাংশ বেড়েছে।

তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল : আগেরদিন তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২৩.১০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ২৫.৪০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫.৪০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৩০ টাকা বা ৯.৯৫ শতাংশ বেড়েছে।

প্রাইম টেক্সটাইল : আগেরদিন প্রাইম টেক্সটাইলের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২০.২০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ২১ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২.২০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ২ টাকা বা ৯.৯০ শতাংশ বেড়েছে।

মালেক স্পিনিং : আগেরদিন মালেক স্পিনিংয়ের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২৬.২০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ২৮.৮০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮.৮০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৬০ টাকা বা ৯.৯২ শতাংশ বেড়েছে।

ড্রাগন সোয়েটার : আগেরদিন ড্রাগন সোয়েটারের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৭.২০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১৭.৬০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮.৯০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৭০ টাকা বা ৯.৮৮ শতাংশ বেড়েছে।

ম্যাকসন্স স্পিনিং : আগেরদিন ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৯.২০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ২১.১০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১.১০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৯০ টাকা বা ৯.৮৯ শতাংশ বেড়েছে।

হা-ওয়েল টেক্সটাইল : আগেরদিন হা-ওয়েল টেক্সটাইলের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩৮.৬০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৩৯.৮০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪২.৪০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩.৮০ টাকা বা ৯.৮৪ শতাংশ বেড়েছে।

মুন্নু ফেব্রিক্স : আগেরদিন মুন্নু ফেব্রিক্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৯.৩০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ২১.২০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১.২০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৯০ টাকা বা ৯.৮৪ শতাংশ বেড়েছে।

দেশবন্ধু পলিমার : আগেরদিন দেশবন্ধু পলিমারের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৩.৫০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১৩.৬০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪.৮০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৩০ টাকা বা ৯.৬৩ শতাংশ বেড়েছে।

এনভয় টেক্সটাইল : আগেরদিন এনভয় টেক্সটাইলের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২৬.৫০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ২৬.৯০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯.১০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ২.৬০ টাকা বা ৯.৮১ শতাংশ বেড়েছে।

পেপার প্রসিসিং : আগেরদিন পেপার প্রসেসিংয়ের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩০.৯০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৩৩.৯০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৩.৯০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩ টাকা বা ৯.৭০ শতাংশ বেড়েছে।

ইয়াকিন পলিমার : আগেরদিন ইয়াকিন পলিমারের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১১.৫০ টাকায়। আজ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১১.৮০ টাকায়। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২.৬০ টাকায়। অর্থাৎ আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.১০ টাকা বা ৯.৫৬ শতাংশ বেড়েছে।

ব্লক মার্কেটে ৩ কোম্পানির লেনদেনের শীর্ষে: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৪৮টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৭৪ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলোর ৯০ লাখ ৩৪ হাজার ৯৪০টি শেয়ার ৮৫ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৭৪ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪ কোম্পানির বিশাল লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৭১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকার।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ১৭ কোটি ৭৯ লক্ষ ২৬ হাজার টাকার, তৃতীয় সর্বোচ্চ জেনেক্স ইনফোসিসের ৬ কোটি ৬৩ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকার, চতুর্থ সর্বোচ্চ পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

তাছাড়া, মালেক স্পিনিংয়ের ৩ কোটি ২৩ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১ কোটি ৯৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার, জিবিবি পাওয়ারের ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ১ কোটি ১৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকার, এস আলমের ১ কোটি ২ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার, ডাচ বাংলা ব্যাংকের ৮৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, দেশবন্ধুর ৭ লক্ষ টাকার, ফারইস্ট লাইফের ৬৮ লক্ষ টাকার, গ্রীন ডেল্টার ৫৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ৫৩ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকার, ইফাদ অটোর ৪৮ লক্ষ ১৪ হাজার টাকার,

