দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৬৮৩ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১০ কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৩২ কোটি ৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। যা ডিএসই লেনদেনের ২৩.৮৪ শতাংশ। অর্থাৎ সপ্তাহজুড়ে ১০ কোম্পানির কব্জায় ছিল ডিএসই মোট লেনদেনের ২৩.৮৪ শতাংশ। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো- বেক্সিমকো লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স, সাইফ পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, আইএফআইসি ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, ন্যাশনাল ফিড মিল।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে লেনদেনের প্রথম স্থানে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৫২৩ কোটি ৫৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ৬.৮১ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৫ কোটি ৯৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭০১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড। কোম্পানিটির ৮ কোটি ২৯ লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৫টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২১৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ২.৭৯ শতাংশ।

লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লেনদেনের তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৪ কোটি ৫৯ লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৬৫ কোটি ৩৮ লাখ ৪ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ২.১৫ শতাংশ।

এআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লেনদেনের তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৪ কোটি ৮১ লাখ ৩১ হাজার ৭০৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৬৪ কোটি ২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ২.১৩ শতাংশ।

পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স লেনদেনের তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ১ কোটি ৩০ লাখ ৩৬ হাজার ৮৬৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৫৭ কোটি ৯০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ২.১৫ শতাংশ।

সাইফ পাওয়ার লেনদেনের তালিকার ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৫ কোটি ৯৫ লাখ ৩৩ হাজার ৭২২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৫৫ কোটি ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ২.০৩ শতাংশ।

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো লেনদেনের তালিকার সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ২১ লাখ ৭০ হাজার ৪১৩টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১২১ কোটি ৪৫ লাখ ১৩ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ১.৫৮ শতাংশ।

আইএফআইসি ব্যাংক লেনদেনের তালিকার অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৭টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১১১ কোটি ৫২ লাখ ১২ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ১.৪৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল লেনদেনের তালিকার নবম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৬০ লাখ ৮২ হাজার ১৩টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১১১ কোটি ৩৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ১.৪৫ শতাংশ।

ন্যাশনাল ফিড মিল লেনদেনের তালিকার দশম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৩ কোটি ৬ লাখ ৩২ হাজার ৪৪৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১০৬ কোটি ৭৪ লাখ ৪২ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ কোম্পানির অংশগ্রহণ ছিল ১.৩৯ শতাংশ।

ডিএসইতে সপ্তাহজুড়ে মুলধন বাড়ল ৩ হাজার কোটি টাকা: দুদিন উত্থান আর দুদিন দরপতনের মধ্য দিয়ে নতুন অর্থবছরের প্রথম সপ্তাহ পার করল দেশের পুঁজিবাজার। আলোচিত সপ্তাহে সূচক, বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম এবং লেনদেনও বেড়েছে। আর তাতে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। একই অবস্থায় লেনদেন হয়েছে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও।

ডিএসইর তথ্যমতে, বিদায়ী সপ্তাহে (০৫ জুলাই-৮ জুলাই) ডিএসইতে মোট চার কার্যদিবসে ৬ হাজার ৪১০ কোটি ৭০ লাখ ৭৩ হাজার ৩৮৮ টাকা লেনদেন হয়েছে; যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৭৮৬ কোটি ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫৫ টাকা বেশি। শতাংশের হিসেবে ১৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেশি। এর আগের সপ্তাহেও চার কার্যদিবসে লেনদেনে হয়েছিল ৫ হাজার ২৪ কোটি ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ৬৩৩ টাকা।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩০টির, কমেছে ১৩৬টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টি কোম্পানির শেয়ার দাম। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছিল ১৯৭টির, কমেছিল ১৬২টির, অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির।

বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ৬২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৬ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৩৯ পয়েন্ট বেড়েছে।

বেশিরভাগ শেয়ারের দাম ও সূচক বাড়ায় ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বা বাজার মূলধন ২ হাজার ৯০০ কোটি ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩০ টাকা বেড়ে ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৮২ কোটি ১৮ লাখ ৬৫৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮২ কোটির ১৩ লাখ ৩ হাজার ৮২৯ টাকা।

ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বাড়ার শীর্ষে ছিল সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্স, রেকিট বেনকিজার, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস, আমান ফিড, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, এপোলো ইস্পাত, ইনফরমেশন সার্ভিসেন, বিকন ফার্মা, আইটি কনসালটেন্ট এবং সিলকো ফার্মাসিটিউক্যালস লিমিটেড।

লেনদেনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে- বেক্সিমকো লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম, কেয়া কসমেটিকস, এমএল ডাইং, লঙ্কা বাংলা ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফিড মিলস, আমান ফিড, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, ম্যাক্সনস স্পিনিং মিলস এবং ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২৮৬ কোটি ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৯৪০ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩৮৬ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৪ টাকা। অর্থাৎ আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন কমেছে।

লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২১৩টির, কমেছে ১১২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এতে সিএসইর প্রধান সূচক ২০৬ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসই মার্কেট লিডারে তালিকায় নতুন ৪ কোম্পানি: সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মার্কেট মুভার বা টার্নওভার লিডারের তালিকায় উঠে এসেছে নতুন ৪ কোম্পানি । এরা ডিএসই মার্কেট মুভার বা টার্নওভার লিডারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কোম্পানিগুলো হলো: কেয়া কসমেটিকস, এমএল ডায়িং, আমান ফিড ও আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং।

আলোচ্য সপ্তাহে টার্নওভার বৃদিধর সঙ্গে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরও বেড়েছে। এছাড়া মুভার বা টার্নওভার লিডারের তালিকায় ছিলেন যারা বেক্সিমকো লিমিটেড, লাফার্জ হোলসিম, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফিড, আমান ফিড, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, ম্যাকসন্স স্পিনিং, ডেল্টা লাইফ। ডিএসই সুত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বড় বিনিয়োগকারীদের বাই প্রেসার বেশি ছিল। সে কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ছিল। আগামী সোমবার থেকে কোম্পানিগুলোর শেয়ারে যদি বড় বিনিয়োগকারীরা বাই মুডে থাকেন, তাহলে হয়তো দর বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। আর যদি সেল মুডে থাকেন, তাহলে কোম্পানিগুলোর দর সংশোধনে ফিরবে।

