দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১২ প্রতিষ্ঠান বোর্ড সভার ও ট্রাস্টি সভার তারিখ জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর সভায় নীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এসইএম এলএফবিএসএল গ্রোথ ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা ০৯ আগস্ট বেলা ২:৪৫টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি ২.৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

এসইএম লেকচার মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা ০৯ আগস্ট বেলা ২:৩৫টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি নো ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

ওয়ালটন: কোম্পানিটির বোর্ড সভা আগামী ১০ আগস্ট বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হবে। তৃতীয় প্রান্তিক শেষে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) বা নয় মাসে ইপিএস হয়েছে ৩৪ টাকা ১৪ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি সাড়ে ২০০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা আগামী ১১ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

আইসিবি ইমপ্লোয়েজ প্রভিডেন্ট ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা ১১ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট আইসিবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা ১১ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।
পিএফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা ১১ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

আইসিবি থার্ড এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা ১১ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

আইএফআইএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা ১১ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি৪ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

আইসিবি সোনালী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা ১১ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

আইসিবি অগ্রণী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান: ফান্ডটির ট্রাস্টি সভা ১১ আগস্ট বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে।আগের বছর ফান্ডটি ৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

জিএসপি ফিন্যান্স: কোম্পানিটির বোর্ড সভা আগামী ১৪ আগস্ট সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

তৃতীয় প্রান্তিক শেষে (জানু’২০-সেপ্টেম্বর’২০) বা নয় মাসে ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১১ পয়সা। যা গত বছর ছিল ১ টাকা ১৫ পয়সা। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি সাড়ে ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

RSI অনুযায়ি ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় ১২ কোম্পানি: সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১২টি কোম্পানির শেয়ার RSI ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় উঠে এসেছে। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস RSI এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগকারীদেও বুঝে শুনে বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। কারন চাঙ্গা পুঁজিবাজারে দুর্বল মৌল ভিত্তি শেয়ারের দাম বাড়ে হু হু করে।

ফলে গ্যামলরা বের হয়ে গেলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোম্পানিগুলো হলো: এএফসি এগ্রো, অলটেক্স, আনোয়ার গ্যালভেনাইজিং, বিচ হ্যাচাারি, বিকন ফার্মা, ঢাকা ডাইং, ফুওয়াং সিরামিক, পেপার প্রসেসিং, রহিমা ফুড, সালভো কেমিক্যাল, সিম টেক্স, সোনালী পেপার লিমিটেড।

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস কী: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ উপযোগী শেয়ার কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ার নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন নির্দেশক (Indicator) ব্যবহার করে থাকেন।

এর মধ্যে রয়েছে ট্যাকনিক্যাল ইনডিকেটর (Technical Indicator) ও ফান্ডমেন্টাল ইনডিকেটর (Fundamental Indecator)। টেকনিক্যাল ইনডিকেটরের মধ্যে Relative Strength অথবা (RSI)। RSI ইনডিকেটর হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস। জঝও-এর মাধ্যমে সহজেই বিনিয়োগ উপযোগী শেয়ার খুঁজে বের করা যায়। ঠিক তেমনি RSI-এর মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারও সনাক্ত করা যায়।

RSI ইন্ডিকেটরটি বাজারের overbought ও oversold অবস্থান নির্দেশ করে। এর স্কেলমান শুন্য হতে ১০০ পর্যন্ত হয়। সাধারণত ১২ এর নিচের শেয়ার oversold এবং ৮০ এর উপরে শেয়ার overbought নির্দেশ করে। সাধারণত oversold অবস্থায় বড় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার (কেনা) এবং overbought অবস্থায় বড় বিনিয়োগকারীদের sell pressure (বিক্রির চাপ) নির্দেশ করে থাকে।

তবে অনেক ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও হয়। যদি কোম্পানির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য থাকে, সেক্ষেত্রে RSI অকার্যকর হয়। মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের ভিত্তিতে নিজস্ব গতিতে শেয়ার দর উঠা-নামা করে। আবার যদি কোন শেয়ারের পেছনে বড় হাত থাকে বা স্মার্ট মানি থাকে, সেক্ষেত্রেও জঝও সাধারণত অকার্যকর হয়। তবে সাধারণ নিয়মে যেসব কোম্পানির শেয়ার দর যদি RSI-এর নিচের পর্যায়ে থাকে বা oversold অবস্থায় থাকে, তাহলে সেসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ নিরাপদ মনে করা হয়।