এনআরবিসি ব্যাংকের ৩৮ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার, ড্রাগন সোয়েটারের ৩৪ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকার, সালভো কেমিক্যালের ৩০ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার, একমি ল্যাবের ৩০ লক্ষ ১৩ হাজার টাকার, কাট্টালি ইন্স্যুরেন্সের ২৭ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার, মেঘনা লাইফের ২৭ লক্ষ টাকার, আমান কটনের ২৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, নেশনাল হাউসিংয়ের ২৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকার, মারিকোর ২১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার, মোজাফ্ফর হোসেন স্পিনিংয়ের ২০ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার, ওরিয়ন ফার্মার ২০ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ২০ লক্ষ ২৬ হাজার টাকার,

সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ১৯লক্ষ ৭১ হাজার টাকার, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার, আমান ফিডের ১৬ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকার, কর্ণফুলীর ১৩ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকার, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের ১০ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকার, সোনার বাংলা ইন্সুরেন্সের ১০ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকার, এফবিএফআইএফের ৯ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকার, পিপলস ইন্সুরেন্সের ৯ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিড মিলের ৮ লক্ষ ২ হাজার টাকার, ডেল্টা লাইফের ৭ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকার, কেয়া কসমেটিকের ৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার, বেক্সিমকোর ৭ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকার,

সী-পার্লের ৭ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকার, তাকাফুল ইন্স্যুরেন্সের ৬ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকার, ফারইস্ট নিটিংয়ের ৬ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার, রূপালী লাইফের ৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার, মার্কেনটাইল ইন্স্যুরেন্সের ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার, সাফকো স্পিনিংয়ের ৫ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৫ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকার, ই-স্কয়ার নিটিংয়ের ৫ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকার, ই-জেনারেশনর ৫ লক্ষ ২৪ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

ঝুঁকিতে ইভ্যালির সাথে লেনদেন, সম্পদের চেয়ে ৬ গুণ বেশি দেনা: অনলাইনভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান (ই-কমার্স) ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সম্পদের চেয়ে ৬ গুণের বেশি এই দেনা পরিশোধ করার সক্ষমতা কোম্পানিটির নেই বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে সম্প্রতি ইভ্যালি.কম.বিডি-এর ওপর পরিচালিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত ১৭ জুন (বৃহস্পতিবার) প্রতিবেদনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ইভ্যালির চলতি দায় ও লোকসান দুটিই ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। কোম্পানিটি চলতি দায় ও লোকসানের দুষ্ট চক্রে বাঁধা পড়ছে উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ‘ক্রমাগতভাবে সৃষ্ট দায় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব টিকে না থাকার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।’

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ইভ্যালি চলতি বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত পণ্যমূল্য বাবদ গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা নিয়ে কোনো পণ্য সরবরাহ করেনি। অন্যদিকে তারা যেসব কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য কেনে, তাদের কাছে ইভ্যালির বকেয়া ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ইভ্যালির চলতি সম্পদ দিয়ে গ্রাহক ও পাওনাদারদের বকেয়া অর্থের মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ পরিশোধ করা সম্ভব। বাকি প্রায় ৮৪ শতাংশ বা ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকার সমপরিমাণ দায় অপরিশোধিত থেকে যাবে। ইভ্যালির চলতি সম্পদের স্থিতি দিয়ে শুধু গ্রাহক দায়ের এক-তৃতীয়াংশেরও কম পরিশোধ করা সম্ভব হবে।

২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালির মোট আয় (রেভিনিউ) ২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির বিক্রয় ব্যয় হয়েছে ২০৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, কোম্পানিটি প্রতি এক টাকা আয়ের জন্য তিন টাকা ৫৭ পয়সা বিক্রয় ব্যয় করেছে বলে স্টেটমেন্টে দেখিয়েছে এবং এই অস্বাভাবিক ব্যয়ের বিষয়ে সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ইভ্যালির চলতি দায় ও লোকসান দুটিই ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। কোম্পানিটি চলতি দায় ও লোকসানের দুষ্ট চক্রে বাঁধা পড়েছে উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ‘ক্রমাগতভাবে সৃষ্ট দায় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব টিকে না থাকার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, কোম্পানিটি শুরু থেকেই লোকসান করে আসছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লোকসানের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইভ্যালি আগের দায় পরিশোধ এবং লোকসান আড়াল করার জন্য বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফারের (যেমন-সাইক্লোন, আর্থকোয়েক ইত্যাদি নামে মূলত ব্যাপক হ্রাসকৃত মূল্যে বা লোকসানে পণ্য সরবরাহ) মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে তাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে।