কেয়া কসমেটিকস: গেল সপ্তাহে কেয়া কসমেটিকসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩৬ কোটি ৫১ লাখ ৭২ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো তৃতীয়। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৮ টাকা ৬০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ৯ টাকা ৪০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে এর দর বেড়েছে ৮০ পয়সা বা ৯.৩০ শতাংশ।

এমএল ডায়িং: গেল সপ্তাহে লুব এমএল ডায়িংয়ের লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি ৭৯ লাখ ১৮ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো চতুর্থ। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ২৯ টাকা ১০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ৩১ টাকা ৭০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে দর বেড়েছে ২ টাকা ৬০ পয়সা বা ৮.৯৩ শতাংশ।

আমান ফিড মিল: গেল সপ্তাহে আমান ফিড মিলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৭ কোটি ১৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো সপ্তম। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ৫৩ টাকা ৪০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ৬৬ টাকা ৪০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে দর বেড়েছে ১৩ টাকা বা ২৪.৩৪ শতাংশ।

আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং: গেল সপ্তাহে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৪ কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকার। সাপ্তাহিক লেনদেনের তালিকায় এই কোম্পানির অবস্থান ছিলো অষ্টম। বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির উদ্বোধনী দর ছিল ১১ টাকা ৯০ পয়সা। আর শেষ কার্যদিবসে ক্লোজিং দর হয়েছে ১৩ টাকা ৬০ পয়সা। আগের সপ্তাহের চেয়ে দর বেড়েছে ২ টাকা ৩০ পয়সা বা ১৪.২৯ শতাংশ।

RSI অনুযায়ি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে ১০ কোম্পানি: সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১০টি কোম্পানির শেয়ার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে উঠে এসেছে। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে কোম্পানিগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।

কোম্পানিগুলো হলো-আমান ফিড, আনোয়ার গ্যালভেনাইজিং, বিআইএফসি, সিএন্ডএ টেক্সটাইল, এক্সিমব্যাংকফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ফ্যামিলি টেক্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, আইএসএন, পেপার প্রসেসিং ও টমিজউদ্দিন টেক্সটাইল লিমিটেড।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস কী: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ উপযোগী শেয়ার কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ার নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন নির্দেশক (Indicator) ব্যবহার করে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে ট্যাকনিক্যাল ইনডিকেটর (Technical Indicator) ও ফান্ডমেন্টাল ইনডিকেটর (Fundamental Indecator)। টেকনিক্যাল ইনডিকেটরের মধ্যে Relative Strength index অথবা(RSI)। RSI ইনডিকেটর হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস।

RSI-এর মাধ্যমে সহজেই বিনিয়োগ উপযোগী শেয়ার খুঁজে বের করা যায়। ঠিক তেমনি RSI-এর মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারও সনাক্ত করা যায়। RSI ইন্ডিকেটরটি বাজারের overbought ও oversold অবস্থান নির্দেশ করে। এর স্কেলমান শুন্য হতে ১০০ পর্যন্ত হয়। সাধারণত ২০ এর নিচের শেয়ার oversold এবং ৮০ এর উপরে শেয়ার overbought নির্দেশ করে। সাধারণত oversold অবস্থায় বড় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার buy (কেনা) এবং overbought অবস্থায় বড় বিনিয়োগকারীদের sell pressure (বিক্রির চাপ) নির্দেশ করে থাকে।

তবে অনেক ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও হয়। যদি কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য থাকে, সেক্ষেত্রে RSI অকার্যকর হয়। মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের ভিত্তিতে নিজস্ব গতিতে শেয়ার দর উঠা-নামা করে।

আবার যদি কোন শেয়ারের পেছনে বড় হাত থাকে বা স্মার্ট মানি থাকে, সেক্ষেত্রেও RSI সাধারণত অকার্যকর হয়। তবে সাধারণ নিয়মে যেসব কোম্পানির শেয়ার দর যদি RSI-এর নিচের পর্যায়ে থাকে বা oversold অবস্থায় থাকে, তাহলে সেসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ নিরাপদ মনে করা হয়। আবার যেসব কোম্পানির শেয়ার দর RSI-এর উচ্চ পর্যায়ে থাকে বা overbought অবস্থায় থাকে, সেসব কোম্পানিতে আপাতত বিনিয়োগ না করে ‘ওয়েট অ্যান্ড সি’ পলিসি অনুসরণ করার পরামর্শ দেয়া হয়। এতে করে পুঁজি নিরাপদ থাকে।

তবে শেয়ার দর যখন বাড়তে বা কমতে থাকে RSI ইনডিকেটরের সঙ্গে দরের সামঞ্জস্যতা পরিবর্তন হয়। তখন দেখা যায় overbought অবস্থায় RSI শেয়ারটির জন্য নতুন space তৈরি করে দেয়। উল্লেখ্য, RSI ইনডিকেটর অনুযায়ি শেয়ার কেনা-বেচা করতে হবে, এমন কোন স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম বা বাধ্যবাধকতাও নেই। তবে RSI ইনিডিকেটর অনুসরণ করলে পুঁজির সমূহ ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং লাভবান হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

কোম্পানিগুলোর নাম, সর্বশেষ দর এবং RSI অবস্থান নিচে দেয়া হল:

সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১৬ খাতের বিনিয়োগকারীরা: বিদায়ী সপ্তাহে একদিন লেনদেন কম হলেও পুঁজিবাজারে উত্থান হয়েছে। বেড়েছে সূচক, বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর, বেড়েছে লেনদেনও। ইবিএল সিকিউরিটিজের সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গেল সপ্তাহে ডিএসইর ২০ খাতের মধ্যে ১৬ খাতের শেয়ার দর বেড়েছে। দর বাড়াতে এই ১৬ খাতের বিনিয়োগকারীরা সাপ্তাহিক রির্টানে ভালো মুনাফায় রয়েছেন। খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুনাফা পেয়েছেন পাট খাতের বিনিয়োগকারীরা। এ খাতের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছেন ৬.৩০ শতাংশ। এরপর মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বিনিয়োগকারীরা সর্বোচ্চ মুনাফা পেয়েছেন ৬.২০ শতাংশ।