আবার যেসব কোম্পানির শেয়ার দর RSI-এর উচ্চ পর্যায়ে থাকে বা overbought অবস্থায় থাকে, সেসব কোম্পানিতে আপাতত বিনিয়োগ না করে ‘ওয়েট অ্যান্ড সি’ পলিসি অনুসরণ করার পরামর্শ দেয়া হয়।

এতে করে পুঁজি নিরাপদ থাকে। তবে শেয়ার দর যখন বাড়তে বা কমতে থাকে RSI ইনডিকেটরের সঙ্গে দরের সামঞ্জস্যতা পরিবর্তন হয়। তখন দেখা যায় overbought অবস্থায় RSI শেয়ারটির জন্য নতুন space তৈরি করে দেয়।

উল্লেখ্য, RSI ইনডিকেটর অনুযায়ি শেয়ার কেনা-বেচা করতে হবে, এমন কোন স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম বা বাধ্যবাধকতাও নেই। তবে জঝও ইনিডিকেটর অনুসরণ করলে পুঁজির সমূহ ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায় এবং লাভবান হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

মহামারীতে বহুজাতিক কোম্পানির মুনাফায় রমরমা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলো চলতি হিসাব বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসের অর্ধবার্ষিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনাকালেও অধিকাংশ বহুজাতিক কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১২টি বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে ৯টি তাদের অর্ধবার্ষিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ছয়টির মুনাফা বেড়েছে। তিনটির মুনাফা কমেছে।

কোম্পানিগুলোর তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি হিসাব বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত অর্ধবার্ষিকীতে সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট। কোম্পানিটি আগের বছর লোকসানে থাকলেও চলতি হিসাব বছরের জুন পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ১১.৭৯ টাকা। আগের বছর একই সময়ে কোম্পানির লোকসান ছিল ২.৫৪ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে ৩৬৫ শতাংশ।

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুনাফার হারের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। কোম্পানিটির মুনাফা আগের বছরের চেয়ে ১৫৩ শতাংশ বেড়েছে। চলতি হিসাব বছরের জুন শেষে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১.৮৫ টাকা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ০.৭৩ টাকা।

মুনাফার হারের দিক দিয়ে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছে সিঙ্গার বিডি। কোম্পানিটির চলতি হিসাব বছরে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৪.৬৯ টাকা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ২.০২ টাকা।

আলোচ্য সময়ে কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে ১৩২ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের জুন শেষে ৬ মাসে লিন্ডে বিডির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৪১.৪২ টাকা। আগের বছর একই সময় মুনাফা হয়েছিল ২৫.১৬ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ১৬.২৬ টাকা বা ৬৫ শতাংশ।

চলতি হিসাব বছরে জুন শেষে রেকিট বেনকিজারের শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৬২.০২ টাকা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ৫৭.৫১ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে ৭.৮৫ শতাংশ। জুন শেষে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১৫.৯৬ টাকা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ১১.১২ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ৪৩.৫২ শতাংশ।

এদিকে, যেসব কোম্পানির মুনাফা কমেছে সেগুলো হচ্ছে—গ্রামীণফোন, রবি ও ইউনিলিভার। এর মধ্যে গ্রামীণফোন চলতি হিসাব বছরের প্রথম ৬ মাসে শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ১২.৮৯ টাকা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ১৩.৩০ টাকা। রবির মুনাফা চলতি হিসাববছরের প্রথম ৬ মাসে হয়েছে ০.১৫ টাকা।

আগের বছর একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ০.১৬ টাকা। গত জুন শেষে ইউনিলিভারের শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১৮.৫৯ টাকা। আগের বছর একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ২৬.৩৭ টাকা।

পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেন বাড়ার নেপথ্যে ১০ কোম্পানি: সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯৬ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। এরমধ্যে শীর্ষ ১০ কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩১৭ কোটি ৭৫ লাখ ৪ হাজার টাকা। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮.৭৯ শতাংশ।

ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর লেনদেনে চাঙ্গাভাব থাকায় সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারের লেনদেনেও চাঙ্গাভাব অব্যাহত থাকে। কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারের সুচক বৃদ্ধিতেও ভালো অবদান রেখেছে।

সপ্তাহজুড়ে রাজত্ব দেখানো কোম্পানিগুলো হলো: বেক্সিমকো লিমিটেড, ওরিয়ন ফার্মা, সাইফ পাওয়ারটেক, জিপিএইচ ইস্পাত, আইএফআইসি ব্যাংক, ফু-ওয়াং সিরামিক, এসএস স্টিল, মালেক স্পিনিং, ম্যাকসন্স স্পিনিং এবং বেক্সিমকো ফার্মা।