প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ ও দায়ের ব্যবধান অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ক্রমাগত নতুন দায় সৃষ্টির (গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে দায় বৃদ্ধি) মাধ্যমে পুরাতন দায় পরিশোধের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে। এজন্য নতুন গ্রাহক আকৃষ্ট করতে আরও বেশি হারে ডিসকাউন্ট বা অফার করে যাচ্ছে। এতে সম্পদ ও দায়ের ব্যবধান আরও বাড়ছে।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৪ লাখ ৮৫ হাজার ২৩৪ জন। ক্রয়াদেশ বাতিল, ইভ্যালির দেওয়া ক্যাশব্যাক, বিক্রিত গিফটকার্ডের সমন্বয়ে এসব গ্রাহকদের ভার্চুয়াল আইডিতে (অ্যাকাউন্ট, হোল্ডিং, গিফটকার্ড, ক্যাশব্যাক) মোট ৭৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা মূল্যমানের ই-ভ্যালু সংরক্ষিত ছিল। অথচ ওই দিন (২৮ ফেব্রুয়ারি) ইভ্যালি.কম.বিডির ১০টি ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ২.০৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, লোকসানে পণ্য বিক্রি করার কারণে ইভ্যালি গ্রাহক থেকে অগ্রিম মূল্য নেওয়ার পরও মার্চেন্টদের কাছে তাদের বকেয়া অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। গ্রাহক ও মার্চেন্টের বকেয়া ক্রমাগত বাড়ার কারণে এক সময় বিপুল সংখ্যক গ্রাহক ও মার্চেন্টের পাওনা অর্থ না পাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে এবং এর ফলে সার্বিকভাবে দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলের দেওয়া ইভ্যালির স্টেটমেন্ট অব ফাইন্যান্সিয়াল পজিশনের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ মার্চ তারিখে ইভ্যালির মোট দায় (ইক্যুইটি বাদে) অপেক্ষা মোট সম্পদের ঘাটতি ৩১৫.৪৯ কোটি টাকা, চলতি দায় (ইক্যুইটি বাদে) অপেক্ষা চলতি সম্পদের ঘাটতি ৩৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ইভ্যালির মোট সম্পদ প্রতিষ্ঠানটির মোট দায়ের মাত্র ২২.৫২ শতাংশ এবং চলতি সম্পদের পরিমাণ চলতি দায়ের মাত্র ১৬.০১ শতাংশ। কোম্পানিটির ১ কোটি টাকার শেয়ার মূলধনের বিপরীতে ২৬.৫১ কোটি টাকার স্থায়ী সম্পদ রয়েছে, কিন্তু কোনো দীর্ঘমেয়াদি দায় নেই।

এ বিষয়ে জানতে ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়, লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও কোনো উত্তর দেননি তিনি।

বিমাকে হটিয়ে হঠাৎ বস্ত্র খাতে সুবাতাস: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৭ কোটি লাখ টাকা। এর মধ্যে বস্ত্র খাতে লেনদেন হয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা। আর বিমা খাতে লেনদেন হয়েছে ৩১৩ কোটি টাকা। লেনদেনের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন থাকা বীমা খাতকে হটিয়ে আজ বস্ত্র খাত ড্রাইভিং সিটে বসে পড়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, আজ আগেরদিনের ধারাবাহিকতায় উত্থান প্রবণতায় উভয় বাজারে লেনদেন শুরু হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর উত্থাণ প্রবণতা টিকেনি। সময় যতোই গড়াচ্ছিল, গ্রীণজোন থেকে রেডজোনের তালিকায় ততোই বাড়ছিল। তারপর আবারও গ্রীণজোনের পাল্লা ভারি করার চেষ্টা চলে উভয় বাজারে। কিন্তু সেই চেষ্টাও টিকেনি। শেষ পর্যন্ত সেল প্রেসারের কারণে রোডজোনের পাল্লাই ভারি হয়।