এছাড়া, পেপার খাতে ৫.৮০ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে ৪.৭০ শতাংশ, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৪.৭০ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ৩.২০ শতাংশ, বিবিধ খাতে ৩.১০ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ২.৫০ শতাংশ, সেবা খাতে ২.১০ শতাংশ, সিরামিক খাতে ১.৪০ শতাংশ, ট্যানারী খাতে ১.২০ শতাংশ, আর্থিক খাতে ১.১০ শতাংশ, জ্বালানি খাতে ০.৮০ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ০.৪০ শতাংশ, প্রকৌশল খাতে ০.৩০ শতাংশ এবং টেলিকম খাতে ০.২০ শতাংশ মুনাফা পেয়েছেন।

ডিজিটাল সাবমিশন সফটওয়্যার ডিএসই’র নতুন মাইলফলক: চেয়ারম্যান: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ‘ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডিসেমিনেশন সফটওয়্যার’ উদ্বোধনের মাধ্যমে নতুন মাইলফলক অর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ডিএসই’র চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এর ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডিসেমিনেশন প্লাটফর্ম এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সফটওয়্যারটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।

সভাপতির বক্তব্যে ইউনুসুর রহমান বলেন, ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী ডিএসই নিজেই শুরু করেছিল ইনফরমেশন ডিসক্লোজারি সিস্টেম। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনার আলোকে আমরা এই সফটওয়্যারটির কার্যক্রম শুরু করি আজ তার পূর্ণতা পেল। এটি দেশের পুঁজিবাজারের অনেক কাজে লাগবে। অনেক কাজকে সহজ করে দিবে। এই সফটওয়্যারটির মাধ্যমে সবাই উপকৃত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধান অতিথির পরামর্শের আলোকে সফটওয়্যারের সঙ্গে সিসিএ অ্যাকাউন্ট সন্নিবেশিত করার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজে সমন্বিত গ্রাহক হিসেবে (সিসিএ) অনেক সমস্যা হয়। তাই সমস্যা হওয়ার আগেই আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। সমস্যা হয়ে যাওয়ার পরে এ সম্পর্কে জেনে কোন লাভ হয়না।

এ সময় কোম্পানীগুলোর একেবারে খারাপ অবস্থা হওয়ার আগেই ‘ডিএসই’ যাতে জানতে পারে এমন কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায় কি না সেটি নিয়ে পর্যালোচনা করতে আইটি বিভাগকে নির্দেশনা দেন চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান। কোন তথ্য সংগ্রহ করলে কোম্পানীগুলোর অভ্যন্তরীন অবস্থা খারাপ হতে শুরু করলেই বিষয়টি বুঝতে পারা যাবে এমন উপায় বেড় করতে বলেন তিনি।

ডিএসই’র ডেপুটি জেলারেল ম্যানেজার সাইদ মাহমুদ জুবায়ের এর সঞ্চালনায় আয়োজিত ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ডিএসই’র ভারপ্রাপ্ত এমডি আব্দুল মতিন পাটওয়ারী, সিটিও জিয়াউল করিম, সিআরও মো. আব্দুল লতিফ, ম্যানেজার মো. রবিউল ইসলামসহ ডিএসইর অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেন।

পাঁচ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিগুলো তাদের প্রান্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। কোম্পানিগুলো হলো: সিঙ্গারবিডি, ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড ও গ্রামীনফোন।

সিঙ্গারবিডি: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আগামী ১৪ জুলাই বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ১ টাকা ৮১ পয়সা।

ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আগামী ১৪ জুলাই বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।
সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় কোম্পানিটির ৩১ মার্চ,২০২১ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ২১ পয়সা।

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আগামী ১৪ জুলাই বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৮৯ পয়সা।

এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এনসিসি ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আগামী ১৮ জুলাই বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৫৫ পয়সা।

গ্রামীণফোন লিমিটেড: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটির পর্ষদ সভা আগামী ১৪ জুলাই দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন,২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। পর্ষদ আলোচিত প্রতিবেদন অনুমোদন করলে তা প্রকাশ করবে কোম্পানিটি। আগের প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৬ টাকা ৬০ পয়সা।

ডিএসই পাঁচ খাতের লেনদেনের উল্লম্ফন: আগের দুই দিন সংশোধনের পথে থাকলেও সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) উত্থানে ফিরেছে পুঁজিবাজার। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। তবে সূচক বাড়লেও টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা কমেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আজ ডিএসইতে আগের দিন থেকে ৮৬ কোটি টাকা কম লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৫৭৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার। আজ লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৯১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। তবে আজ লেনদেন কমে গেলেও পাঁচ খাতে লেনদেন বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে ডিএসই আজ লেনদেনে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। খাতগুলো হলো- ওষুধ ও রসায়ন, বিমা, প্রকৌশল, সিমেন্ট এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত।

ওষুধ ও রসায়ন :ওষুধ ও রসায়ন খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ১৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয়েছে ১১৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ২৭.৫০ শতাংশ।

বিমা :বিমা খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৯০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয়েছে ৬৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ২৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা বা ৩৫.৫৩ শতাংশ।

প্রকৌশল :প্রকৌশল ফান্ড খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৯৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ২১ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ২৯.২২ শতাংশ।

সিমেন্ট :সিমেন্ট খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয়েছে ৩৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ১১ কোটি টাকা ৬০ লাখ টাকা বা ৩০.৭৬ শতাংশ।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি :বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আজ লেনদেন হয়েছে ৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন হয়েছে ৫১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আজ লেনদেন বেড়েছে ৮ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ১৫.৬৬ শতাংশ।