তালিকার প্রথম স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটি ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪০ হাজার ১৬৫টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২৯৭ কোটি ৩৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪.২৪ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৬.১৩ শতাংশ।

তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা। কোম্পানিটির ২ কোটি ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার ৮৯৫টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৬৯ কোটি ২৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ২.৪১ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১৮.৮২ শতাংশ।

সাইফ পাওয়ারটেক লেনদেনের তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৫ কোটি ১৭ লাখ ১৯ হাজার ৪৩০টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৫৩ কোটি ৪০ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ২.১৯ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ২.৮৩ শতাংশ।

জিপিএইচ ইস্পাত লেনদেনের তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ২ কোটি ৮২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৮৩টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৪৪ কোটি ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ২.০৬ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৮.২৮ শতাংশ।

আইএফআইসি ব্যাংক লেনদেনের তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৮ কোটি ৯৯ লাখ ১ হাজার ২৩টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১২৯ কোটি ২৮ লাখ ৬১ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ১.৮৪ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৭.৪১ শতাংশ।

ফু-ওয়াং সিরামিক লেনদেনের তালিকার ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৩ কোটি ৯৭ লাখ ৯১ হাজার ৭৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ১০৮ কোটি ৮৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ১.৫৫ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৪.১০ শতাংশ।

এসএস স্টিল লেনদেনের তালিকার সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৩ কোটি ৭০ লাখ ১৯ হাজার ১৩টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৮৪ কোটি ৬৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ১.২১ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৮.৩৩ শতাংশ।

মালেক স্পিনিং লেনদেনের তালিকার অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ২ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ৯১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৭৮ কোটি ৪৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ১.১২ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১০.৪২ শতাংশ।

ম্যাকসন্স স্পিনিং লেনদেনের তালিকার নবম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৩ কোটি ৬৭ লাখ ১ হাজার ২৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৭৭ কোটি ৫৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ১.১১ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৩.৯০ শতাংশ।

বেক্সিমকো ফার্মা লেনদেনের তালিকার দশম স্থানে উঠে এসেছে। কোম্পানিটির ৩৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭৩৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৭৪ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ডিএসইর মোট লেনদেনে কোম্পানিটির অংশগ্রহণ ছিল ১.০৬ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৩.৪২ শতাংশ।

চলতি সপ্তাহে আসছে ৩ কোম্পানির ইপিএস: চলতি সপ্তাহে ৩ কোম্পানির বোর্ড সভা রয়েছে। সভায় কোম্পানিগুলোর অনীরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলো হলো: বার্জার পেইন্টস, গ্লোবাল ইন্সুরেন্স এবং তাকাফুল ইন্সুরেন্স।

বার্জার পেইন্টস: কোম্পানিটির বোর্ড সভা আগামী ৯ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

গ্লোবাল ইন্সুরেন্স: কোম্পানিটির বোর্ড সভা আগামী ১০ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

তাকাফুল ইন্সুরেন্স: কোম্পানিটির বোর্ড সভা আগামী ১২ আগস্ট বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোম্পানিটির ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৫ কোম্পানির ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক খাতের ৩ কোম্পানি এবং বীমা খাতের ১ কোম্পানি ও আইসিবির সাবসিডিয়ারী প্রতিষ্ঠান আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ২৩৩ প্রতিষ্ঠানে অডিট ও অভিযান চালিয়ে এক হাজার ৬৭৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

বিদায়ী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ভ্যাট গোয়েন্দার কার্যক্রম মূল্যায়নে এ চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪১টি প্রতিষ্ঠানে অডিট করে ও ৯২টি প্রতিষ্ঠানে সরাসরি অভিযান চালিয়ে ওই ফাঁকির বিষয়টি উদঘাটন করা হয়।

রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরুর মধ্যেই করোনার বিস্তারের কারণে বড় ধরনের অভিযানে নামেনি ভ্যাট গোয়েন্দা। পরবর্তীতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ধীরে ধীরে চালু হওয়ায় এনবিআরের নির্দেশে ভ্যাট ফাঁকি রোধে মাঠ পর্যায়ের গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করে ভ্যাট গোয়েন্দা।

এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণও মিলেছে। ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর ২৩৩টি তদন্তে এক হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে। জরিমানা হিসেবে আদায় হয়েছে ১৪৩ কোটি টাকা।