তবে লেনদেনের শুরু থেকে আজ আগেরদিনের মত্রে বস্ত্র খাতের শেয়ারে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। লেনদেনের প্রথম প্রহরেই এখাতের অনেক শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে লেনদেন করতে থাকে। কোম্পানিগুলোর লেনদেনেও বড় উল্লম্ফন দেখা যায়। খাতটির শেয়ারে এই ক্রেজ লেনদেনের শেষ পর্যন্ত থাকতে দেখা যায়।

আজ বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৪৭টি বা ৮০ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। কমেছে ৮টি বা ১৩ শতাংশ কোম্পানির। অপরিবর্তিত রয়েছে চারটি বা সাত শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। ডিএসইতে আজ দর বৃদ্ধির তালিকায় একক রাজত্ব ছিল বস্ত্র খাতের কোম্পানির। ডিএসইর দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে ৯টিই ছিল বস্ত্র খাতের।

অন্যদিকে, লেনদেনের শুরুতে বিমা খাতের শেয়ারে চাঙ্গাভাব উঁকিঝুকি দিলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। লেনদেনের আধা ঘন্টার মধ্যেই এখাতের শেয়ার রেডজোনে ফিরতে শুরু করে। এ প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্তদেখা যায়। আজ বিমা খাতে লেনদেন হওয়া ৪৮টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৮৯ শতাংশ বা ৪৬টি কোম্পানির। দর বেড়েছে ১১ শতাংশ বা ৪টি কোম্পানির। ডিএসইতে আজ দর পতনের তালিকা জুড়ে ছিল বিমা খাতের শেয়ার। ডিএসই দর পতনের শীর্ষ তালিকার ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৮টিই ছিল বিমা খাতের।

সিমেন্ট খাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের হিড়িক:  পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে। তা দেখে নতুন করে এই খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার কিনছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বীমা, প্রকৌশল এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের দামের তুলনায় সিমেন্ট খাতের কোম্পানির মুনাফা ভালো, শেয়ারের দামও কম। তাই ঝুঁকিমুক্তভাবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সিমেন্ট কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছেন।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক কমিশনার ও আইডিএলসির সাবেক এমডি আরিফ খান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল শেয়ার কেনেন। কোম্পানির মুনাফা হবেই এমন তথ্য জেনে বিনিয়োগ করেন। এটা বাজারের জন্য পজিটিভ।

ডিএসইর তথ্য মতে, চলতি বছরে ৩০ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে এসব কোম্পানির সর্বনিম্ন দশমিক ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন বিনিয়োগকারীরা। বেশির ভাগ শেয়ার বিক্রি করেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ডিএসইর তথ্য মতে, ৩০ এপ্রিল আরমিট সিমেন্টে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। সেখান থেকে প্রায় ৩ শতাংশ বেড়ে ৩১ মে পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ। ১৯৯৮ সালে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার।

একইভাবে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ে কনফিডেন্স সিমেন্টে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ। এর আগের মাস অর্থাৎ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের ছিল ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ শেয়ার। এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে ৪ শতাংশ বেশি শেয়ার কিনেছেন। কোম্পানিটির মোট শেয়ার রয়েছে সাত কোটি ৮২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৩১টি।

কোম্পানিটি ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ নগদ এবং ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগের বছরও ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছি। ১৯৯৫ সালের তালিকাভুক্ত মেঘনা সিমেন্ট মিলসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার রয়েছে ৩৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এক মাস আগে যা ছিল ৩৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। অর্থাৎ ১ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।

২ কোটি ৭২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৬০টি শেয়ারধারীদের জন্য ২০২০ সালে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নগদ আর ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার। এমআই সিমেন্ট প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার সংখ্যা ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এর আগে ছিল ১৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের নগদ ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।