এশিয়া প্যাসেফিক ইন্সুরেন্সের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বাড়ছে: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি এশিয়া প্যাসেফিক ইন্সুরেন্স লিমিটেড ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। দুই প্রান্তিকে (জানুয়ারি-জুন’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৯৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৫১ পয়সা।

৩০ জুন, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ২২ টাকা ৭৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ২১ টাকা ১৭ পয়সা। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো হয়েছে ২ টাকা ৩৯ পয়সা। আগের বছর যা ছিল ১ টাকা ৭১ পয়সা।

সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন আসছে: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেসরকারি খাতের অন্যতম বৃহৎ কোম্পানি সাউথইস্ট অবশেষে চেয়ারম্যান পদটিতে এই পরিবর্তন আসছে বলে কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে। গত বুধবার ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তনের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গত ১৭ বছর যাবত টানা সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করছেন আলমগীর কবির। ২০০৪ সাল থেকে চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। পেশাদার হিসাববিদ আলমগীর কবির পরিচালক হিসেবে ২০০২ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের পর্ষদে যুক্ত হয়েছিলেন। এর পর থেকে তার একক কর্তৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে ব্যাংকটি।

তবে দীর্ঘদিন ধরে সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে থাকা আলমগীর কবিরের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব সম্প্রতি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। আপত্তি উঠেছে একই ব্যক্তি বছরের পর বছর চেয়ারম্যান পদে থাকা নিয়েও। বিষয়টি নিয়ে আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন ব্যাংকটির পাঁচজন উদ্যোক্তা পরিচালক।

চেয়ারম্যানের প্রতি অনাস্থার অংশ হিসেবে সম্প্রতি এ উদ্যোক্তারা ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) বয়কট করেন। উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে বিরোধের বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ব্যাংকটির পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় অস্থিরতা তৈরি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (০৭ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এমএ কাশেমসহ অন্য উদ্যোক্তা পরিচালকদের সঙ্গে আলমগীর কবিরের সমঝোতা বৈঠক হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সমঝোতা বৈঠকে ব্যাংকের স্বার্থে দুই পক্ষই নমনীয়তা দেখিয়েছে। দীর্ঘ আলোচনা শেষে চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এমএ কাশেম ও সাবেক চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদের নাম এসেছে। তবে এমএ কাশেমই পরবর্তী চেয়ারম্যান হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এমএ কাশেম বলেন, সাউথইস্ট ব্যাংক আমার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাংকের নামটিও আমার দেয়া। ৫৫ বছর ধরে দেশ-বিদেশে সুনাম ও মর্যাদার সঙ্গে আমি ব্যবসা করেছি। বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনের নেতৃত্বেও ছিলাম। কিন্তু কখনই কোনো বিষয়ে দুর্নাম শুনতে হয়নি। রাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে কাদা ছোড়াছুড়ি আমাদের মানায় না। এজন্য নিজেদের মধ্যে আলোচনার জন্যই বৈঠকে বসেছিলাম। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।

তিনি জানান, তিনজন পরিচালকের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আইন অনুযায়ী এজিএমে পদত্যাগ করে নতুন করে নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিনজনের পরিচালক পদে অনুমোদনের পর পর্ষদ সভা হবে। পর্ষদের সভায় ব্যাংকের মঙ্গলের স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আমরা সবাই সাউথইস্ট ব্যাংকের মঙ্গল চাই।

দেশের দ্বিতীয় প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে সাউথইস্ট ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শিল্পোদ্যোক্তা এমএ কাশেম। এরপর ২০০৪ সাল পর্যন্ত সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে অন্য উদ্যোক্তা পরিচালকরা নিয়মিতভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

পরবর্তী সময়ে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেন শিল্পোদ্যোক্তা ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, রাগীব আলী এবং আজিম উদ্দিন আহমেদ। ২০০২ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত হন পেশাদার হিসাববিদ আলমগীর কবির। ২০০৪ সালে তিনি চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত টানা ১৭ বছর এ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

তবে ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর কবির বলছেন, গত ১৭ বছরে তিনি ব্যাংকটিকে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যাংকে রূপান্তর করেছেন। দীর্ঘ এ সময়ে কেউ কোনোদিন তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি। এখন হঠাৎ করে কেন অন্য পরিচালকরা এ বিষয়ে কথা বলছেন, সে বিষয়ে তিনি জ্ঞাত নন। তিনি বলেন, সাউথইস্ট ব্যাংকের পর্ষদ দেশের বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে সবচেয়ে ভালো পর্ষদ।

ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থানও দেশের শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে পড়ে। মূলধন সক্ষমতা, মুনাফা পরিস্থিতি, আমানত ও বিনিয়োগের পরিমাণসহ বিভিন্ন সূচকে সাউথইস্ট ব্যাংকের অবস্থান বেশ শক্তিশালী। উদ্যোক্তা পরিচালকদের কোনো কথা থাকলে সেটি নিয়ে পর্ষদে আলোচনা হতে পারে। প্রথম মেয়াদের দায়িত্ব পালন শেষেই আমি চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিচালকদের অনুরোধেই এতদিন দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। চেয়ারম্যান পদে থাকা নিয়ে এখনো আমার কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই।

ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আইপিও কোটা বাতিল: নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটে গত ১০ বছর ধরে প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের (আইপিও) আবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ২০ শতাংশ কোটা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। প্রতিবছরই অর্থমন্ত্রনালয় থেকে আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কোটা রাখার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল। কিন্তু এ বছর ক্ষতিগ্রস্তদের আইপিও কোটার মেয়াদ শেষ হলেও আর বাড়ানো হয়নি। তাই পরবর্তী আইপিও থেকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আলাদা করে ক্ষতিগ্রস্ত কোটার ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: রেজাউল করিম জানান, আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত ২০ শতাংশ কোটার মেয়াদ জুন,২০২১ তারিখে শেষ হয়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত এই কোটার মেয়াদ আরো বাড়ানো হবে কিনা সে বিষয়ে মন্ত্রনালয় থেকে কোন চিঠি আমরা পাইনি। যেহেতু কোন চিঠি আসেনি তাই এর মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে না। তাই পরবর্তী আইপিওতে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কোটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হবে কিনা সে বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধসে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীদের আন্দোলনের মুখে পুঁজিবাজারের বড় ধরনের সংস্কার করে সরকার। এর মধ্যে ২০১১ সালের ২৩ নভেম্বর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার।