ভ্যাট গোয়েন্দা জানায়, গত অর্থবছরে রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান করাসহ নিয়মিত অডিটের মাধ্যমে প্রায় বিপুল পরিমাণ ফাঁকি উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর। এ তালিকায় ব্যাংক, বিমা, অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। বিশেষ অডিট ও অনুসন্ধান কার্যক্রমের মাধ্যমে সর্বমোট ১৪১টি প্রতিষ্ঠানের অডিট কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ৪০৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটিত হয়েছে।

অডিটে সর্বোচ্চ রাজস্ব উদঘাটিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৪৬২ কোটি ২৮ লাখ, প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৪৫ কোটি ১৬ লাখ, ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক ১২৫ কোটি ৭৩ লাখ, বেসিক ব্যাংক ১০০ কোটি ৫১ লাখ, জনতা ব্যাংক ৪৯ কোটি ৫২ লাখ, আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ৪৮ কোটি ৮৪ লাখ, সোনালী ব্যাংক ৪৪ কোটি ২৭ লাখ,

আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট ২৬ কোটি ৩৭ লাখ, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২৫ কোটি ২৮ লাখ, ডিপিএসএসটিএস স্কুল ২৩ কোটি ৩ লাখ, কারিশমা সার্ভিসেস ২০ কোটি ৯৭ লাখ, লংকা বাংলা ফাইন্যান্স ২০ কোটি ৬০ লাখ, এলিট পেইন্ট অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডা. ২১ কোটি ২০ লাখ টাকাসহ তালিকায় রয়েছে অনেক নামি-দামি প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া গোয়েন্দা দল সরেজমিনে প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও দলিলাদি জব্দ করার মাধ্যমে প্রায় ১৩৪ কোটি ৬ লাখ টাকা উদঘাটিত হয়েছে। অভিযানে সর্বোচ্চ রাজস্ব উদঘাটিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে আকতার ফার্নিচার ৩৯ কোটি ৬৩ লাখ, মোহাম্মদী ট্রেডিং ৩৮ কোটি ৯৯ লাখ, চারুতা প্রাইভেট লিমিটেড ৩০ কোটি ৩৬ লাখ, উজালা পেইন্টস ২৭ কোটি ১৪ লাখ,

হোটেল লেকশোর সার্ভিস ১৬ কোটি ৯৮ লাখ, ফুড ভিলেজ প্লাস ১৩ কোটি ৫২ লাখ, ফুড ভিলেজ লিমিটেড ১২ কোটি ৯৩ লাখ, ডিবিএল সিরামিক্স ৬ কোটি ৮৯ লাখ, খান কিচেন ৩ কোটি ৬০ লাখ, সুং ফুড গার্ডেন ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকাসহ তালিকায় রয়েছে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান। এ উদঘাটন ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৫ গুণ বেশি এবং তাৎক্ষণিক আদায় প্রায় আড়াই গুণ বেশি। ওই অর্থবছরে ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন হয়েছিল ৩১৯ কোটি টাকা।

করোনা মহামারিতেও ব্যাংক খাতে মুনাফায় লুকোচুরি: করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের আর্থিক খাত। ব্যবসায় মন্দার কারণে ঋণের কিস্তি ঠিক মতো আদায় হচ্ছে না। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে ঋণ বিতরণেও চলছে ভাটা। এরই মধ্যে ব্যাংক খাতের মুনাফায় বড় ধরনের উল্লম্ফন হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে আয়। মহামারির এ কঠিন সময়েও নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে মুনাফা ও আয়ের লুকোচুরি খেলায় মেতেছে তফসিলি ব্যাংকগুলো!

খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েকটি কারণে ব্যাংকের আয় বাড়ছে। এর মূল কারণ, এখন ঋণ শোধ না করলেও কেউ খেলাপি হচ্ছেন না। ফলে বাড়তি নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশনিং) রাখার প্রয়োজনও পড়ছে না। এছাড়া অনাদায়ি ঋণের সুদ এখন চলে যাচ্ছে আয়ের হিসাবে। নানা ছাড় আর শিথিলতায় কাগজে-কলমে আয় নিয়ে স্বস্তিতে আছে ব্যাংকগুলো। যা ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত— বলছেন অর্থনীতির বিশ্লেষক ও ব্যাংকাররা।

সুযোগ পেয়ে আগ্রাসী আয় দেখানোর চেয়ে সহনীয় পর্যায়ে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এখন ঋণ শোধ না করলেও কেউ খেলাপি হচ্ছেন না। ফলে বাড়তি নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশনিং) রাখার প্রয়োজনও পড়ছে না। এছাড়া অনাদায়ি ঋণের সুদ এখন চলে যাচ্ছে আয়ের হিসাবে। নানা ছাড় আর শিথিলতায় কাগজে-কলমে আয় নিয়ে স্বস্তিতে আছে ব্যাংকগুলো। যা ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত

দেশের বেশির ভাগ তফসিলি ব্যাংক চলতি হিসাব বছরে তাদের দ্বিতীয় প্রান্তিক (এপ্রিল-জুন, ২০২১) ও অর্ধ-বার্ষিকীর (জানুয়ারি-জুন, ২০২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২৮টি চলতি বছরের প্রথমার্ধ ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেছে।

এর মধ্যে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২১ সালের প্রথমার্ধে ২৪টি অর্থাৎ ৮৫ দশমিক ৭১ শতাংশ ব্যাংকের ইপিএস বেড়েছে। তিনটি ব্যাংকের ইপিএস কমেছে। ব্যাংক তিনটি হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। একটির ইপিএস অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া ঢাকা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংকের প্রথমার্ধের আর্থিক হিসাব নিয়ে পর্ষদ সভা হয়নি।

সংকটের মধ্যেও কেন আয় বাড়ছে জানতে চাওয়া হয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) সৈয়দ মাহবুবুর রহমানের কাছে।

বলেন, এবার প্রায় সব ব্যাংকেরই পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। ট্রেজারি বিলে ইনকাম হচ্ছে, শেয়ারবাজার থেকেও আয় বেড়েছে। স্প্রেড (ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান) থেকে আয় বেশি আসছে। অর্থাৎ ঋণের সুদ যে হারে কমেছে তার চেয়ে বেশি আমানতের সুদের হার কমেছে। এছাড়া এবার কস্ট অব ফান্ডও কম হচ্ছে।

যারা এখন ঋণের কিস্তি নিয়মিত দিতে পারছেন না, শর্ত শিথিলতার কারণে আমরা সেগুলো ক্লাসিফাইড বা খেলাপি করছি না। উল্টো এ হিসাব আয় খাতে নিয়ে নিচ্ছি। ফলে ব্যাংকের ইনকাম বাড়ছে ‘সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, যারা এখন ঋণের কিস্তি নিয়মিত দিতে পারছেন না, শর্ত শিথিলতার কারণে আমরা সেগুলো ক্লাসিফাইড বা খেলাপি করছি না। উল্টো এ হিসাব আয় খাতে নিয়ে নিচ্ছি। ফলে ব্যাংকের ইনকাম বাড়ছে।’

ব্যাংক খাতের সামনের পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে বলা খুবই কঠিন। কারণ, সামনে কী হচ্ছে এখন কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।’ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের আয় কমার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা হয়তো আয় দেখাতে পারতাম, কিন্তু দেখাইনি। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমরা প্রভিশন বাড়িয়েছি।

এ কারণে আয় কম হয়েছে।’ ‘এ মুহূর্তে ব্যাংকগুলোর উচিত একটু রক্ষণশীল হওয়া। বেশি আয় না দেখিয়ে নিরাপত্তার জন্য প্রভিশনিং করা। তাহলে মার্কেট ভালো হলে এ টাকা বাজারে ছাড়া যাবে। তা না হলে যদি কোনো কারণে ভবিষ্যতে সমস্যা হয় তাহলে তো বিপদে পড়তে হবে। এ কারণে ব্যালেন্স শিট স্ট্যান্ডার রাখাটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ’— মনে করেন এমটিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

এ মুহূর্তে ব্যাংকগুলোর উচিত একটু রক্ষণশীল হওয়া। বেশি আয় না দেখিয়ে নিরাপত্তার জন্য প্রভিশনিং করা। তাহলে মার্কেট ভালো হলে এ টাকা বাজারে ছাড়া যাবে। তা না হলে যদি কোনো কারণে ভবিষ্যতে সমস্যা হয় তাহলে তো বিপদে পড়তে হবে। এ কারণে ব্যালেন্স শিট স্ট্যান্ডার রাখাটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭৭ হাজার

৬৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণের ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ। কিন্তু তিন মাস আগেও গত ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ছয় হাজার ৮০২ কোটি টাকা।

এ খাতের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলেও তাকে খেলাপির তালিকায় দেখানো হচ্ছে না। পুরো ২০২০ সাল এমন সুবিধা পেয়েছেন ঋণগ্রহীতারা। খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনের বিভিন্ন নীতিমালার শর্ত শিথিল করা হয়েছে। ফলে গত এক বছরে ঋণের কিস্তি না দিয়েও নতুন করে কেউ খেলাপি হননি।