প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলসের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার রয়েছে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ। এর আগের মাসে যা ছিল ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০১৩ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১০ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজারটি। ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের নগদ ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। তবে একটু বিপরীত চিত্র দেখা গেছে বহুজাতিক দুই কোম্পানি লাফার্জহোলসিম লিমিটেড এবং হাইডেলবার্গ সিমেন্ট লিমিটেডের ক্ষেত্রে। দুটি কোম্পানির মধ্যে হাইডেলবার্গ সিমেন্টের মোট ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৩ হাজার ৫৯০টি শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ২৭ দশমিক ০৯ শতাংশ শেয়ার। এক মাস যা ছিল ২৭ দশমিক ১১ শতাংশ। অর্থাৎ সামান্য কমেছে।

একই চিত্র লাফার্জহোলসিমেও। বর্তমানে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার রয়েছে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এর আগের মাসে ছিল ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০০৩ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ারের সংখ্যা ১১৬ কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০টি। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।

এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সবগুলো প্রতিষ্ঠানের মুনাফা বেড়েছে দ্বিগুণ। পণ্য বিক্রিতে বড় অঙ্কের প্রবৃদ্ধির হয়েছে। বিদায়ী প্রান্তিকে সবচেয়ে ভালো মুনাফা করেছে সিমেন্ট খাতের বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ ও হাইডেলবার্গ সিমেন্ট। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের তিন মাসে পণ্য বিক্রিতে লাফার্জের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৩ শতাংশ। তাতে প্রকৃত মুনাফা বেড়েছে লাফার্জহোলসিমের দ্বিগুণ।

একই সময়ে অপর বহুজাতিক কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্টের পণ্য বিক্রিতে বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। তাতে কোম্পানিটির প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ৪৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এর ফলে ২০১৯ সালে লোকসানে থাকা কোম্পানিটি ভালো মুনাফায় ফিরেছে। দেশীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুনাফা হয়েছে এমআই সিমেন্টের। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত ‍মুনাফা হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৩১ শতাংশ বেশি।

একই সময়ে কনফিডেন্স সিমেন্টের প্রকৃত মুনাফা বেড়েছে ২৪৬ শতাংশ। ২৫ শতাংশ পণ্য বেশি বিক্রি হওয়া মেঘনা সিমেন্টের প্রকৃত মুনাফা বেড়েছে ৬৬ শতাংশ। এছাড়াও প্রিমিয়ার সিমেন্টের প্রকৃত মুনাফা বেড়েছে ৭৬৬ শতাংশ। আর পাঁচ বছর পর মুনাফায় ফিরেছে আরামিট সিমেন্ট।

পুঁজিবাজারের যে কোন প্রয়োজনে পাশে থাকবে এফবিসিসিআই: পুঁজিবাজারের যে কোন প্রয়োজনে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সংগঠনটির নন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে এই আশ্বাস দেন পুঁজিবাজারের ব্রোকারদের শীর্ষ সংগঠন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে (ডিবিএ)।

সংগঠনটির কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সোমবার ২১ জুন,প্রেসিডেন্ট শরীফ আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ডিবিএ পরিচালনা পর্ষদের একটি প্রতিনিধি দল এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিনের সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাত করে। সভায় ডিবিএর পক্ষ থেকে এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্টকে ফুলেল শুভেচ্ছাসহ অভিনন্দন জানানো হয়।

বৈঠকে উভয় সংগঠনের প্রতিনিধিদের মধ্যে দেশের শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির পাশাপাশি পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ আলাপ ও মতবিনিময় হয়। শরীফ তার বক্তব্যে দেশের শিল্প অর্থনৈতিক বিকাশে পুঁজিবাজারের গুরুত্ব ও ভূমিকার কথা তুলে ধরেন এবং এর উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে তার এবং তার সংগঠনের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের পাশাপাশি দেশের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন সাধনে ডিবিএ অতীতের ন্যয় ভবিষ্যতেও এফবিসিসিআইর সাথে একযোগে কাজ করে যাবে। জসিম উদ্দিন ডিবিএর প্রেসিডেন্টসহ সকল প্রতিনিধিদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং পুঁজিবাজারের যে কোন প্রয়োজনে তার এবং তার সংগঠনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।