প্রণোদনার অংশ হিসেবে মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে ২০ শতাংশ কোটায় আবেদন করার জন্য ১৮ মাস অর্থাৎ ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়।

এরপর থেকে পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের বিনিয়োগকারীদের লোকসান সমন্বয়ের কথা চিন্তা করে প্রতিবছরই এর মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় অর্থমন্ত্রণালয়। সেই ধারাবাহিকতায় ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কোটার মেয়াদ শেষ হয়েছে।

ডিএসই ১৮ কোম্পানির শেয়ারে বিক্রেতা উধাও: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৯২টির বা ১৯২ শতাংশ শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। এদিন সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে ১৮ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়ে বিক্রেতা শূন্য থাকে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলো হলো: তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইল, পেপার প্রসেসিং, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, মনোস্পুল, সোনালী লাইফ, এইচআর টেক্সটাইল, বিআইএফসি, আজিজ পাইপস, সোনালী পেপার, সোনালী আঁশ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, জেএমআই সিরিঞ্জ, সিলকো ফার্মা, মুন্নু এগ্রো, এমারেল্ড অয়েল, সালভো কেমিক্যাল এবং নর্দান জুট, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস।

তমিজ উদ্দিন টেক্সটাইল: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার সর্বোচ্চ স্থানে ছিল বস্ত্র খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৫৯ টাকা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৬৪ টাকা ৯০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৬৪ টাকা ৯০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ৫ টাকা ৯০ পয়সা বা ১০ শতাংশ।

পেপার প্রসেসিং: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার দ্বিতীয় স্থানে ছিল পেপার খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৭৯ টাকা ২০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৮৭ টাকা ১০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৮৭ টাকা ১০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ৭ টাকা ৯০ পয়সা বা ৯.৯৭ শতাংশ।

সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল জ্বালানি খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৯৯ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ৯ টাকা ৯০ পয়সা বা ৯.৯৪ শতাংশ।

মনোস্পুল পেপার: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার চতুর্থ স্থানে ছিল পেপার খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৫৩ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ১৬৮ টাকা ৯০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ১৬৮ টাকা ৭০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ১৫ টাকা ১০ পয়সা বা ৯.৮৩ শতাংশ।

সোনালী লাইফ: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার পঞ্চম স্থানে ছিল বিমা খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৪ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ১৬ টাকা এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ১৬ টাকা। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা বা ৯.৫৮ শতাংশ।

এইচআর টেক্সটাইল: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার ষষ্ঠ স্থানে ছিল বস্ত্র খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৫০ টাকা ৮০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৫৫ টাকা ৮০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৫৫ টাকা ৬০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ৪ টাকা ৮০ পয়সা বা ৯.৪৪ শতাংশ।

বিআইএফসি: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার সপ্তম স্থানে ছিল আর্থিক খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৬ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৭ টাকা ২০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৭ টাকা ২০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ৬০ পয়সা বা ৯.০৯ শতাংশ।

আজিজ পাইপস: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার অষ্টম স্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৯৮ টাকা ৩০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৯৭ টাকা ৮০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ৭ টাকা ৯০ পয়সা বা ৮.৭৮ শতাংশ।

সোনালী পেপার: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার নবম স্থানে ছিল পেপার খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২৩৯ টাকা । আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ২৫৯ টাকা ৯০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ২৫৯ টাকা ৯০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ২০ টাকা ৯০ পয়সা বা ৮.৭৪ শতাংশ।

সোনালী আঁশ: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার দশম স্থানে ছিল পাট খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৪৩৬ টাকা ২০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৪৭৪ টাকা ৩০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৪৭৪ টাকা ৩০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ৩৮ টাকা ১০ পয়সা বা ৮.৭৩ শতাংশ।

আনোয়ার গ্যালভানাইজিং: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার একাদশ স্থানে ছিল প্রকৌশল খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২০৭ টাকা ১০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ২২৫ টাকা ২০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ২২৪ টাকা ৪০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ১৭ টাকা ৩০ পয়সা বা ৯.৩৫ শতাংশ।

জেএমআই সিরিঞ্জ: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার দ্বাদশ স্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩৩৭ টাকা ৭০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৩৬৭ টাকা ২০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৩৬৪ টাকা ৮০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ২৭ টাকা ১০ পয়সা বা ৮,০২ শতাংশ।

সিলকো ফার্মা: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার ত্রয়োদশ স্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২৮ টাকা ৭০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৩১ টাকা ৫০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৩০ টাকা ৯০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ টাকা ২০ পয়সা বা ৭.৬৬ শতাংশ।

মুন্নু এগ্রো: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার চতুর্দশ স্থানে ছিল খাদ্য খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৫৬৭ টাকা ৮০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৬১০ টাকা ৩০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৬১০ টাকা ৩০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ৪২ টাকা ৫০ পয়সা বা ৭.৪৮ শতাংশ।

এমারেল্ড অয়েল: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার পঞ্চদশ স্থানে ছিল খাদ্য খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩০ টাকা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৩২ টাকা ৫০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৩২ টাকা ২০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ টাকা ২০ পয়সা বা ৭.৩৩ শতাংশ।

সালভো কেমিক্যাল: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার ষষ্ঠদশ স্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩১ টাকা ৮০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৩৪ টাকা ৪০ পয়সায় এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ৩৪ টাকা ১০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ টাকা ৩০ পয়সা বা ৭.২৩ শতাংশ।

নর্দান জুট: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার সপ্তদশ স্থানে ছিল পাট খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ২৬৮ টাকা ৯০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ২৯০ টাকা এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ২৮৮ টাকা ১০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ১৯ টাকা ১০ পয়সা বা ৭.১৪ শতাংশ।

ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস: ক্লোজিং দরের ভিত্তিতে কোম্পানির দর আজ সর্বোচ্চ দর বাড়ার তালিকার ২৩তম স্থানে ছিল জ্বালানি খাতের কোম্পানিটি। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৩২৩ টাকা ৬০ পয়সা। আজ কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর উঠেছে ১৪০৬ টাকা ৩০ পয়সা এবং ক্লোজিং দর হয়েছে ১৪০৬ টাকা ৩০ পয়সায়। আজ শেয়ারটির দর বেড়েছে ১৪০৬ টাকা ৩০ পয়সা বা ৬.২৪ শতাংশ।

পুঁজিবাজারে ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডিসেমিনেশন প্লাটফর্ম চালু হচ্ছে: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) চালু হচ্ছে ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডিসেমিনেশন প্লাটফর্ম সফটওয়্যার। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএসই এ তথ্য জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ নতুন এই প্লাটফর্মটি উদ্বোধন করবেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ দর্শনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তালিকাভুক্তি এবং এর বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কমপ্লায়েন্সের জন্য একটি সমন্বিত অনলাইন ডেটা সংগ্রহ, তথ্য জমা ও প্রচারের জন্য প্লাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মটি দেশের পুঁজিবাজারের জন্য একটি বড় পদক্ষেপ। এই ইনফরমেশনগুলো অনলাইন সাবমিশনের মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। নতুন এই সফটওয়্যারটি ডিএসইর নিজস্ব দক্ষ কর্মীবাহিনী তৈরি করেছে, যা বিদেশি নির্ভরতা কমানোর জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ডিএসইর ডিজিটাল সাবমিশন অ্যান্ড ডিসেমিনেশন প্লাটফর্ম একটি স্বপ্ন ছিল। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ডিএসইর দক্ষ কর্মীবাহিনী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডেটা ইনপুট ও সাবমিশন অতি সহজে ও কম সময়ে করা যাবে।

ব্লক মার্কেটে চার কোম্পানির বিশাল লেনদেন: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৩০টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৬৮ কোটি ৪৬ লাখ ৩১ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর ৫২ লাখ ১৭ হাজার ১৭টি শেয়ার ৫৫ বার হাত বদল হয়েছে।

এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৬৮ কোটি ৪৬ লাখ ৩১ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে চার কোম্পানির বিশাল লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সোনলী পেপারের ১৪ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকার, তৃতীয় সর্বোচ্চ বিকন ফার্মার ৮ কোটি ৫৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার, চতুর্থ সর্বোচ্চ বেক্সিমকোর ৪ কোটি ৬৬ লাখ ৫৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

তাছাড়া, আমান কটনের ১ কোটি ৯৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকার, অলিম্পিকের ১ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ফুয়াং ফুডের ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকার, এইচ আর টেক্সের ১ কোটি ১৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকার, আমান ফিডের ৮৭ লাখ ১৫ হাজার টাকার, এনআরবিসি ব্যাংকের ৭২ লাখ ১১ হাজার টাকার, বিএনআইসিএল ৭০ লাখ টাকার, স্কয়ার ফার্মার ৫৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকার, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৪৫ লাখ ১৫ হাজার টাকার,

কাট্টালী টেক্সটাইলের ৪১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার, ফরচুন সুজের ২২ লাখ ৫৫ হাজার টাকার, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ২১ লাখ ৩৬ হাজার টাকার, সিলকো ফার্মার ২০ লাখ ৬৯ হাজার টাকার, ন্যাশনাল টিউবসের ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক ১৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকার, লাফার্জ হোলসিমের ১৪ লাখ ৭১ হাজার টাকার, আরডি ফুডের ১৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকার, সি- পর্লের ১৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকার,

আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ১২ লাখ ৫২ হাজার টাকার, কুইন সাউথের ১২ লাখ ৪৬ হাজার টাকার, মালেক স্পিনিংয়ের ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকার, ঢাকা ব্র্যাক হাউজিংয়ের ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকার, জিবিবি পাওয়ারের ৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকার, ইউনিক হোটেলের ৬ লাখ ৬১ হাজার টাকার, ইনফরমেশন সার্ভিস লিমিটেডের ৬ লাখ ২৯ হাজার টাকার, অ্যাপোলো ইস্পাতের ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

ডিএসই ৩ খাতের উত্থানে পুঁজিবাজার চাঙ্গা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ৩ খাতের শেয়ারে উত্থানে চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। মুলত শেষ ঘণ্টায় পাল্টে গেল পুঁজিবাজারের চিত্র। এই সময়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ওষুধ ও রসায়ন এবং বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়াকে কেন্দ্র করে পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান হয়েছে। যা ছিল টানা দুই কার্যদিবস দরপতনের পর উত্থান। এদিন সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামও। তবে কমেছে লেনদেন। বৃহস্পতিবার বাজারে চার ঘণ্টা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম তিন ঘণ্টা ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ডসহ বেশির ভাগ খাতের শেয়ারের বিক্রির চাপে সূচক ওঠানামার মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে।

তবে শেষ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২২টি প্রতিষ্ঠানের সবগুলোর দাম বাড়ার মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়। একইভাবে বিমা খাতের ৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের এবং ওষুধ রসায়ন খাতের ৩১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৯টি। এই তিন খাতের শেয়ারের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ৩৫ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ১২০ পয়েন্ট।

ডিএসইর তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মোট ৩৭৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯১টির, কমেছে ১৫৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির। এদিন মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৯১ কোটি ৯১ লাখ ৫ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে।

বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৪১ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২৪৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এরপর লেনদেন হয়েছে লাফার্জহোলসিমের শেয়ার। ক্রমান্বয়ে রয়েছে কেয়া কসমেটিকস, বেক্সিমকো ফার্মা, আমান ফিড, ন্যাশনাল ফিড মিলস, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, এমএল ডাইং, পাওয়ার গ্রিড এবং একটিভ ফাইন লিমিটেড।

অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২০ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ১৩৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টির শেয়ারের দাম। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৪ কোটি ৫ লাখ ৮০৯ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭৮ কোটি ৩০ লাখ ২৪ হাজার টাকা।

রাজধানীতে প্রথম ‘ডিজিটাল বুথ’ খুলছে গ্রিন ডেলটা সিকিউরিটিজ: পুঁজিবাজারের পরিধিসহ বিনিয়োগ বাড়াতে ব্রোকারেজ হাউজের শাখা হিসেবে দেশে ও বিদেশে ‘ডিজিটাল বুথ’ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মে মাসে বিদেশের মাটিতে ২টি ও দেশের অভ্যন্তরে ৩টি ব্রোকারেজ হাউজকে এ ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি আরও ২টি ব্রোকারেজ হাউজকে এ ধরনের ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি দেওয়া হয় বলে বিএসইসি সূত্র জানিয়েছে। সম্প্রতি ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি পাওয়া ব্রোকারেজ হাউজ দু’টি হলো গ্রিন ডেলটা সিকিউরিটিজ (ট্রেক- ১৩০) ও রয়েল ক্যাপিটাল (ট্রেক- ২১)।

এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় প্রথম ডিজিটাল বুথ খুলতে যাচ্ছে গ্রিন ডেলটা সিকিউরিটিজ। আর ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল বুথ খুলবে রয়েল ক্যাপিটাল। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সদস্যভুক্ত ৭টি ব্রোকারেজ হাউজ ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি পেয়েছে।

সিএসই সদস্যভুক্ত গ্রিন ডেলটা সিকিউরিটিজ দেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকার ধানমণ্ডিতে ডিজিটাল বুথ খুলতে যাচ্ছে। ফলে ঢাকায় প্রথমবারের মতো ডিজিটাল বুথ চালু করে ইতিহাসে নাম লিখতে যাচ্ছে ব্রোকারেজ হাউজটি। বর্তমানে শেয়ারবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো থাকায় কঠোর লকডাউনের মধ্যেও ডিজিটাল বুথ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রোকারেজ হাউজটি। আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে এ বুথ চালু করা হতে পারে। এ জন্য সকল প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে গ্রিন ডেলটা সিকিউরিটিজ কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, রয়েল ক্যাপিটাল কক্সবাজার জেলার ঝিলংজা ইউনিয়নে ডিজিটাল বুথ চালু করবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল বুথ খুলে ইতিহাসে নাম লিখতে যাচ্ছে রয়েল ক্যাপিটাল। ঈদুল আজহার পর ব্রোকারেজ হাউজটি এ ডিজিটাল বুথ খোলার প্রস্তুতি নিয়েছে।

বিএসইসি জানিয়েছে, স্থানীয়, প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী করে তুলতে দেশে ও বিদেশে ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি দিচ্ছে কমিশন। এর মধ্যে বেশ কিছু ব্রোকার তাদের পছন্দমতো জায়গায় বুথ খোলার আবেদন জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন যাচাই-বাছাই করে পর্যায়ক্রমে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে প্রথম ডিজিাল বুথ খুলে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড। পরে কানাডার টরেন্টোতে ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি পায় পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজ। তবে এখনও বুথ চালু করতে পারেনি ব্রোকারেজ হাউজটি।

এর পরেই দেশের অভ্যন্তরে ডিজিটাল বুথ খুলে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ। এরপর কবির সিকিউরিটিজ ও বি রিচকেও ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। আর চলতি বছরে জুন মাসে গ্রিন ডেল্টা সিকিউরিটিজ ও রয়েল ক্যাপিটালকে একই ধরনের বুথ খোলার অনুমতি দেওয়া হল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রিন ডেলটা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ওয়াফি শফিক মিনহাজ খান বলেন, ‘গত মাসে আমরা ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি পেয়েছি। শিগগিরই আমরা ডিজিটাল বুথটি চালু করব। আমরা প্রস্তুত। ঢাকার প্রথম ডিজিটাল বুথটি হবে গ্রিন ডেলটা সিকিউরিটিজে। তবে লকডাউনের কারণে তেমন কোনো উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা থাকবে না।’

এদিকে, রয়েল ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম মুনির আহমেদ বলেন, ‘গত মাসে আমরা ডিজিটাল বুথ খোলার অনুমতি পাই। ঈদুল আজহার পর বুথটি চালু করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। লকডাউনের কারণে আমরা বুথটি চালু করার জন্য সময় নিচ্ছি। এ জন্য আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ধানমণ্ডি এলাকার সাত মসজিদ রোডের ৫/এ, বিকল্প টাওয়ারে (বাসা নম্বর ৭৪) গ্রিন ডেলটা সিকিউরিটিজ এবং কক্সবাজার জেলার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদে রয়েল ক্যাপিটাল ডিজিটাল বুথ চালু হবে।

খেলাপি ঋণে জর্জরিত রাষ্ট্রীয় ছয় ব্যাংক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে ভালো করলেও সরকারি মালিকানাধীন ছয়টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই। দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শেষ হিসাব বলছে, গত ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে এই ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে এক হাজার ১৭৮ কোটি টাকা।

এই সময়ে বেসরকারি বেশ কিছু ব্যাংক তাদের খেলাপি ঋণ মোট ঋণের তিন শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে পারলেও সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএলের খেলাপি ঋণ মোট ঋণের ২০ শতাংশের বেশি। এর বাইরে আছে অবলোপন করা আরও সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা।

নানা সময় আলোচনা সমালোচনার পর টাকা উদ্ধারে ব্যাংকগুলো প্রায়ই আদায় সপ্তাহ বা আদায় মাস ঘোষণা করে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। করোনাকালে যখন নিয়মিত ঋণ পরিশোধেই নানা সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে, তখন খেলাপি হয়ে যাওয়া অর্থ আদায় আরও কঠিন হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মার্চ শেষে সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী, বেসিক ও বিডিবিএল এ ছয় ব্যাংক মোট ২ লাখ ৭ হাজার ৭৭১ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এ ঋণের ৪৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকায় অনাদায়ী অর্থাৎ খেলাপি।

যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ২০ দশমিক ৯১ শতাংশ। সুশাসন, বিধি বিধান মেনে চলা হলে পরিস্থিতির যে উন্নতি সম্ভব, সেটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের হিসাবেই স্পষ্ট। এই ৩১টি ব্যাংকে বিতরণ করা ঋণের মধ্যে খেলাপি ৪.৯৫ শতাংশ। যেখানে পুঁজিবাজারের বাইরের ব্যাংকগুলোতে এই হার ১৬.১৮ শতাংশ।

ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ছয় ব্যাংক ২ লাখ ২ হাজার ৩৩০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৪২ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। মোট ঋণের ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ ছিল খেলাপি। মূলধন ঘাটতির শীর্ষেও রয়েছে এসব ব্যাংক। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ২৪ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ১১টি ব্যাংক। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর ঘাটতিই সবচেয়ে বেশি।

অবলোপন করা ঋণ থেকেও তেমন আদায় করতে পারেনি এসব ব্যাংক। ২০২০ সালে অবলোপনের মাধ্যমে ৬ হাজার ৫৯০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ ব্যাংকের ব্যালান্স শিট বা স্থিতিপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অবলোপন করে এক হাজার ৩৭০ কোটি টাকা বা মোটের ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংক অবলোপন করা ঋণ থেকে আদায় কমেছে মাত্র ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার মতো, যা শতকরা হিসেবে দশমিক ৯৩ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আর্থিক কেলেঙ্কারি, নানা অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ হচ্ছে। এই বিশাল অর্থ উদ্ধারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি ব্যাংকগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। ঋণের গুণগত মান, খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি, পরিচালকদের বেপরোয়া ঋণ গ্রহণ এসব সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। এসব ব্যাংকের তদারকি কার্যক্রম বাড়ানো প্রয়োজন। তবে শুধু তদারকি বাড়ালে হবে না, অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যাংকার, গ্রাহক ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, সরকারের উচিত রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর দক্ষতা বাড়ানো ও খেলাপি ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করা। একই সঙ্গে যারা ব্যর্থ হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া।’ ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণে শীর্ষ অবস্থানে এটি।

মার্চ শেষে ব্যাংকটির ৫৭ হাজার ৮২ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি ১৩ হাজার ৫৭০ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ২৩.৭৭ শতাংশ। ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১২ হাজার ৮৮৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। তিন মাসে ব্যাংকটির আরও ৬৮৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। মার্চে ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি দাঁড়ায় ৪১৭ কোটি টাকা, যা তিন মাস আগে ছিল পাঁচ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা।

আবদুল হাই বাচ্চু চেয়ারম্যান থাকার আগে পর্যন্ত সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে ছিল এই কোম্পানিটি। তবে ঋণ কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ব্যাংকটি এতটাই বিপাকে পড়েছে যে কর্মীদের বেতন কমিয়ে খরচ কমাতে চাইছে। সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে শকতরা হিসেবে সবচেয়ে ন্জুক অবস্থায় আছে এই ব্যাংকটি। মার্চ শেষে এদের ঋণ বিতরণ ১৪ হাজার ৬০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৮ হাজার ৮০ কোটি ৭২ লাখ, যা বিতরণকৃত ঋণের ৫৫.৩৪ শতাংশ।

ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৭ হাজার ৫০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। তিন মাসে ব্যাংকটির ৫১৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি এক হাজার ৭২ কোটি টাকা। তবে এই দিক থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগের প্রান্তিকের চেয়ে এটি ২৮ দশমিক ১৫ শতাংশ কম।
বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, ‘আমরা খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছি।

মূলধন ঘাটতি কমাতে সহায়তা করবে এটি।’ ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের বড় অংশ এখনও আদায় করা সম্ভব হয়নি। এর প্রায় ৯০ শতাংশই আদায়যোগ্য নয়। এ সময়ের মধ্যে ব্যাংকটি থেকে অন্তত চার হাজার ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুসহ ব্যাংকটির আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও বোর্ড সদস্য এতে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে। মার্চ শেষে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা।

এর মধ্যে খেলাপি ৬৫৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা। যা বিতরণকৃত ঋণের ৩৫.৩৬ শতাংশ। ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৫৯৫ কোটি ৬ লাখ টাকা। তিন মাসে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। বিডিবিএলের কাছে জমা আছে গ্রাহকদের ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার আমানত। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি সবচেয়ে বেশি সবচেয়ে বেশি আমানতের এই ব্যাংকটির। সবশেষ হিসাব অনুযায়ী ব্যাংকটির ঘাটতি তিন হাজার ৬৯৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ডিসেম্বর শেষে ঘাটতি ছিল তিন হাজার ৬৩ কোটি টাকা।

তবে খেলাপি ঋণের দিক দিয়ে কিছুটা উন্নতি করতে পেরেছে ব্যাংকটি। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ব্যাংকটি খেলাপি ঋণ থেকে আদায় করেছে ৩২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির খেলাপি ১০ হাজার ৬৮৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ১৯.৮০ শতাংশ। ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১০ হাজার ৭২১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। মার্চ শেষে ব্যাংকটির ঋণ বিতরণ ৫৩ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৫ হাজার ৫৫৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

তিন মাসে খেলাপি বেড়েছে ১ হাজার ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থ অগ্রণী ব্যাংক। মার্চ শেষে মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দুই হাজার ৯২১ কোটি ৯২ লাখ টাকা । সবশেষ তথ্য অনুযায়ী এ ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ৯০৩ কোটি টাকা। মার্চ শেষে অগ্রণীর ঋণ বিতরণ ৪৭ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ৬ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত ঋণের ১৩.৭১ শতাংশ।

ব্যাংকটির মোট ঋণ ৩২ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। মার্চ শেষে খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৮৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। তবে ডিসেম্বরের চেয়ে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তখন ব্যাংকটিকে খেলাপি ঋণ ছিল ৩ হাজার ৯৭২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ওই সময় বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ ছিল খেলাপি। তিন মাসে আদায় ৮৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।