এসব সুবিধা উঠিয়ে নেওয়া হলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ হু হু করে বেড়ে লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। ২০২১ সালের মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণের ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ।

কিন্তু তিন মাস আগেও গত ডিসেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ছয় হাজার ৮০২ কোটি টাকা

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ  বলেন, ব্যাংকগুলো এখন অল্প সময়ের মধ্যে বেশি আয়ের দিকে জোর দিচ্ছে। দুই থেকে তিন শতাংশ রেটে আমানত নিয়ে ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ করছে। ফলে আয় বেশি হচ্ছে।

‘এছাড়া এখন ঋণ শোধ না করলেও খেলাপি হচ্ছে না। প্রভিশনিং রাখতে হচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী যে সুবিধা চাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা-ই দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের কোনো লাভ হচ্ছে না। এ কারণে বেসরকারি খাতের ঋণ নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। ব্যাংকগুলো গতানুগতিকভাবে চলছে, নতুন কিছু করার চিন্তা তাদের নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও মনে করছে, যেভাবে চলছে

এভাবেই চলতে থাকুক।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। এখানে যদি খেলাপি ঋণ আদায়ে জোর দেওয়ার কথা বলা হতো তাহলে ব্যাংকগুলো একটু সতর্ক হতো। কিন্তু কিছুই বলা হয়নি, গতানুগতিক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে তারা।

করোনায় ঢালাওভাবে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এখন এ নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখন উচিত হবে, যেসব সুবিধা আর্থিক খাতকে দুর্বল করছে সেগুলো আস্তে আস্তে বন্ধ করে দেওয়া। ঋণ শোধ না করার এমন সুবিধা চলতে থাকলে এ খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে ‘ব্যাংকাররা এখন গ্রাম্য-মহাজনের মতো আচরণ করছেন’ এমন মন্তব্য করে সাবেক এ গভর্নর বলেন, ‘তাদের মনোভাব হয়েছে, আমি তো মহাজন, আপনি আমার কাছে টাকা রাখবেন। আমি যখন খুশি তখন টাকা নেব। যেখানে বেশি সুদ পাব সেখানে যাব। এটি তো ব্যাংকের কাজ হতে পারে না।’

তিনি বলেন, করোনায় ঢালাওভাবে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এখন এ নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এখন উচিত হবে, যেসব সুবিধা আর্থিক খাতকে দুর্বল করছে সেগুলো আস্তে আস্তে বন্ধ করে দেওয়া। ঋণ শোধ না করার এমন সুবিধা চলতে থাকলে এ খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।

এদিকে, ঋণ বিতরণ ও আদায় কম হলেও ব্যাংক খাতের আয় বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) শিল্প খাতে ৯০ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিতরণ কমেছে ৬৯৫ কোটি টাকা অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ। এছাড়া শিল্প ঋণে মার্চ পর্যন্ত বকেয়া স্থিতি দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা।

ব্যাংকের নিয়মানুযায়ী, ঋণের কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ ছয় থেকে নয় মাস (ঋণ ভেদে) উত্তীর্ণ হলেই মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। এ সময়সীমা ১২ মাস পার হলে ঋণখেলাপির প্রথম ধাপ হিসাবে গণ্য হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত শিল্প খাতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের পরিমাণ ৯৮ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এ খাতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ ছিল ৭০ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে মাত্র তিন মাসে শিল্প খাতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ বেড়েছে ২৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

ব্যাংক মুনাফার ১১৪ কোটি টাকা সিএসআর খাতে ব্যয় করার নির্দেশ: ব্যাংকের করপরবর্তী নেট মুনাফার ১ শতাংশ অর্থের সমপরিমাণ প্রায় ১১৪ কোটি টাকা করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) আওতায় বিশেষ সিএসআর খাতে ব্যয় করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ অর্থ ব্যয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে হতদরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানো নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। তদারকির সুবিধার্থে প্রতি ১৫ দিন অন্তে অর্থ ব্যয়ের প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিল করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছর ব্যাংকগুলোর নানা সিএসআর কার্যক্রম করে থাকে। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক সারা বছরের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও

করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত কারণে দারিদ্র্যহার বৃদ্ধির ফলে বিপদগ্রস্ত, কর্মহীন দরিদ্র, ছিন্নমূল, দুস্থ, অসহায় জনগোষ্ঠীর নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ এবং কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে।

হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোর সামাজিক দায়বদ্ধতা পরিপালনের উদ্দেশ্যে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ২০২১ সালের সিএসআর বাজেটে অতিরিক্ত ১ শতাংশ বরাদ্দ রাখার নির্দেশনা ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশের ৬৪ ব্যাংক সবগুলোরই করপরবর্তী নেট মুনাফা নেই। অনেক ব্যাংক লোকসানে রয়েছে। এ কারণে যেসব ব্যাংকের কেবল করপরবর্তী মুনাফা রয়েছে সেগুলোকেই অতিরিক্ত ১ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে বলা হয়েছে। এক হিসেবে বিদ্যমান সিএসআর কার্যক্রমের অতিরিক্ত ১ শতাংশ অর্থ হয় প্রায় ১১৪ কোটি টাকা।

ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক, এনজিও, এমএফআই, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং সেনা কল্যাণ সংস্থার মাধ্যমে বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। জুলাইয়ের মধ্যে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকগুলোর পাঠানো তথ্য থেকে বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম সন্তোষজনক নয় বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা। এ কারণেই গতকাল নতুন করে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক খন্দকার মোরশেদ মিল্লাত স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর সিএসআর কার্যক্রম তদারকি করতে ১৫ দিন অন্তে ব্যাংকগুলোর এ সংক্রান্ত কার্যক্রমের একটি প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠাতে হবে।

সর্বশেষ ৩০ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে হবে। আর প্রথম প্রতিবেদন আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ব্যাংকগুলোকে দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়।

এর আগে বলা হয়েছিল, বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ব্যাংকগুলো ২০২০ সালের নিরীক্ষিত (হিসাব বিবরণী চূড়ান্ত না হওয়ার ক্ষেত্রে অনিরীক্ষিত) হিসাব অনুযায়ী যে পরিমাণ নিট মুনাফা অর্জন করেছে তার ১ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ চলতি বছরের সিএসআর খাতের বাজেটে ইতোমধ্যে বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত হিসেবে বরাদ্দ করতে হবে।

বিশেষ সিএসআর বাজেট হতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীসহ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ এবং কর্মহীন মানুষের জীবিকা নির্বাহে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে সমাজের সিটি করপোরেশন এলাকাগুলোর বস্তিবাসী, ছিন্নমূল এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সাময়িকভাবে বেকার হয়ে পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য; বিভিন্ন জেলার হতদরিদ্র, সাময়িক কর্মহীন এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যারা করোনাভাইরাসজনিত রোগ বিস্তারের কারণে স্বাভাবিক জীবন-জীবিকা নির্বাহে অসমর্থ বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদের জন্য ব্যয় করতে হবে।

অপর দিকে বিশেষ সিএসআর খাতে বরাদ্দের ৫০ শতাংশ অর্থ সিটি করপোরেশন এলাকাগুলোতে এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্যয় করতে হবে। এ অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে তা যাতে কোনো বিশেষ এলাকায় কেন্দ্রীভূত না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের সহায়তায় অথবা শীর্ষপর্যায়ের এনজিও, এমএফআইগুলোর মাধ্যমে অথবা উভয় প্রকারে প্রস্তাবিত বিশেষ সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। উভয় ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলোকে এ বিষয়ে পৃথক হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে।

জেলা প্রশাসকের সহায়তায় আলোচ্য সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুকূলে পরিচালিত হিসাব এবং এনজিও, এমএফআইর মাধ্যমে পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এনজিও , এমএফআইর নামে রক্ষিত হিসাবে টাকা জমা বা স্থানান্তর করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রদত্ত টাকার পরিমাণ, উপকারভোগীর সংখ্যা, সংশ্লিষ্ট জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের নামসহ বিস্তারিত তথ্যাদি ব্যাংক কর্তৃক সংরক্ষণ করতে হবে।

বিশ্ব পুঁজিবাজারে সূচক বৃদ্ধির তালিকায় ৬ নম্বরে বাংলাদেশ: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবলে বৈশ্বিক অর্থনীতি প্রায় বিপর্যস্ত। ব্যবসা-বাণিজ্যের গতিও অনেকটাই থমকে গেছে। তবে ব্যতিক্রম কেবল পুঁজিবাজার। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজারে এই সময়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

করোনাভাইরাসের মধ্যেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮৩ শতাংশ। এই সময়ে বাংলাদেশের চেয়েও বেশি সূচক বেড়েছে থাইল্যান্ড, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, শ্রীলংকা ও জার্মানির পুঁজিবাজারে।

ব্লুমবার্গ ও ইনভেস্টিং ডট কমের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, করোনাভাইরাসের মধ্যেও বিশ্ব পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি উত্থান হয়েছে থাইল্যান্ডের পুঁজিবাজারে। দেশটির এসইটি সূচকের পয়েন্ট বেড়েছে ১২৪ শতাংশ। এর পরই রয়েছে ভারতের সেনসেক্স। এই সময়ে সেনসেক্স সূচক বেড়েছে ১০৯ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের ডাওজোনস সূচকে এই সময়ে ৯৩ শতাংশ পয়েন্ট যোগ হয়েছে। একই সময়ে শ্রীলংকার সিএসইঅল এবং জার্মানির ডিএএক্স সূচক বেড়েছে যথাক্রমে ৯১ ও ৮৭ শতাংশ।

বিশ্ব পুঁজিবাজারে সূচক বৃদ্ধির তালিকায় বাংলাদেশের প্র্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সুচক ডিএসইএক্সের অবস্থান ৬ষ্ঠ নম্বরে। এই সময়ে সূচকটি ৮৩ শতাংশ বেড়েছে। পাকিস্তানের কেএসই ১০০ সূচকে ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে এই সময়।

এছাড়া গত বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানের তুলনায় এই বছরে জাপানের নিক্কেই ২২৪ সূচকটি ৬৮, চীনের শেনঝেন কম্পোজিট সূচক ৫৫, যুক্তরাজ্যের এফটিএসই সূচক ৪৩, চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক ৩০, মালয়েশিয়ার এফটিএসই বুর্সা মালয়েশিয়া কেএলসিআই সূচক ২১ এবং হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক বেড়েছে ২১ শতাংশ।

বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক মূল্য-আয় অনুপাত (পিই রেশিও) পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভারতের সেনসেক্সের পিই রেশিও সবচেয়ে বেশি ৩০ দশমিক ৩৮।

পিই রেশিওতে এর পরেই রয়েছে থাইল্যান্ডের এসইটির ২৭ দশমিক শূন্য ২, যুক্তরাষ্ট্রের ডাওজোনসের ২৩ দশমিক ৯১, ভিয়েতনামের ভিএন ইনডেক্স ১৬ দশমিক ৮৮, বাংলাদেশের ডিএসইএক্সের ১৫ দশমিক ৮৬, হংকংয়ের হ্যাং সেংয়ের ১১ দশমিক ৩৬, পাকিস্তানের কেএসই ১০০-এর ১০ দশমিক ৭৫ এবং শ্রীলংকার সিএসইঅলের ১০ দশমিক শূন্য ৯।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক পিই রেশিও এখনো বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় অবস্থানে থাকলেও এরই মধ্যে বেশকিছু খাতের শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে গেছে। এর মধ্যে পাট খাতের পিই রেশিও ৮১৩ দশমিক ৩, কাগজ ও মুদ্রণ খাতের ৫৯ দশমিক ১, চামড়া খাতের ৮৬ দশমিক ১ এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের পিই রেশিও ৮২ দশমিক ২ অবস্থানে রয়েছে। এর বাইরে বাকি সব খাতের পিই রেশিও ৪০-এর নিচে অবস্থান করছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের ১৮ মার্চ ডিএসইএক্সের সর্বনিম্ন অবস্থান ছিল ৩ হাজার ৬০৪ পয়েন্টে। সেখান থেকে সূচকটি বেড়ে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ৬ হাজার ৫৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের ১৮ মার্চ ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধন ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে বাজার মূলধন বেড়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭০ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৯৬ পয়েন্টে, যা এর আগের সপ্তাহ শেষে ছিল ৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্টে।

নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৮৬ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহ শেষে ছিল ২ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৩৯ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৪০১ পয়েন্টে।

সোমবার থেকে পুঁজিবাজারের লেনদেন ১০টা থেকে আড়াইটা: আগামীকাল সোমবার পুঁজিবাজারের লেনদেন হবে ১০টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। ব্যাংকের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে পুঁজিবাজারের লেনদেনের নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে ডিএসই সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান লকডাউনের মধ্যে সীমিত পরিসরে পুঁজিবাজারের লেনদেন চালু করা হয়। এখন যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক ৯ ও ১০ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেনের সময়সীমা নির্ধারণ করেছে। এর প্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারের লেনদেন ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চলবে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আনোয়ারুল ইসলাম।

এতে বলা হয়, সোম ও মঙ্গলবার (০৯ ও ১০ আগস্ট) ব্যাংকের লেনদেন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে। আর ব্যাংকের লেনদেন সময় বাড়ানোর কারণে পুঁজিবাজারের লেনদেনও সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত হবে।